রানা প্লাজা ধস ও পোশাকশিল্পের ভবিষ্যৎ – খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

Dr Khondaker Golam Moazzem on Rana Plaza collapse, published in Prothom Alo Thursday, 6 November 2014.

রানা প্লাজা ধস ও পোশাকশিল্পের ভবিষ্যৎ

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

বর্তমান সংস্কার কার্যক্রম বাংলাদেশের পোশাক খাতকে কাঠামোগত ও সামাজিক কমপ্লায়েন্সে ‘এককালীন’ সক্ষমতা দেবে। কিন্তু তা অব্যাহত রাখতে সব ধরনের ধারাবাহিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও ব্যবস্থা গ্রহণ-সম্পর্কিত সক্ষমতা বাড়ানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ

রানা প্লাজা ধস বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পের উৎপাদন-শৃঙ্খলের জন্য এক অচিন্তনীয় ঘটনা, শ্রমিকের নিরাপত্তাহীন কর্মপরিবেশের অনন্য উদাহরণ। এ দুর্ঘটনা উৎপাদন-শৃঙ্খলের সুশাসনগত দুর্বলতার বড় নজির। সাম্প্রতিককালে বিশ্বব্যাপী উৎপাদন-শৃঙ্খলের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে শ্রমিকের অধিকারসংক্রান্ত সামাজিক কমপ্লায়েন্সের উন্নয়ন না হওয়া ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছিল। সে সময় রানা প্লাজার দুর্ঘটনা কার্যকর সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পোশাকশিল্পের আন্তর্জাতিক উৎপাদন-শৃঙ্খল পুনর্গঠনের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছে।

রানা প্লাজা ধসের পর উৎপাদন-শৃঙ্খলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নিজেদের অবস্থানগত দুর্বলতা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত হয়েছে দেশি উদ্যোক্তা, সরকার, আমদানিকারক, উন্নয়ন অংশীদার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। গৃহীত ব্যবস্থাদির উল্লেখযোগ্য অংশ বাংলাদেশকেন্দ্রিক। এসব উদ্যোগের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশে কারখানা পর্যায়ে শ্রমিকের কর্মনিরাপত্তা উন্নত করা, উন্নত শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং শ্রমিকের জীবনমান উন্নত করা। বর্তমানে বাংলাদেশের পোশাক খাতে যে নানামুখী সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে, তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ‘কমপ্যাক্ট’ চুক্তি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি পুনরুদ্ধারের শর্ত হিসেবে প্রদত্ত কর্মকৌশল, ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কারখানা সংস্কার ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বিভিন্ন উদ্যোগের অংশবিশেষ। একই সময়ে পোশাক খাত বিভিন্নমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। পোশাক খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। এসব প্রশ্নের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা থাকা প্রয়োজন।

ক. চলমান সংস্কার কি পোশাক খাতের সক্ষমতা বাড়াবে? এক কথায় বললে, এটা বাংলাদেশে পোশাক খাতের শ্রমিক-সম্পর্কিত কাঠামোগত ও সামাজিক কমপ্লায়েন্সের সক্ষমতা বাড়াবে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার আগে সামাজিক কমপ্লায়েন্সে কম সংবেদনশীল পণ্য যেমন স্বল্পমূল্যের নিট ও ওভেন পণ্যে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা নিজেদের দক্ষতা ও সক্ষমতা ধরে রেখেছিল। এমনকি তা বেড়ে কমপ্লায়েন্স-সংবেদনশীল মধ্যম মানের পণ্যে ধীরে ধীরে বিস্তৃত হচ্ছিল। রানা প্লাজা ধস এ অগ্রগমন প্রক্রিয়াকে শ্লথ করে দেয়। বর্তমানে গৃহীত সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে সে সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের সুযোগ রয়েছে।

সরকারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু লক্ষণীয় অগ্রগতি। শ্রম আইন ২০০৬ সংস্কার করে সংশোধিত শ্রম আইন ২০১৩ জারি করা হয়েছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের অধীনে কারখানা পর্যায়ে অগ্নি, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা চিহ্নিত করার কাজ চলছে। কারখানার প্রাথমিক তথ্যভান্ডার তৈরির কাজ চলছে এবং কারখানা পর্যায়ে নতুন নতুন শ্রমিক সংগঠন নিবন্ধিত হচ্ছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারকে আংশিক অর্থ সহায়তা এবং আহত শ্রমিকদের একাংশকে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নতুন কারখানা পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং আরও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। মাত্র দেড় বছরে এ কাজ সম্পন্ন হওয়া আপাতভাবে বড় অগ্রগতি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ তিন দশক ধরে অব্যাহত অবহেলার কারণে পুঞ্জীভূত জরুরি অনিষ্পন্ন কাজের দীর্ঘ তালিকা বিবেচনা করলে এই অগ্রগতি যথেষ্ট নয় বলেই প্রতীয়মান হয়।

তবু সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন রকমের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। অনেকে বলছেন, মাত্র ২ শতাংশ কারখানা ত্রুটিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। মনে রাখা দরকার, এই ২ শতাংশ শুধু কাঠামোগত ত্রুটিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা। প্রকৃতপক্ষে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের নিরাপত্তার জন্য অধিকতর দায়ী অগ্নি ও বৈদ্যুতিক ত্রুটিযুক্ত কারখানা ৯০ শতাংশের ওপরে। নতুন শ্রমিক সংগঠন নিবন্ধনের পাশাপাশি কিছু কারখানায় শ্রমিক নেতাদের সংগঠন গড়ার চেষ্টার জন্য নিগৃহীত হতে হচ্ছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানা পরিদর্শনের কাজ এগোলেও অনেক ছোট বা সাব-কনস্ট্রাকটিং কারখানার পরিদর্শনের কাজ এগোচ্ছে ধীরগতিতে। চিহ্নিত সমস্যা সমাধানে কারখানা পর্যায়ে উদ্যোগে ধীরগতি রয়েছে। তবে এসব সংস্কার সুচারুভাবে সম্পন্ন করা গেলে পোশাক খাতের ‘কমপ্লায়েন্স’ আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে, যা বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে। সুতরাং স্বল্প মেয়াদে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকলেও মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে এ সংস্কারকাজ বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়িয়ে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করবে।

ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি, যা শুধু ব্যবস্থাপনাগত সমন্বয়ের মাধ্যমে উন্নয়ন সম্ভব। তবে অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কারখানাগুলোকে অগ্নি প্রতিরোধক ‘ফায়ার ডোর’ স্থাপন এবং দুর্ঘটনাকালে পানি ছিটানোর জন্য ‘স্প্রিংকলার’ ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে, যা ব্যয়সাপেক্ষ। আশার কথা, এ বাড়তি ব্যয় মেটাতে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাপানি সংস্থা (জাইকা), আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ করপোরেশন (আইএফসি) ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে কারখানা পর্যায়ে অগ্নিনির্বাপণে প্রয়োজনীয় পণ্যের কাঁচামাল বিনা শুল্কে আমদানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বাড়তি ব্যয় মেটাতে সরকার উদ্যোক্তাদের কর হার উৎপাদিত রপ্তানি মূল্যের ০.৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৩ শতাংশ করেছে। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণসুবিধা বাড়ানো হয়েছে। অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে অর্থ সুবিধা ২ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে বাড়ানো হয়েছে। এসব ব্যবস্থা উৎপাদন ব্যয়ের বাড়তি চাপ অনেকাংশে কমাতে সহায়তা করছে।

তবে দুশ্চিন্তার বিষয়, ছোট ও সাব-কনস্ট্রাকটিংয়ে নিয়োজিত কারখানাগুলো বাড়তি ব্যয় মিটিয়ে সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে কি না। বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সাব-কনস্ট্রাকটিংয়ে নিয়োজিত কারখানাগুলোর নিজস্ব ভবন না থাকলে তারা সেগুলো থেকে পণ্য কেনা কমিয়ে দেবে। কারণ, এসব কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আবার সরাসরি রপ্তানিকারক নয় বলে এসব কারখানা ওপরে বর্ণিত অনেকগুলো সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ফলে এসব কারখানার জন্য বাড়তি ব্যয়ের চাপ মিটিয়ে ন্যূনতম মুনাফা ধরে রাখা কষ্টকর হতে পারে। তবে বিজিএমইএর বরাত দিয়ে রানা প্লাজা ধসের পর ২০০-এর ওপর কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার যে তথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তা ভ্রমাত্মক। এসব কারখানার অধিকাংশই রানা প্লাজা ধসের বহু আগে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতায় বন্ধ হয়েছে। তবে সাব-কনস্ট্রাকটিং কারখানায় সংস্কারকাজ সম্পন্ন করার জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করা প্রয়োজন হতে পারে।

বাংলাদেশের পোশাক খাতকে ভবিষ্যতে ‘উচ্চ কমপ্লায়েন্স-উচ্চ মজুরি’ এবং ‘উচ্চ ব্যয়-উচ্চ আয়’ কাঠামোতে পরিচালিত হতে হবে। বাড়তি ব্যয় মেটাতে শ্রম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, কারখানার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত পণ্যকাঠামো পরিবর্তন করে উচ্চ ও মধ্যম মানের পণ্য উৎপাদন বাড়ানো বিশেষ প্রয়োজন। উৎপাদন চেইনের সব পর্যায়ে বাড়তি ব্যয় সমন্বয়ের প্রস্তুতি থাকলে ক্ষুদ্র-মাঝারি কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকার কথা নয়।

গ. কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম কি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করতে পারে? সংশোধিত শ্রম আইন ২০১৩-এ কারখানা পর্যায়ে ট্রেড ইউনিয়ন করা সহজতর করা হয়েছে। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২২৮টি নতুন ট্রেড ইউনিয়ন হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৭০টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এখন পর্যন্ত ট্রেড ইউনিয়ন গঠন ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধে ইউনিয়নগুলো ধীরে হলেও কাজ করছে। কার্যকর ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। একইভাবে উদ্যোক্তা, ব্যবস্থাপক এবং সুপারভাইজার পর্যায়ে ট্রেড ইউনিয়ন-সম্পর্কিত উপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। উন্নততর শিল্প-সম্পর্ক স্থাপন ছাড়া পোশাক খাতে স্থিতিশীলতা ধরে রাখা কষ্টকর। আশা করা যায়, কারখানার ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম জাতীয় রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থাকবে। নতুবা কারখানায় উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে এবং শ্রমিক হয়রানি বন্ধে আলাদা শিল্প-সম্পর্ক আইন প্রয়োজন হতে পারে।

ঘ. বাংলাদেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা ভবিষ্যতে বহাল থাকবে কি? বিগত দশকগুলোতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, ভারত, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়াসহ বিভিন্ন বাজারে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা আছে। রানা প্লাজা ধসের পর যুক্তরাষ্ট্র শুল্কমুক্ত সুবিধা স্থগিত করেছে। তবে তৈরি পোশাক এ সুবিধার আওতা-বহির্ভূত ছিল।

আগামী দিনে প্রধান বাজারগুলোতে বাজারসুবিধা অব্যাহত রাখা বা সুবিধা পুনর্বহালের বিষয় অনেকাংশে নির্ভর করছে বর্তমান সংস্কার কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ১৬টি বিষয়সংবলিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমপ্যাক্টের বাস্তবায়ন কিছুটা ধীরে এগোচ্ছে। শুরুর দিকের তুলনায় বাস্তবায়নের এখন গতি বেশ মন্থর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডও দেখা যাচ্ছে। আবার বাস্তবায়ন কার্যক্রমের মধ্যম পর্যায়ে এসেই বাজারসুবিধা পুনর্বহাল না হওয়াকে রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর শ্রম অধিকারসংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। কিন্তু চলমান সংস্কার কাজগুলো থেকে পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই।

ঙ. দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিবেশ উন্নয়ন হবে কি? আশা করা যায়, বর্তমান সংস্কার কার্যক্রম বাংলাদেশের পোশাক খাতকে কাঠামোগত ও সামাজিক কমপ্লায়েন্সে ‘এককালীন’ সক্ষমতা দেবে। কিন্তু তা অব্যাহত রাখতে সব ধরনের ধারাবাহিক উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও ব্যবস্থা গ্রহণ-সম্পর্কিত সক্ষমতা বাড়ানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রয়োজন। এসব সংগঠনের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা আরও প্রশাসনিক কাঠামোতে পরিচালিত হওয়া দরকার, যেখানে প্রেসিডেন্ট বা পরিচালকদের ভূমিকা হবে নীতিনির্দেশনামূলক। কারখানা পর্যায়ে করপোরেট কাঠামো গড়ে তোলা দরকার। শ্রম সংগঠন, শ্রম অধিকার ও উদ্যোক্তা-শ্রমিক পক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতার জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সবশেষে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রধানদের নিরপেক্ষÿঅবস্থান বজায় রাখা এ খাতের সব অংশীজনের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম: অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)