Dr Khondaker Golam Moazzem on banking

ব্যাংকিং খাতের কিছু ক্ষেত্রে দক্ষতার অবনমন হয়েছে। এর ফলে সুদ হার কমছে না। এছাড়া ব্যবসার ক্ষেত্রে পুঁজির সহজলভ্যতাও নেই।

Published in Jugantor on Tuesday, 6 October 2015.

দুর্নীতি করছে অগ্রণী ব্যাংক খেসারত দিচ্ছে উদ্যোক্তারা

গোলাম মওলা

নামসর্বস্ব শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে বেআইনিভাবে ঋণ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। ভুয়া জামানতেও ঋণ দেয়া হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠানকে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান জামানত ছাড়াও ঋণ পেয়েছে। শুধু তাই নয়, জমির মালিকানা নিশ্চিত না হয়েও ঋণ দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। শাখার আয় বেশি দেখাতে গ্রাহকস্বার্থ উপেক্ষা করে নিয়মবহির্ভূত উচ্চ সুদ আরোপ করা হয়েছে। ব্যাংকটির একাধিক শাখায় তথ্যানুসন্ধানে এসব গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতি ধরা পড়েছে।

একইভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক প্রতিবেদনেও ঋণ জালিয়াতিসহ নানা ধরনের দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে। আর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি বৃদ্ধির কারণে অগ্রণী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়ে গেছে। একইভাবে ব্যাংকটির অব্যবস্থাপনার কারণেও খেলাপি আদায় কমে গেছে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ অবলোপনও করা হয়েছে। আবার এ ব্যাংকটিতে অহেতুক সুদ মওকুফের ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় ব্যাংকটির কস্ট অব ফান্ড বেড়ে গেছে। এসব অজুহাতে শিল্প ঋণে উচ্চ হারের সুদারোপ করছে এ ব্যাংকটি। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে প্রকৃত শিল্প উদ্যোক্তাদের। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, যে ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেশি সেই ব্যাংকে সুদের হারও বেশি। খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর কস্ট অব ফান্ড বেড়ে যাচ্ছে। একইভাবে খেলাপি হয়ে যাওয়া ঋণ উদ্ধারে মামলা পরিচালনা ও কর্মকর্তাদের বেতন দিতে ব্যাংকের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে খেলাপি ঋণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে ভালো গ্রাহকের ওপর। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদের হার কমানোর জন্যই খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোকে কড়া নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী জুন শেষে অগ্রণী ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২১ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আর এই খেলাপি ঋণের মধ্যে ৮৪ শতাংশই কু-ঋণ বা আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণ। বর্তমানে এ ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। ৬ মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে এক হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। এত বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে গিয়ে ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ড বেড়ে গেছে। ফলে ঋণে কাক্সিক্ষত মাত্রায় সুদ হার কমছে না।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ব্যাংকিং খাতের কিছু ক্ষেত্রে দক্ষতার অবনমন হয়েছে। এর ফলে সুদ হার কমছে না। এছাড়া ব্যবসার ক্ষেত্রে পুঁজির সহজলভ্যতাও নেই। এক্ষেত্রে ঋণের উচ্চ সুদ এবং বিভিন্ন চার্জের কারণে ব্যবসার ব্যয় বাড়ছে। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার লাভ করতে পারছে না। এছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা গেছে, বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১১ দশমিক ১ শতাংশ। কিন্তু সুদারোপ করা হচ্ছে ১৫ শতাংশেরও বেশি। এর সঙ্গে নানা ধরনের সার্ভিস চার্জও নেয়া হচ্ছে। তবে শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, অগ্রণী ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণে ব্যবসায়ীদের সুদ দিতে হচ্ছে ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ হারে। সঙ্গে নানা ধরনের চার্জ যোগ করে ২০ থেকে ২২ শতাংশ হারে সুদারোপ করছে ব্যাংকটি। ফলে এ ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের উচ্চ হারের সুদ উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। শুধু বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হওয়া নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে ঋণের এই উচ্চ সুদের প্রভাব পড়ছে নানাভাবে। ঋণে মাত্রাতিরিক্ত সুদের কারণে পণ্যের উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এতে বাড়ছে দ্রব্যমূল্যও। এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা শাখার আয় বেশি দেখাতে গ্রাহকস্বার্থ উপেক্ষা করে নিয়মবহির্ভূত সুদ আরোপ করছেন। অন্যদিকে একাধিক জালিয়াত চক্রকে শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণসীমা নবায়ন, ঋণপত্র স্থাপন, প্রয়োজনীয় মার্জিন আদায়, ঋণ হিসাব পুনঃতফসিল ও ঋণের সুদ হিসাবায়নে শাখা থেকে প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত কোনো নিয়ম মানা হয়নি। ২০১০ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে কাকে কিসের ভিত্তিতে ঋণ দেয়া হচ্ছে এবং তা আদায় হবে কিনা এসব বিবেচনা না করেই উদারহস্তে ঋণ দেয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, অগ্রণী ব্যাংকের চট্টগ্রামের লালদীঘি ইস্ট কর্পোরেট শাখায় ৯৬৫ কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। এসব অনিয়মের তথ্য গোপন করতে দ্রুততার সঙ্গে চার গ্রাহকের ৪৪৭ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে ব্যাংকটি। এছাড়া আরাফাত স্টিল নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠানের নেয়া ১০১ কোটি টাকার ঋণে বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও বিতর্কিত মুন গ্রুপকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এ ব্যাংকটি। বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ দেয়ার জন্য ব্যাংকটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের দায়ী করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামানত না নিয়েই বড় অঙ্কের ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া অ্যাকোমোডেশন বিল প্রস্তুতের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে ব্যাংক জানার পরও পুনরায় বড় অঙ্কের ঋণ দেয়া হয়েছে। গ্রাহকের স্ক্যান করা জাল স্বাক্ষরের বিপরীতে নতুন ঋণ মঞ্জুরি এবং ঋণ পুনঃতফসিলের ঘটনাও ঘটেছে।

জানা গেছে, মজিবুর রহমান মিলনের মালিকানাধীন মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রি-সাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির কাছে এখন অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা রয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। এ প্রতিষ্ঠানটির জালিয়াতির বিষয়টি জানার পরও তাকে পুনরায় ৩৩ কোটি টাকার টিআর (ট্রাস্ট রিসিপ্ট) ঋণ সুবিধা দেয় অগ্রণী ব্যাংক। এই ঋণের কোনো আদায় না থাকার পরও এর বিপরীতে ৫০ লাখ টাকা আয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া তিনটি এলটিআরে অনিয়মের তথ্য গোপন করতে দ্রুততার সঙ্গে গ্রাহকের ৯২ কোটি টাকা অবলোপন করা হয়েছে।

এদিকে তালিকাভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও কয়েকটি কোম্পানিতে শেয়ারের নামে বড় অঙ্কের ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ করেছে এ ব্যাংকটি, যা উঠে এসেছে সরকারের বাণিজ্যিক নিরীক্ষা অধিদফতরের করা প্রতিবেদনে। নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী তালিকাভুক্ত নয় এমন ১৪টি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে অগ্রণী ব্যাংক। অন্যদিকে অগ্রণী ব্যাংকের নিজস্ব প্রতিবেদনেই ৫১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ঋণ জালিয়াতির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পর্যাপ্ত জামানত না নিয়ে ঋণ বিতরণ, ঋণ পরিশোধে গ্রাহকের সক্ষমতা বিচার না করা, ব্যাংকিং বিধি ভঙ্গ করার মাধ্যমে এসব জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক এলাকা কর্পোরেট শাখা থেকে ইলিয়াস ব্রাদার্স ২২৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, এপিটি ফ্যাশন ওয়্যারস ৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং আগ্রাবাদ শাখা থেকে এসকেএম জুট মিলস ২০ কোটি ১৮ লাখ টাকার ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন। এছাড়া ঢাকার প্রধান শাখা থেকে এসডিএস ইন্টারন্যাশনাল ১৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা, একই শাখা থেকে সাত্তার টেক্সটাইল মিলস ৪৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা, একই শাখা থেকে গুডউইল বেসিক কেমিক্যালস ১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা, আমিনকোর্ট শাখা থেকে ওয়ানটেল কমিউনিকেশনস ১৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা থেকে রুমা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ ৩৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা, পুরানা পল্টন শাখা থেকে সাউদ টেক্সটাইল মিলস ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকার ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামের লালদীঘি পূর্ব কর্পোরেট শাখা থেকে ৫১৩ কোটি টাকা নিয়েছে ৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে- নূরজাহান সুপার অয়েল ৬৫ কোটি ৪৮ লাখ, খালেক অ্যান্ড সন্স ২০৬ কোটি ২১ লাখ, মুহিব স্টিল অ্যান্ড সাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ ৯২ কোটি, চিটাগাং ইস্পাত ৭৪ কোটি, ইমাম মোটরস দেড় কোটি, রুবাইয়াত ভেজিটেবল অয়েল মিলস ৭৪ কোটি টাকা। আগ্রাবাদ কর্পোরেট শাখা থেকে নেয়া হয়েছে ৪১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাররীন ভেজিটেবল অয়েল ৩০৬ কোটি ৩৮ লাখ, এমএম ভেজিটেবল অয়েল মিলস ৬০ কোটি, শিরিন এন্টারপ্রাইজ ৫২ লাখ টাকা। আসাদগঞ্জ কর্পোরেট শাখা থেকে জাসমীর ভেজিটেবল অয়েল ৮৬ কোটি এবং মিজান ট্রেডার্স ৬০ কোটি টাকা নিয়েছে। নিউমার্কেট কর্পোরেট শাখা থেকে তাসমিন ফ্লাওয়ার মিলস নিয়েছে ২৮ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক এলাকা কর্পোরেট শাখা থেকে নেয়া হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিদ্দিক ট্রেডার্স ১০৯ কোটি, এমএস ওয়্যারিং অ্যাপারেলস ৩ কোটি এমএস গার্মেন্ট ৫৬ লাখ, মাসুদা ফেব্রিক্স ১ কোটি ৩০ লাখ এবং অ্যাপ্ট পিলেট ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নিয়েছে। নিরীক্ষা বিভাগের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বৈদেশিক বাণিজ্য শাখায় অনিয়মের মাধ্যমে দেয়া ঋণের অঙ্ক দেড়শ কোটি টাকা। শাখার গ্রাহক গিভেন্সি স্পিনিং মিলসকে আইন না মেনে পুনঃতফসিলের সুযোগ দেয়ায় অনাদায়ী হয়েছে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া আরেক গ্রাহক রুমা লেদারের কাছেও পাওনা রয়েছে ৪১ কোটি টাকা। একই শাখার ভেরিতাস কেমিক্যালসকে নিয়ম না মেনে ঋণ দেয়ায় পাওনা হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। আরেক গ্রাহক সুরুজ মিয়া জুট স্পিনার্সের কাছে পাওনা ঠেকেছে সাড়ে ২৭ কোটিতে। ব্যাংকের বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখার গ্রাহক বি ব্রাদার্সের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের দায় প্রায় ৪২ কোটি টাকা। একই শাখার আরেক গ্রাহক স্টকহোম নিটওয়্যারের কাছে পাওনা সাড়ে সাত কোটির বেশি। এছাড়া রমনা কর্পোরেট শাখার গ্রাহক কেয়া ইয়ার্ন মিলসকে তিনবার পুনঃতফসিলের সুযোগ দিয়েও অনাদায়ী ত্রিশ কোটি টাকার বেশি। একই শাখার আরেক গ্রাহক ফ্লাওয়ার মিলের কাছে পাওনা চার কোটি টাকা।

অন্যদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে পাশ কাটিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম সিএসআরের নামে ২০১৩ সালে তিন কোটি ৬১ লাখ টাকা নয়ছয় করেছে ব্যাংকটি। ২০১২ সালে ব্যাংকটি সাড়ে আঠারশ কোটি টাকা লোকসানের পরও কর্মকর্তাদের প্রায় ৬০ কোটি টাকা আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে। এছাড়া ব্যাংক তহবিল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত আয়কর বাবদ ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা খরচ করেছে ব্যাংকটি।

এদিকে ঋণ পরিশোধ না করায় বেঙ্গল ফাইন সিরামিকস, এম হোসাইন গার্মেন্টস ওয়াসিং অ্যান্ড ডায়িং, রহমান কেমিক্যালস ও বাংলাদেশ ইলেকট্রিসিটি মিটার কোম্পানি লিমিটেডের প্রায় ১০০ কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করেছে অগ্রণী ব্যাংক। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ চার কোম্পানির কাছে অগ্রণী ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে ১০৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদ যুগান্তরকে বলেন, ব্যাংকের হিসাব থেকে এসব ঋণ অবলোপন করা হলেও পাওনা আদায়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিকল্প পদ্ধতিতে অর্থ আদায়ের জন্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।