Professor Rehman Sobhan on regional connectivity

Published in The Daily Janakantho on Wednesday, 24 June 2015.

অক্টোবর থেকে চার দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী যান চলাচল শুরু
পণ্যবাহী যান চলবে ৬ মাসের মধ্যে

এম শাহজাহান

আগামী অক্টোবর থেকে বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহী মোটরযান চলাচল শুরু হবে। সড়ক পথে যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল সংক্রান্ত চুক্তির আওতায় এটি কার্যকর করা হচ্ছে। তবে পণ্যবাহী যান চলাচল ও বিনিময়ে মাসুল ধার্যের মতো বিষয়গুলো নিষ্পক্তি করতে ছয় মাসের সময় সীমা বেঁধে দেয়া রয়েছে। এক দেশের বন্দর ও সড়ক ব্যবহারের জন্য আরেক দেশকে নির্দিষ্ট হারে মাসুল দিতে হবে। এই মাসুল নির্ধারণে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে কাস্টমস সাব গ্রুপ নামে একটি কমিটি। তবে বাংলাদেশের বন্দর ও সড়ক ব্যবহার করতে হলে কি পরিমাণ মাসুল ধার্য হবে তা নির্ধারণে ন্যাশনাল ল্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ফ্যাসিলিটেশন (এনএলটিএফসি) নামে একটি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে সরকার।

এই কমিটিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সড়ক বিভাগ এবং এফবিসিসিআই প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিষয়টি ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

এদিকে চারদেশীয় সড়ক যোগাযোগ চুক্তির এই রূপরেখায় বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটান যাওয়ার জন্য তিনটি রুটের কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি, ঢাকা-বুড়িমারী- চেংরাবান্দা, ঢাকা-বাংলাবান্ধা-জলপাইগুড়ি-কাঁকরভিটা।

রূপরেখা অনুযায়ী যাত্রীবাহী বাস, ভাড়া করা গাড়ি এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে পারবে। যাত্রীবাহী বাসের ক্ষেত্রে বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী বাসের মতোই দীর্ঘমেয়াদী অনুমতিপত্র নিতে হবে। ব্যক্তিগত যানবাহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন সার্ভিস থেকে ফরম পূরণ করে তাৎক্ষণিক অনুমোদন নেয়া যাবে। পর্যটন, শিক্ষা সফর, চিকিৎসাসেবা, তীর্থযাত্রার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করা যাবে। যাত্রীবাহী বাস বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যাত্রী পরিবহন করবে। রূপরেখায় আরও বলা হয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে পণ্যবাহী কনটেনার বহন করা ট্রাক ও ট্রেইলার চলাচল করতে পারবে। এ ক্ষেত্রেও যানবাহনকে প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র নিতে হবে। চালকের ভ্রমণ সংক্রান্ত দলিলাদি থাকতে হবে।

জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব চন্দন কুমার দে জনকণ্ঠকে বলেন, আগামী অক্টোবর থেকে চারদেশের মধ্যে সড়ক পথে যাত্রীবাহী যান চলাচল শুরু হবে। আর পণ্যবাহী যানচলাচল শুরু হবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে বাস ও রেলে যাত্রীবাহী সেবা বিদ্যমান রয়েছে। তবে এই চুক্তির আওতায় এখন চারদেশের মধ্যে যাত্রীবাহী যান চলাচল করতে পারে। পণ্যবাহী যান চলাচল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটার সঙ্গে মাসুল ধার্যের বিষয়টি জড়িত। এ ক্ষেত্রে একটি কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই কমিটি আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে মাসুল ধার্র্যের বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন এ সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন দিয়েছে। বর্তমান কমিটি ওই প্রতিবেদনটি অনুসরণ করছে। আশা করছি, যথাসময়ে চুক্তিটি কার্যকর করতে পারবে সরকার।

এদিকে, সমন্বিত আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত অগ্রসর হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবচেয়ে ভাল ফল পেতে সমন্বিত আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক, রেল, নদী ও সাগর পথে সমন্বিতভাবে আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই। চীনের কুনমিং থেকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ হয়ে কলকাতা পর্যন্ত দ্রুতগতির রেল লাইন নির্মাণে চীনের আগ্রহ রয়েছে। এই রেল লাইন নির্মাণ হলে এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হবে।