Dr Khondaker Golam Moazzem on RMG production and export earnings

Published in Bonik Barta on Saturday, 11 October 2014.

যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি
ভারত ভিয়েতনাম থেকে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ

বদরুল আলম

তৈরি পোশাকপণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। চীন ছাড়াও এ বাজারে বাংলাদেশের মূল প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে আছে ভিয়েতনাম ও ভারত। রফতানি আয় ও প্রবৃদ্ধির বিচারে এ দুটি দেশের  সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত তথ্যে এ চিত্র উঠে এসেছে।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের তথ্যে দেখা যায়, দেশটিতে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় কমেছে। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) বাংলাদেশের রফতানি আয় কমে যাওয়ার হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। একই সময়ে দেশটিতে ভিয়েতনাম ও ভারতের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৬১ ও ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারখানার নিরাপত্তা ইস্যুতে ক্রেতারা সাময়িকভাবে হলেও পোশাক তৈরিতে বাংলাদেশের বিকল্প বাজারগুলোয় ক্রয়াদেশ দিয়েছেন, যার প্রভাবেই রফতানি আয়ের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে।

তাদের দাবি, বিকল্প বাজারের মধ্যে আছে চীন, ভিয়েতনাম, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস, কম্বোডিয়া, এল সালভাদর ও পাকিস্তান।

প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় হয় ৩৪৩ কোটি ৩৭ লাখ ৮১ হাজার ডলার। গত বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৩৪৮ কোটি ৬৫ লাখ ৯ হাজার ডলার। সে  হিসাবে আয় কমেছে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি থেকে ভিয়েতনামের আয় হয়েছে ৬০৮ কোটি ২৯ লাখ ৪৪ হাজার ডলার, যা ২০১৩ সালের একই সময়ে ছিল ৫৩০ কোটি ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ডলার। এ হিসাবে আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি করে ভারতের আয় হয়েছে ২৩৯ কোটি ৫৬ লাখ ২৮ হাজার ডলার, যা ২০১৩ সালের একই সময়ে ছিল ২২৭ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ডলার। এক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ও এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, গত বছর অস্থিতিশীলতার কারণে কিছু ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে গেছে। কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমনিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রেক্ষাপটও মার্কিন বাজারে রফতানি কমে যাওয়ার কারণ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা যায়, মেক্সিকো, হন্ডুরাস ও এল সালভাদরও চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি করে আয়ে প্রবৃদ্ধি ঘটিয়েছে যথাক্রমে দশমিক ২৯, ১ দশমিক ৬২ ও ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ আট মাসে দেশগুলোর আয় হয়েছে যথাক্রমে ২৪৭ কোটি ৭০ লাখ ৬২ হাজার, ১৬৭ কোটি ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ও ১২৫ কোটি ৮৪ লাখ ৬১ হাজার ডলার। ২০১৩ সালের একই সময়ে দেশগুলোর আয় ছিল ২৪৬ কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার, ১৬৪ কোটি ৫০ লাখ ২০ হাজার ও ১২১ কোটি ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার ডলার।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের পোশাক খাতের কারখানাগুলোর দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, কিন্তু সেগুলোর সংশোধন এখনো শেষ হয়নি। পাশাপাশি ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ায় আমদানিকারকদের খরচ বেড়ে গেছে। রফতানি আয় কমে যাওয়ার এটাও অন্যতম কারণ।