জেন্ডার বাজেট নূন্যতম ৫০ শতাংশ হওয়া উচিত – শাহিদা পারভীন

Published in unitednews24.com on Wednesday, 21 June 2017

Shahida Pervinনারীর ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরনে সরকারের সদভাব প্রশংসার দাবীদার। সরকারের সদিচ্ছার বহিপ্রকাশ ঘটে থাকে মূলত জাতীয় বাজেট প্রনয়ন ও তার বাস্তবায়নে। ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সরকার জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদন তৈরি করছে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে জেন্ডার বাজেট মোট বাজেটের ২৭.৯৯ শতাংশ, যা ২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮ সময়ের মধ্যে, সর্বোচ্চ ছিল ২৮.৬৮ শতাংশ ২০১২-১৩ অর্থ বছরে। এবার প্রস্তাবিত অর্থবছরে জেন্ডার বাজেট প্রবৃদ্ধি ২০.৮ শতাংশ, যা মূল বাজেটের প্রবৃদ্ধি ১৭.৫ শতাংশ থেকে সামান্য বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৪৩ টি মন্ত্রনালয় ও বিভাগের মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দের তুলনায় ১২ টিতে উল্লেখ্যযোগ্যভাবে বরাদ্দ কমেছে আর ৩১ টিতে বেড়েছে। অন্যদিকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় বাজেটে ৩৪ টিতে বরাদ্দ বেড়েছে এবং ৮ টিতে কমেছে এবং ১ টিতে অপরিবর্তিত আছে। বরাদ্দ কমে যাওয়াটা মোটেই প্রত্যাশিত নয় যেহেতু বরাদ্দই খুব কম।

বরাদ্দ বাড়া বা কমার চেয়ে প্রশ্ন হচ্ছে এই বাজেট বরাদ্দ কিভাবে হয় এবং এই বরাদ্দ কি যথেষ্ট কিনা? আমরা যতদূর বুঝতে পারছি বিবেচ্য মন্ত্রনালয়গুলোতে এবং মন্ত্রনালয়গুলোর অধীনে যেসব নারীরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত তাদের পেছনে যে খরচ তারই হিসাব হচ্ছে জেন্ডার বাজেট। এর মধ্যে একটি অংশ হচ্ছে মন্ত্রনালয় ও বিভাগগুলোতে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে নারীর যুক্ত থাকা। যেসব মন্ত্রনালয় ও বিভাগের তথ্য আছে লক্ষ্য করলে দেখা যায় নারীর অংশগ্রহন খুবই কম, এমনকি এক তৃতীয়াংশেরও কম। বিশেষ করে প্রশাসনের উচ্চ স্তরে এই হার ভীষনভাবে কম, নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা বেশি শিক্ষা ও সেবামূলক পেশায়। উদাহরন সরুপ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অফিসার পদে আছেন ১৬ জন নারী ও ৪১ জন পুরুষ এবং অন্যান্য স্টাফ আছেন ১৩ জন নারী ও ১০৩ জন পুরুষ। মন্ত্রনালয়গুলোর অধীনে যেহেতু নারীর অংশগ্রহণ কম তাদের জন্য মোট বরাদ্দও কম। ২০১৫-১৬ শ্রমশক্তি জরিপ অনুসারে সর্বোপরি নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ হার মাত্র ৩৫.৬ শতাংশ।

বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ নারী। সত্যিকার জেন্ডার বাজেট ১৪-২৮ শতাংশের মধ্য সীমাবদ্ধ না রেখে নূন্যতম ৫০ শতাংশের মত হওয়া উচিত। পিছিয়ে থাকা নারীদের এগিয়ে আনার জন্য বরঞ্চ তাদের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ থাকা উচিত। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে নারীদের বরাদ্দ ২০০৯-১০ থেকে এখন পর্যন্ত ১৪-২৮ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রচলিত বরাদ্দ দেখে মনে হয় নারীদের জন্য যে খরচ তা সরকার যথাযথভাবে তথ্যের মাধ্যমে আলাদা করে উপস্থাপন করতে পারে নি অথবা নারীদের দিকে কম মনোযোগ দেয়া হচ্ছে।