Budgetary allocations for children in FY17 requires more clarification: Shahida Pervin

Published in প্রথম আলো on Thursday, 14 July 2016

 

সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ

children budget FY17
গত ২৮ জুন ২০১৬, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

* প্রথমে শিশু​েদর সত্যিকার প্রয়োজনগুলো ঠিক করতে হবে। তারপর বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে তাদের উন্নয়ন করতে হবে

* বি​বাহিত নারীদের একটা বড় অংশ শিশুবধূ। এদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন

* কোনোভাবেই শিশুদের গৃহকর্মে নিয়োজিত করা যাবে না।  গৃহকর্মকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন

* কোনো এলাকার শিশুদের পরিস্থিতি কী, তাদের কী আছে, কী নেই —এ বিষয়গুলো গবেষণা করে সেভাবে সহযোগিতা করতে হবে

*   গ্রাম ও শহরের শিশুদের বৈষম্য কমিয়ে আনা প্রয়োজন

 

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

শিশুদের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে। কিন্তু এ সুযোগ গ্রহণের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। সব শিশু সমান সুযোগ পাচ্ছে না। যেমন: স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুযোগপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ধনী ও দরিদ্র শিশুদের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী শিশুদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে।

ইউনিসেফের পক্ষ থেকে ‘দ্য স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস চিলড্রেন: অা ফেয়ার চান্স ফর এভরি চিলড্রেন’ প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী শিশুদের পরিস্থিতির চিত্র সেখানে পাওয়া যাবে। এখন আলোচনার মূল বিষয়বস্তু উত্থাপন করছেন এডওয়ার্ড বেগবেদার।

 

এডওয়ার্ড বেগবেদার

ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি ২০১৬ (অা ফেয়ার চান্স ফর এভরি চাইল্ড) শীর্ষক একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী বের হয়েছে। এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। আবার বাংলাদেশে সব শিশুর সমান অধিকার ও সমান সুযোগের ক্ষেত্রে অনেক বৈষম্য রয়েছে।

১৯৯০ সালে বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুহার ছিল ১৪৪। ২০১৫ সালে সেটা কমে হয়েছে ৪৮। অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ নবজাতকের মৃত্যুহার রোধে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু কয়েকটি প্রয়োজনীয় সেবা—স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি সব শিশু কি সমানভাবে পাচ্ছে? এটি বড় প্রশ্ন।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে ঝুঁকিপূর্ণ ও দরিদ্র শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

যেসব রোগ প্রতিরোধ করা যায়, এমন রোগে প্রতিবছর বিশ্বের লাখ লাখ শিশু মারা যাচ্ছে। লাখ লাখ দরিদ্র মেয়ের বাল্যবিবাহ হচ্ছে। তাদের সন্তানেরাও দারিদ্রে্যর মধ্যে পড়ছে। এভাবে একটা দারিদ্র্যের চক্র তৈরি হচ্ছে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে শিশুদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ইউনিসেফের বিশ্ব শিশু পরিস্থিতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গড়ে একটি শিশু যদি কমপক্ষে এক বছর বেশি শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায়, তাহলে তার ভবিষ্যৎ জীবনের আয় অন্তত ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে। এখন শিশুদের মানসম্মত সেবা ও শিক্ষার দিকে নজর দিতে হবে। তাদের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে।

 

মেহের আফরোজ চুমকি

আজ একনেক সভা হয়েছে। এ সভায় শিশুদের ২০টি দিবাযত্নকেন্দ্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির আরও ৩৬টি দিবাযত্নকেন্দ্র তৈরি করা হবে। আমাদের মধ্য আয়ের দেশ হতে হলে আজ থেকেই শিশুদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

ইউনিসেফ আমাদের ভালো বন্ধু। তাদের সহায়তায় শিশুদের জন্য অনেক কাজ করি। সরকার সবাইকে সঙ্গে নি​েয় শিশুদের কল্যাণে কাজ করে যাবে।

আজ অনেক শিশু মাদকে আসক্ত। তাদের জীবনের মূলধারায় ফিরিয়ে আনা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এসব শিশুর জন্য আমরা কাজ করছি। শিশুশ্রম নিরসনে আমাদের আইন ও নীতিমালা আছে। কিন্তু তারপরও শিশুশ্রম হচ্ছে। এসব শিশুকে কীভাবে পুনর্বাসন করা যায়, সে বিষয়ে আমরা ভাবছি।

সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিরা কিছু শিশুর দায়িত্ব নিতে পারেন। যেসব শিশু গৃহে কাজ করে, তাদের কিছুটা সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি। সবাই কিছু দায়িত্ব নিলে অসহায় শিশুদের জীবন বদলে যেতে পারে।

শিশুদের উন্নয়নে তাদের সুযোগগুলো নিশ্চিত করতে হলে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য আমরা সাতটি মন্ত্রণালয় সভা করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছি। শিশু উন্নয়নের কথা মুখে বললে হবে না, সত্যিকারভাবে কাজ করতে হবে।

আমরা দরিদ্র শিশুদের পরিবারকে সহযোগিতার কথা চিন্তা করছি। পরিবারের অভিভাবকদের যদি দারিদ্র্য না থাকে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় তাহলে তাঁরা তাঁদের সন্তানদের কাজে দেবেন না। এই শিশুরা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাবে।

আমরা শিশুদের জন্য কাজ করছি। ভবিষ্যতে সবার সহযোগিতায় আরও বেশি কাজ করব, যেন শিশুদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়।

 

শফিকুল ইসলাম

বাংলাদেশে এখন আগের তুলনায় শিশুদের অনেক বেশি কল্যাণ হচ্ছে। বেশিসংখ্যক শিশুকে কল্যাণের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু সে কল্যাণ অনেক ক্ষেত্রেই মানসম্মত হয়নি। অর্থাৎ সহযোগিতা পেয়েও অনেক শিশু পরিবর্তনের ধারায় আসতে পারেনি।

শূন্য থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশুদের কয়েকটি পর্বে ভাগ করা যায়। শূন্য থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পুষ্টির বিষয়টিতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। গ্রাম ও শহরের বস্তি এলাকার শিশুদের পুষ্টির বিষয়টি সব সময় গুরুত্বহীন থেকে যাচ্ছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে হলে শূন্য থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষার বিষয়টিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

আমরা যদি মধ্য আয়ের দেশ হতে চাই, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চাই, তাহলে অবশ্যই শূন্য থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের জীবনমানের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

দেশে বাল্যবিবাহের সমস্যাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রচলিত পদ্ধতিতে এ সমস্যার সমাধান হবে না। বাল্যবিবাহ নিরসনের জন্য একটি নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

 

শামসুল আলম

সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ—এটা কোনো স্লোগান না, এটা শিশুদের অধিকার। আমরা যারা দীর্ঘদিন এনজিওতে কাজ করছি, তারাই-বা এটাকে কতটুকু ধারণ করছি, সেটাও একটা প্রশ্ন।

আমাদের জন্য একটা সুখবর হলো, সরকার গত বছর থেকে শিশুদের জন্য বাজেট বরাদ্দ দিচ্ছে। সব শিশুর সমান সুযোগের ক্ষেত্রে বর্তমান বাজেটের অবস্থান কী, সেটা কিছুটা ব্যাখ্যা করতে চাই। মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ শিশুদের জন্য বরাদ্দ আছে।

এটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিশুদের কল্যাণে কাজ করবে। এর ৮০ শতাংশ শিক্ষা, ৯ শতাংশ স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বরাদ্দ। সম্ভবত নিরাপত্তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ শতাংশ। সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এটা ব্যয় করবে। কোন শিশুদের নিরাপত্তা প্রয়োজন এবং সে জন্য বরাদ্দ যথেষ্ট কি না, সেটি একটি বিষয়।

শিক্ষার জন্য যে ৮০ শতাংশ বরাদ্দ আছে, এটা কোন কমিউনিটির জন্য কতটুকু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটা বিশ্লেষণ করা দরকার, তাহলে বোঝা যাবে সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ কতটুকু সম্ভব।

২০১৫-১৬ সালে যে বরাদ্দ ছিল তার ৪২ শতাংশ খরচ করা সম্ভব হয়েছে। তাহলে যেখানে বরাদ্দ ও খরচের মধ্যে সমন্বয় নেই, সেখানে সমতা কীভাবে নিশ্চিত হবে?

সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হলে কোন ধরনের শিশুর জন্য কী পরিমাণ বরাদ্দ প্রয়োজন, জরুরি ভিত্তিতে তার একটি বিশ্লেষণ হওয়া দরকার।

দেশের কোন অঞ্চলে শিশুদের অবস্থা কী, সেটি বিশ্লেষণ না করে বরাদ্দ করলে কখনো সমতা আসবে না।

 

শাহিদা পারভীন

২০১৫-১৬ থেকে শিশু বাজেট শুরু হয়েছে। ২০১১ সালের সিপিডির (সেন্টার ফর পলিসি ডায়​​ালগ) এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, শিশুদের জন্য বাজেট দরকার। গতবার শিশু বাজেট দেখে বেশ ভালো লেগেছিল।

এবার আমরা দেখলাম পাঁচটি মন্ত্রণালয়ে অর্থ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোন মন্ত্রণালয়ে কী ইস্যুর জন্য কতটুকু বরাদ্দ করা হলো, তার কোনো উল্লেখ নেই। বাজেট থেকে তেমন কিছু বোঝা যায় না যে শিশুদের জন্য কোন খাতে কত অর্থ ব্যয় হবে।

ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের স্কুল, ঢাকা শহর ও গ্রামের হাসপাতাল এগুলোর কোনোটির মধ্যে সমতা নেই। সমতা বলতে কী বুঝি, এটা নিয়েও হয়তো আমাদের ভাবার অবকাশ আছে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে যাদের অর্থ বেশি প্রয়োজন, তারা তা না পেয়ে অন্যরা পাচ্ছে। সমতা আনতে হলে নির্দিষ্ট ইস্যুর ভিত্তিতে বরাদ্দ দিতে হবে। তারপর কতটুকু বরাদ্দ দিলে সমতা নিশ্চিত হবে, সেটা ঠিক করতে হবে।

 

ঝুমা আক্তার

আমরা খুব গরিব। তিন বেলা ঠিকমতো খেতে পাই না। আমাদের বাসার পাশে স্কুল আছে। স্কুলের বাতিতে সন্ধ্যায় কিছু সময় পড়ি। তারপর অনেক রাত পর্যন্ত মানুষের বাসায় পানি দিই।

একদিন ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত মৈত্রী কিশোর–কিশোরী ক্লাবের এক আ​ন্টি দেখলেন, আমি স্কুলের বাতির আলোয় পড়ি, রাতে মানুষের বাসায় পানি দিই। তিনি আমার মাকে বোঝালেন এত ছোট মানুষ দিয়ে কাজ করানো ঠিক না। মা বললেন, আমরা গরিব। আমাদের চলবে কীভাবে? তখন আন্টি তিনটি শর্তে আমাদের সাহায্য করতে চাইলেন।

এক. আমাকে স্কুলে যেতে হবে এবং বাইরে কাজ করতে পারব না। দুই. অান্টিদের জীবন দক্ষতা অর্জনের ক্লাব আছে, সেখানে যেতে হবে। জীবন দক্ষতা শিখতে হবে। তিন. আমাকে বাল্যবিবাহ দেওয়া যাবে না। আমার মা সব শর্ত মেনে নেন।

আগে আমি ঠিকমতো পড়তে পারতাম না। এখন এ সাহায্য থেকে পড়ার খরচ চালাতে পারি। ক্লাব থেকে শিখেছি কীভাবে লেখাপড়া করতে হবে, জীবনে বড় হতে হবে, মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে ইত্যাদি। এখন আমি আমার জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারি।

 

এমরানুল হক চৌধুরী

অসমতার একটা প্রধান কারণ হলো দারিদ্র্য। শিশু দারিদ্র্য ও বয়স্ক দারিদ্র্যের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—শিশু ও বয়স্ক। সবাইকে নিয়ে সামগ্রিকভাবে কাজ না করলে শিশুদের সত্যিকার প্রয়োজনগুলো উপেক্ষিত থেকে যায়।

শিশুদের সত্যিকার প্রয়োজনগুলো ঠিক করতে হবে। তারপর তাদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। শিশুদের জন্য যা করব সেটা কোনো খরচ না, বিনিয়োগ।

শিশুদের জন্য আইন ও নীতিমালা আছে, কিন্তু এসবের প্রয়োগ নেই। গতবার শিশুদের জন্য বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকার মাত্র ৪২ শতাংশ খরচ করা সম্ভব হয়েছে। তাহলে শিশুদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ দিয়েই বা লাভ কী হবে? বিবাহিত নারীদের ৪৫ শতাংশ শিশুবধূ। এখন এদের স্বাস্থ্য-পুষ্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

শিশুদের জন্য গৃহকর্মের কাজটি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু শিশুদের ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মধ্যে গৃহকর্মের কাজটি অন্তর্ভুক্ত হয়নি। গৃহকর্মী হয়তোবা থাকবে, কিন্তু শিশু গৃহকর্মী থাকবে না। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে একটা আইন করা দরকার।

কোনো এলাকার শিশুদের পরিস্থিতি কী, তাদের কী আছে, কী নেই—এ বিষয়গুলো গবেষণা করে সেভাবে সহযোগিতা করতে হবে।

 

দিপংকর রায়

ইউনিসেফের সহযোগিতায় ২০১৩ সালে আমরা শিশুদের নিয়ে সর্বশেষ জরিপ করি। এই জরিপে শিশুদের বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে।

২০১১ সালের জনসংখ্যা জরিপের পর ইউনিসেফ, বিবিএস ও বিআইডিএস মিলে শিশুদের জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। এটি চাইল্ড ইকুইটি অ্যাটলাস নামে পরিচিত। প্রতিবেদনটি বিবিএস, ইউনিসেফ ও বিআইডিএসের ওয়েবসাইটে আছে।

এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার শিশুদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করছে। বিশ্বের আর কোথাও এ ধরনের কাজ হয়নি। বাংলাদেশেই প্রথম হয়েছে। ইউনিসেফ এখন অন্য দেশেও এটা প্রয়োগ করছে।

এ প্রতিবেদনে কারা স্কুলের বাইরে, কারা শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত ইত্যাদি বিষয় এসেছে। এর ওপর ভিত্তি করে বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও স্কুলবিহীন শিশুদের নিয়ে নীতিমালা তৈরি করেছি।

শিশুশ্রমের ওপর আমরা জরিপ করেছি। আমরা একটি জাতীয় তথ্যভান্ডার করতে যাচ্ছি। এটা হলে প্রতিটি মন্ত্রণালয় তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য ব্যবহার করতে পারবে।

শিশু দারিদ্র্য নিয়ে আমরা নতুনভাবে কাজ করব। এই প্রথমবার শিশুদের জেলাভিত্তিক পরিস্থিতি নিয়ে কাজ করব।

 

মো. আবদুল মালেক

২০১৫ সালে জাতীয় পুষ্টি নীতিমালা পাস হয়েছে। এখন এটি বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলছে। এই পুষ্টি নীতিমালায় বিশেষভাবে শিশু, বয়োবৃদ্ধসহ সব মানুষের পুষ্টিপ্রাপ্তির বিষয় উল্লেখ আছে।

সরকারের প্রায় ১৫টি মন্ত্রণালয় পুষ্টি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ভবিষ্যতে আমরা পুষ্টির ক্ষেত্রে বড় ধরনের অর্জন করতে পারব বলে বিশ্বাস।

গ্রাম ও শহরের শিশুদের নিয়ে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। সরকার শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, খর্বাকৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, এসব বিষয় নিয়ে ভাবছে।

শহরে সরকারের উদ্যোগ গ্রামের মতো জোরদার না। বিভিন্ন এনজিও, জাতিসংঘ ও জনপ্রতিনিধিরা এখানে কাজ করেন। সরকার স্বাস্থ্য, পুষ্টিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আচরণগত পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে।

 

তোফায়েল আহমেদ

অগ্রগতির প্রধান সিঁড়ি হচ্ছে শিক্ষা। এই শিক্ষার কোনো শেষ নেই। শিক্ষার মাধ্যমেই সমতা আনা সম্ভব। শিক্ষার মধ্য দিয়েই মানুষ তার জীবনের সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করবে। কিন্তু এই শিক্ষার মধ্যে ন্যূনতম সমতা নেই।

দেশের প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষা ও শহরের শিক্ষা, বাংলা মাধ্যমের শিক্ষা ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা, মাদ্রাসা, ইবতেদায়ি কত রকমের শিক্ষা। এর একটির সঙ্গে আরেকটির কোনো মিল নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

একটা অঞ্চলে বিভিন্ন রকমের মানুষ তৈরি হচ্ছে। এরা হয়তো কোনো দিন এক জায়গায় বসতে পারবে না, এক হতে পারবে না। এরা হয়তো কেউ কারও কথা বুঝবে না। শিক্ষা মানুষের মধ্যে সমতা আনে। অথচ প্রচলিত শিক্ষাই আমাদের দেশে বড় বিভাজন তৈরি করছে। শিক্ষা সমাজকে আদর্শ ও অর্থনৈতিকভাবে বিভক্ত করছে।

 

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের সমমানের শিক্ষার দিকে যেতেই হবে। যেখানে একই শিক্ষা পাঠক্রমে সবাই পড়ালেখা করবে। হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু এই লক্ষ্যে আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। তা না হলে শিক্ষাই আমাদের অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাবে।

 

এম এম আকাশ

শিশুদের সমতাকে আলোচনায় আনাটাই একটা অগ্রগতি। আজ বিশ্বব্যাপী এটা হচ্ছে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে দক্ষ ধাত্রীসেবা, খর্বাকৃতি শিশু, শিক্ষা—এসব ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে যে পার্থক্য বিদ্যমান, সেটা ভালোভাবে দেখানো হয়েছে।

আমাদের একটা জাতীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, অতিদরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করা হবে। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সর্বজনীন নিরাপত্তার কথা বলা আছে। কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হবে মা ও শিশুর নিরাপত্তার দিকে।

দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি। এর ৫৭ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের ওপরে। তাহলে ৪৩ শতাংশ শিশু। সংখ্যায় এদের পরিমাণ প্রায় সাত কোটি। এদের মধ্যে প্রায় পৌনে দুই কোটি দরিদ্র শিশু। কিন্তু অতিদরিদ্র শিশুর সংখ্যা ৮৪ লাখ।

পৌনে দুই কোটি দরিদ্র শিশুর জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বিনোদন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। আর ৮৪ লাখ অতিদরিদ্রের জন্য প্রথম প্রয়োজন খাদ্য ও পুষ্টি।

প্রকৃত হিসাব করলে দেখা যায়, দরিদ্র শিশুদের জন্য জাতীয় বাজেটের বরাদ্দ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অতিদরিদ্রদের মাসে এক হাজার টাকা করে দিলে বছরে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এর ব্যবস্থাপনা সহজ। অন্য পন্থা ব্যবহার করলে প্রচুর অপব্যয় হবে।

আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যয়ের ৬০ শতাংশ অপব্যয় হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে সমতা আনতে পারলে প্রজন্মগতভাবে অসমতা দূর হবে।

 

মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম

একটি প্রতিবেদন থেকে দেখেছি, বিশ্বে এখনো ১০০ কোটি শিশু সাতটি সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এ সুযোগগুলো হলো খাদ্য, বস্ত্র, পানি, শিক্ষা, চিকিৎসা, পয়োনিষ্কাশন ও তথ্য। শিশুদের এ সুযোগগুলো না দিতে পারলে আমরা যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাইছি, সেটা পারব না।

কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে শিশুদের মধ্যে বৈষম্য কমাতেই হবে। বড় শহরে তো বৈষম্য রয়েছেই। এমনকি একটা উপজেলার ভেতরেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গার শিশুদের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে।

কোন অঞ্চলে কত শিশু স্কুলে যায় এবং যায় না, দেশের কোথায় কী পরিমাণ বাল্যবিবাহ হয়—এ তথ্যগুলো আমাদের আছে। শুধু গবেষকেরা এগুলো জানলে হবে না, নীতিনির্ধারকদেরও জানতে হবে। এসব বৈষম্য দূরীকরণের ব্যাপারে তাঁদের উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশ্বের একটি দরিদ্র দেশ লেসোথো। এ দেশে একটি দরিদ্র শিশুকে প্রতি তিন মাসে বাংলাদেশি টাকায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। ২০০২ সালে আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ১০০ টাকা দেওয়া হতো, আজ ২০১৬ সালেও সেই ১০০ টাকাই দেওয়া হচ্ছে। এর প্রকৃত মূল্য এখন ৪৫ টাকা।

শিশুদের মধ্যে বৈষম্য কমাতে হলে দ্রুত তাদের জন্য ফলপ্রসূ উদ্যোগ নিতে হবে।

 

মীর শওকাত আলী বাদশা

গত বছর অর্থমন্ত্রীর কাছে বিশেষ দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। উনি শিশুদের জন্য থোক বরাদ্দ দিয়েছেন। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবই আমাদের অর্জন।

আজকের গোলটেবিলের কনিষ্ঠ আলোচক ঝুমাকে এখন আর বখাটেরা বিরক্ত করে না। প্রথম আলোর গোলটেবিলে বিদগ্ধজনের মধ্যে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে, এটাই আমাদের অর্জন।

কয়েক দিন আগে শ্রমজীবী শিশুদের নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ককাসে মতবিনিময় হয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আগামী মাসে ইউনিসেফের সঙ্গে ককাসের আলোচনা হবে। এসব আলোচনার নির্দেশনা নিয়ে আমরা কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করব।

পৃথিবীতে একটি দেশও নেই, যেখানে বিনা মূল্যে প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে শিশুদের বই দেওয়া হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার প্রাথমিক স্কুলকে সরকারীকরণ করেছেন। আমাদের সরকার একটি শিক্ষানীতি তৈরি করেছে। এর ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি।

আজকের আলোচনার শিরোনাম, সব শিশুর জন্য সমান সুযোগ। এটি আমাদের সংবিধানের কথা। সবাই মিলে এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

সুলতানা কামাল

কিছু ক্ষেত্র ছাড়া এমডিজিতে (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। তবে এমডিজিতে সমতা বা বৈষম্য দূর করার ব্যাপারে তেমন উল্লেখ ছিল না। কিন্তু এসডিজিতে (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) সমতা ও বৈষম্য দূরীকরণের বিষয়টি জোরালোভাবে এসেছে।

শিশুদের বিষয়ও এসডিজিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আমরা একটা সতর্কবাণী শুনতে পাচ্ছি, সেটা হলো যদি পৃথিবী থেকে বৈষম্য দূর করতে না পারি, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে সাত কোটি শিশু পাঁচ বছরের আগে মৃত্যুবরণ করবে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। শিশুদের শিক্ষার জন্য বরাদ্দ আছে। কিন্তু এই বরাদ্দ কতটুকু তাদের কাজে লাগবে, সেটা বলা যাচ্ছে না। আমরা দায়িত্বশীল সূত্রে জানতে পেরেছি, এর মধ্যে অন্য প্রশিক্ষণের অর্থও আছে।

প্রায় চার লাখ শিশু রাস্তায় বাস করে, যাদের মাথার ওপর ছাদ নেই। চার লাখের বেশি শিশু গৃহকর্মে নিয়োজিত। এসব শিশুর অধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

সরকারের পক্ষ থেকে নারীর জন্য ভালো আইন ও নীতিমালা আছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের নারী নীতিমালা আছে। কিন্তু এই নীতিমালার প্রয়োগ কোথায়? আমাদের শিক্ষা নীতিমালা আছে। এর প্রয়োগ কোথায়?

শিক্ষা হচ্ছে জীবন সমৃদ্ধ করার প্রথম সিঁড়ি। কিন্তু এই শিক্ষায় কেবল অসাম্য না, প্রচণ্ড বৈষম্য রয়েছে। আমরা একমুখী শিক্ষা করতে পারছি না। এর জন্য ফলপ্রসূ কোনো উদ্যোগও নেই।

আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও ছিল একটি বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণ। এ লক্ষ্যে সবাইকে গুরুত্বসহকারে কাজ করতে হবে।

 

চৌধুরী মুফাদ আহমেদ

সারা বিশ্ব থেকে বাংলাদেশের অবস্থা খুব একটা ভিন্ন না। ২০১৫ সালের মধ্যে সব শিশুকে স্কুলে নিয়ে আসার একটা লক্ষ্য ছিল এমডিজিতে। আমরা এ ক্ষেত্রে প্রায় সফল হয়েছি।

আমাদের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী আছে। এটা সবার জন্য সমানভাবে কাজ করে না। অতিদরিদ্রসহ ছোট একটা অংশ সব সময় এ প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে যায়। এদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নিয়ম কাজ করে না। এদের জন্য প্রয়োজন বিশেষ উদ্যোগ। তবে উদ্যোগ শুধু সরকারের পক্ষ থেকে নিলে হবে না, এ কাজের সঙ্গে সবাইকে যুক্ত হতে হবে।

আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো যারা স্কুলের বাইরে আছে, তাদের স্কুলে আনা। যারা স্কুলে আছে তারা যেন ঝরে না পড়ে সে জন্য কাজ করা। আমাদের মানসম্মত শিক্ষার দিকটাও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

 

আব্দুল কাইয়ুম

আজকের শিশুরা যেন ভবিষ্যতে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে, সে জন্য সবাইকে একস​​েঙ্গ কাজ করতে হবে। শিশুদের মধ্যে অসমতা ও বৈষম্য থাকলে সেটা দেশের জন্য কল্যাণকর হবে না।

অন্তত মৌলিক চাহিদাগুলো সব শিশুর জন্য সমানভাবে পূরণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

 

যাঁরা অংশ নিলেন

মেহের আফরোজ চুমকি                 :   সাংসদ, প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়

মীর শওকাত আলী বাদশা              :    মাননীয় সাংসদ, চেয়ারম্যান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং শিশু অধিকার-বিষয়ক সংসদীয় ককাসের সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

সুলতানা কামাল                           :    মানবাধিকার নেত্রী

চৌধুরী মুফাদ আহমেদ                  :    অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-১), শিক্ষা মন্ত্রণালয়

মো. আবদুল মালেক                      :    যুগ্ম সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়

এডওয়ার্ড বেগবেদার                     :    রিপ্রেজেনটেটিভ, ইউনিসেফ

তোফায়েল আহমেদ                      :   পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

এম এম আকাশ                            :   অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

দিপংকর রায়                               :    যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো

শফিকুল ইসলাম                           :   পরিচালক, ব্র্যাক, শিক্ষা কর্মসূচি

এমরানুল হক চৌধুরী                     :   চেয়ারপারসন, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম

মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম              :    সোশ্যাল পলিসি বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফ

শামসুল আলম                              :   ডেপুটি ডিরেক্টর, পলিসি রাইটস অ্যান্ড গভর্নেন্স, সেভ       দ্য চিলড্রেন

শাহিদা পারভীন                           :   রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, সিপিডি

ঝুমা আক্তার                                :   মৈত্রী কিশোর–কিশোরী ক্লাবের সদস্য, খ​ুলনা

 

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম                             :   সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো