Dr Khondaker Golam Moazzem on export earning

Published in Samakal on Wednesday, 8 July 2015.

তৈরি পোশাকের রফতানি বাড়ল মাত্র ৪ শতাংশ

সমকাল প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাকের রফতানি বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। আগের বছর দেশের প্রধান এ পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। পোশাকের আয় কম আসার প্রভাব পড়েছে মোট রফতানি আয়েও। এ কারণে মোট রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিও কমে গেছে। সব পণ্যের গড় রফতানি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে (২০১৩-১৪) প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। গত অর্থবছরে শুধু আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে তা নয়, এ সময় লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কম হয়েছে ৬ শতাংশ। এ নিয়ে টানা তিন বছর রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলো না। মূলত তৈরি পোশাকের রফতানি প্রবৃদ্ধি কম হওয়ায় সার্বিক রফতানি প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, তৈরি পোশাকের রফতানি প্রবৃদ্ধি এ হারে কমে যাওয়ার প্রধান কারণ দীর্ঘ সময় ধরে চলা সহিংস রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। এ ছাড়া প্রধান প্রধান বাজারে ভোগ চাহিদা কমে যাওয়ার কারণেও রফতানি কমেছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এ প্রসঙ্গে গতকাল সমকালকে বলেন, ডলারের বিপরীতে প্রায় সব মুদ্রার বিনিময় হার কমছে। এতে ডলারে বাংলাদেশি পোশাক কিনে দর হারানো স্থানীয় মুদ্রায় বিক্রিতে মুনাফা কম পাচ্ছেন আমদানিকারকরা। এ কারণে তারা বাংলাদেশের পোশাকের আমদানিতে কিছুটা নিরুৎসাহ দেখাচ্ছেন। তার মতে, রানা প্লাজা ধস এবং তাজরীন ফ্যাশন কারখানার অগি্নকাণ্ডের সূত্র ধরে শেয়ারড ভবনের (একই ভবনে পোশাক কারখানাসহ অন্য কাজে ভাগাভাগি করে ব্যবহার) কারখানায় রফতানি আদেশ কমিয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। এর প্রভাবও পড়েছে রফতানি আয়ে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমাপ্ত অর্থবছরে রফতানি আয় এসেছে তিন হাজার ১১৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন হাজার ৩২০ কোটি ডলার, অর্থাৎ আয় কম হয়েছে ২০০ কোটি ১৫ লাখ ডলার। একক মাস হিসেবে অর্থবছরের শেষ মাস জুলাইয়ে আয় হয়েছে ৩০৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ৩২৬ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কম হয়েছে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। তবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশের মতো। এপিবি গতকাল পণ্য অনুযায়ী রফতানি আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পোশাক রফতানি থেকে আয় এসেছে দুই হাজার ৫৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে ওভেন থেকে এসেছে এক হাজার ৩০৬ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আর এক হাজার ২৪২ কোটি ৬৮ লাখ এসেছে নিট পণ্য রফতানি থেকে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে পোশাকের রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ। আয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১৫১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৪৯ কোটি ১৮ লাখ ডলার। ওই সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে প্রবৃদ্ধি এবং লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় কমেছে এ রকম বড় পণ্যের মধ্যে রয়েছে চিংড়ি, সব ধরনের হিমায়িত মাছ, চামড়া, পাট, টেরিটাওয়েল ইত্যাদি। অন্যদিকে রফতানি বাড়ার তালিকায় রয়েছে চামড়া পণ্য, পাটের সুতা, পাটের ব্যাগ, বৈদ্যুতিক সামগ্রী ইত্যাদি।