CPD Study on LDCs Report cited

Published in মানবকন্ঠ on Saturday, 28  November 2015

 

স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি অতিক্রমে বাংলাদেশের করণীয়

 

সিপিডির মত অনুযায়ী, স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসা বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন তিনটি সূচকে প্রভূত উন্নয়ন। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি সন্তোষজনক। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশকে ৬৬ শতাংশে উন্নীত হতে হবে যেটির বর্তমান অবস্থান ৬৩ দশমিক ৮। অন্যদিকে মাথাপিছু আয় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ করে তুলতে হবে। আর এটি সম্ভব উৎপাদনশীল খাতে জমির ব্যবহার এবং শ্রমের উৎপাদনশীলতার মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে আনার মাধ্যমে।

 

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই অর্জনকে পেছনে ফেলে আরো এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে বর্তমান সরকারের কর্মপরিকল্পনায়। নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে না পারলে তা আকাশকুসুম কল্পনাই রয়ে যাবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। তবে তিনটি সূচকে অর্থাৎ অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবিলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিদ্যমান অসঙ্গতি দূর করে সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নতি সাধন করতে পারলে ২০২৪ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসতে পারবে বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ২৬ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে সিরডাপ মিলনায়তনে ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) এলডিসি রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ ধরনের ইতিবাচক মতই প্রকাশ করে সিপিডি। ২৭ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে সংবাদটি মানবকণ্ঠসহ কয়েকটি সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে।
সিপিডির মত অনুযায়ী, স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসা বাংলাদেশের জন্য অসম্ভব কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন তিনটি সূচকে প্রভূত উন্নয়ন। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি সন্তোষজনক। এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশকে ৬৬ শতাংশে উন্নীত হতে হবে যেটির বর্তমান অবস্থান ৬৩ দশমিক ৮। অন্যদিকে মাথাপিছু আয় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ করে তুলতে হবে। আর এটি সম্ভব উৎপাদনশীল খাতে জমির ব্যবহার এবং শ্রমের উৎপাদনশীলতার মধ্যে বিদ্যমান দূরত্ব কমিয়ে আনার মাধ্যমে। এলডিসি রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে ভূমির উৎপাদনশীলতায় বাংলাদেশের অবস্থান এক নম্বরে হলেও শ্রমের উৎপাদনশীলতায় এই অবস্থান ২০ নম্বর। দু’টি খাতের এই বিশাল পার্থক্য কমিয়ে আনতে এখন থেকেই পরিকল্পিত পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে এর ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া অসম্ভব নয় বলে মত ব্যক্ত করেছেন সিপিডি প্রধান। নিম্ন মধ্যম আয় থেকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে যেতে কৃষির রূপান্তর ছাড়া অসম্ভব এবং এই রূপান্তর ঘটাতে হলে সরকারের প্রতিটি শহরের সঙ্গে গ্রামের, কৃষির সঙ্গে শিল্পের এবং দেশের সঙ্গে বিদেশের-অর্থাৎ রফতানি বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয় সিপিডির পক্ষ থেকে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হওয়ার সুবিধা হলো, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হবে যা বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের নতুন অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রকে উš§ুক্ত করে দেবে। অন্যদিকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বিভিন্ন সংস্থা ও দাতাগোষ্ঠীর কাছ থেকে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যাচ্ছিল তা আর অব্যাহত থাকবে না।
উন্নত দেশের মর্যাদা, সম্মানজনক জীবনমান ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে হলে স্বল্পোন্নত দেশের গণ্ডি থেকে বাংলাদেশের বেরিয়ে আসাটা জরুরি। বৈদেশিক সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াও যে বাংলাদেশ বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ঝুঁকি নিতে পারে এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ পদ্মা সেতু প্রকল্প। সুতরাং স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে কোনো দেশের সাহায্য-সহযোগিতা গ্রহণের চেয়ে আত্মনির্ভরশীল একটি দেশের মর্যাদা অর্জনের প্রচেষ্টায় এখন থেকেই পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি।