Dr Khondaker Golam Moazzem on savings

Published in Janakantha on Friday, 28 August 2015.

জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্রে বিক্রি প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

লাগাম টানতে সুদের হার কমানো হলেও গেল অর্থবছরজুড়ে রেকর্ড পরিমাণে বিক্রি হয়েছে সঞ্চয়পত্র। বিক্রির এই ধারাবাহিকতা চলতি অর্থবছরেও দেখা গেছে। অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ এসেছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় ১১৮ কোটি টাকা বেশি।

জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। মূলত ব্যাংকের তুলনায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে সুদের হার কিছুটা বেশি হওয়ায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে এ খাতে নিট বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৯৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১১৮ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্রে নিট বিক্রি আসে ১ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে ১ হাজার ২৬০ কোটি ১২ লাখ টাকা। আর সুদ হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে ৭৭৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে পরিবার সঞ্চয়পত্র। পরিবার সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৮৮৯ কোটি ০৫ লাখ টাকা। তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে নিট বিক্রি হয়েছে ৪৫১ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১৫৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। মূলত এই তিন ধরনের সঞ্চয়পত্রের বিক্রিই বেশি হয়ে থাকে। জুলাই মাসে ডাকঘরের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র বেশি বিক্রি হয়েছে। এই সময়ে ডাকঘরের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬১ কোটি ৭০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ৬৪০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। সঞ্চয়পত্র ব্যুরোর মাধ্যমে নিট বিনিয়োগ এসেছে ২৭৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জনকণ্ঠকে বলেন, সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমলেও ব্যাংকের আমানতে সুদহারের তুলনায় অনেক বেশি। এজন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি অব্যাহতভাবে বাড়ছে।

জানা গেছে, আশার তুলনায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেশি হওয়ায় গত অর্থবছর জুড়েই ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার চাহিদা ছিল কম। গত অর্থবছর ব্যাংক থেকে সরকার নিট ৩১ হাজার ২২১ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও তা নিতে হয়নি। অর্থবছর শেষে ঋণ না বেড়ে ৬ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা কমে সরকারের পুঞ্জীভূত ব্যাংক ঋণ নেমে আসে এক লাখ ৭ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংক থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত নিট ৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা নেয়ায় সরকারের মোট ঋণ ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে আগের নেয়া ৫০২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার। আর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নেয়া হয়েছে ৯ হাজার ২৯ কোটি টাকা।