সংকট অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে – খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

Dr Khondaker Golam Moazzem voices concerns about how the current political disturbance may undermine economic progress, published in Bhorer Kagoj on Monday, 9 February 2015.

সংকট অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

চলমান সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ছে। প্রতিদিন অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছে। মানুষের কাজের পরিধি বা সুযোগ কমে আসছে। এর ফলে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দ্রুত উত্তরণ না ঘটলে এই সংকট অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গতকাল এক সাক্ষাতকারে এমন আশঙ্কা করেছেন বেসকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, চলমান সংকটের কারণে কর্মসংস্থানের ওপর চাপ পড়বে। কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হতে পারে। কমতে পারে কৃষি শ্রমিকের কাজের পরিধি।

ইতিমধ্যে স্বল্প আয়ের মানুষের আয় কমতে শুরু করেছে। এর ফলে তার ভোগের ওপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। একদিকে পণ্য উৎপাদনে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে যেহেতু মানুষের আয় কমে যাচ্ছে, সেই কারণে উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কমছে। ফলে কৃষক দুই দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, চলমান সংকটের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেবা খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উৎপাদনকৃত পণ্য থেকে আয় কমে যাচ্ছে। আবার যারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক রেখেছেন তারা ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ছেন।

চলমান সংকট দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনোভাবে উৎপাদন চালিয়ে গেলেও সহিংসতার কারণে নতুন করে ক্রয় আদেশ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এর ফলে আগামী অর্থবছরগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আগে থেকেই বিনিয়োগ পরিস্থিতি খুব বেশি ভালো ছিল না। নতুন এই পরিস্থিতির কারণে সেই গতি আরো শ্লথ হয়ে পড়বে। বিশেষ করে পরিবহন খাতের দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হচ্ছে। কারণ এখানে স্থায়ী মেশিনারি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই খাতে নতুন করে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে সরকারের রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগেও আমরা বলেছিলাম- রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে না। নতুন এই সংকটের ফলে সেই ঘাটতি আরো বাড়তে পারে। সরকারের উচিত চলতি অর্থবছরের অর্থনীতির সূচকগুলো পুনঃনির্ধারণ করা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব আয় ও ব্যয়সহ সব সূচকের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা উচিত। চলমান সংকটের সমাধান কী হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাধান অবশ্যই রাজনৈতিক উপায়ে করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার তার দায় এড়াতে পারে না। ব্যবসায়ীদের উচিত সংকট সমাধানে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।