CPD study on the SDGs cited in newspaper editorials

সরকারের উচিত হবে এসডিজি অর্জনে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ক্রমাগত মতবিনিময় চালিয়ে যাওয়া। সিপিডির সোমবারের সম্মেলনের পর্যবেক্ষণগুলো সরকারের অনেক উপকারে আসতে পারে।

CPD study on the SDGs cited in newspaper editorials published on Wednesday, 7 October 2015.

View more editorials on the topic

Published in Kaler Kantho

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য
সব বাধা দূর করতে হবে

জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। এখন নতুন চ্যালেঞ্জ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো (এসডিজি) অর্জন। এই পথের সম্ভাব্য বাধাবিঘ্ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এসডিজি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন একার পক্ষে সহজ হবে না, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অর্থ, প্রযুক্তি ও ঋণ নিয়ে পাশে দাঁড়াতে হবে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) স্থায়ী উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের সামনে পাঁচটি বড় বাধার কথা বলছে। এর মধ্যে সম্পদের প্রাপ্যতা অন্যতম।

সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো সামষ্টিকভাবে নেওয়া হলেও দেশগুলোকে এককভাবে বাস্তবায়নের কাজটি করতে হয়েছে। সবাইকে আর্থিক ও কারিগরি সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত দেশগুলোকে অনেকাংশে নিজস্ব সম্পদের ওপরই নির্ভর করতে হয়। যেমন বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল এমডিজির ১৫ বছরে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সাহায্য দেওয়া হবে। পাওয়া যায় ১.৭৮ বিলিয়ন। আমরা আশা করছি, এসডিজির ক্ষেত্রে কোনো প্রতিশ্রুতি এলে তা অবশ্যই রক্ষা করা হবে।

সম্পদস্বল্পতা ছাড়া আরো চারটি বড় বাধার কথা বলছে সিপিডি। এগুলো হচ্ছে বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মসূচিকে জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করা, অংশগ্রহণ ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান ও তদারকি, কাঠামোগত কৌশল ও বাস্তবায়ন। এমডিজিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এসডিজিতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বৃদ্ধির ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। এসডিজিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাও একটা বড় লক্ষ্য। তাই বলা যায়, এসডিজি আমাদের সামনে বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে। এটি অর্জিত হলে বাংলাদেশ শুধু টেকসই অর্থনীতিই নয়, আইনের শাসনও পাবে।

আমরা মনে করি, রাজনৈতিক অঙ্গীকার, প্রশাসনিক দক্ষতা ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা কঠিন হবে না। প্রশ্ন হচ্ছে, নিশ্চিত করা যাবে কি না! দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে অবকাঠামো যেমন আশানুরূপ সবল হয়নি, বিনিয়োগেও খুব বেশি সাড়া মিলছে না। কারণ বাংলাদেশের গণতন্ত্র গত চার দশকেরও বেশি সময়ে সুদৃঢ় ভিত্তি পায়নি। ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘুরেফিরেই আসছে। আমরা আশা করব, এসডিজি সামনে রেখে টেকসই উন্নয়নের পথের সব বাধা অপসারিত হবে। শুরু হবে নতুন উদ্যমে পথচলা।


Published in Jugantor

সিপিডির পর্যবেক্ষণ

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে সম্প্রতি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) বা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। এ সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সামনে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। চ্যালেঞ্জগুলো হল- দেশীয় কর্মসূচিতে লক্ষ্যগুলো সম্পৃক্ত করা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো, সম্পদ ও অর্থায়ন, স্বচ্ছতার জন্য প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান জানানো এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতের কাঠামো তৈরি এবং জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা।

সিপিডির মূল্যায়নে উঠে আসা পাঁচ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করার তেমন কোনো সুযোগ নেই। এমডিজি বা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ তুলনামূলকভাবে ভালো করলেও বেশ কিছু সূচকের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। নানা কারণেই এ ঘাটতি থেকে গেছে। এবার যখন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষিত হয়েছে, তখন সর্বাধিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টায় কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি ও সঠিক কর্মপদ্ধতি না থাকলে এমডিজির মতো এসডিজির শতভাগ সাফল্য নিশ্চিত করা যাবে না। সিপিডির এই উপলব্ধি সঠিক যে, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা না গেলে টেকসই উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়। এসডিজিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সর্বমোট ১৬৯টি লক্ষ্য, অর্থাৎ এর ব্যাপ্তি অনেক বিশাল। এই বিশালত্বকে ধারণ করার ক্ষেত্রে সম্পদ ও অর্থায়নের বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া রয়েছে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কি-না তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা চোখে পড়ার মতো। নেতৃত্বের অভাবও প্রকট। এসব দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য জোর চেষ্টা চালাতে হবে। নজরদারির প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পুরো প্রক্রিয়াটির ওপর নজরদারি রাখতে হবে।

এসডিজির কর্মসূচি নির্ধারিত হলেও সূচকগুলো এখনও সঠিক হয়নি। ফলে অর্থায়নের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট নয়। অথচ অর্থায়নই এসডিজি অর্জনের এক বড় শর্ত। সরকারের উচিত হবে এসডিজি অর্জনে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ক্রমাগত মতবিনিময় চালিয়ে যাওয়া। সিপিডির সোমবারের সম্মেলনের পর্যবেক্ষণগুলো সরকারের অনেক উপকারে আসতে পারে।


Published in The New Nation

Proper prioritization of SDGs in national planning

THE UN General Assembly on September 25 adopted the Sustainable Development Goals (SDGs) with 17 broad objectives globally that will provide the blueprint for the world’s development over the next 15 years. These are highly ambitious development goals and Bangladesh appears to be in the forefront in achieving many of those goals. But the question is how the country will move forward in mobilizing resources to implement projects and achieve these goals. The Centre for Policy Dialogue on Monday discussing those issues highlighted the fact that data availability and coordination among so many ministries and development agencies will be the key challenges for achieving the SDGs in Bangladesh. The Seventieth Session of Integration of SDGs with their national planning process will also be a challenge. Among 17 SDGs, eight goals were better integrated in the existing national prioritization process and about 20 percent SDGs were not currently reflected in national priorities.Experts believe that weaker areas of Millennium Development Goals (MDGs) in Bangladesh; which laid the foundation of the SDGs, such as generating productive employment, reduction of inequality and environment-related aspects must find priorities in the national planning process. Finance and non-financial resources are also key components for successful delivery of the SDGs as at the current level of public and private global investment shows an annual financing gap of US$ 205 trillion. Bangladesh should take cautious steps to reduce corruption, misuse of budgetary resources and stop money laundering to mobilize enough resources to achieve its own SDGs within the time. There is also the lack of institutional capacity to track the development progress by compiling data from field level to make proper projection of progress in particular areas. It remains a big challenge. Good governance, participation of people in development activities, strengthening accountability are also some conditions to achieve the desired growth. Here the engagement of  Private sector, NGOs, Parliamentarians and Local Government representatives is also important to create the platform to implement the SDGs. It needs pragmatic leadership as well as strong work ethics to achieve the goals.  We may have a thousand development goals but achieving them needs sacrifice and a willingness to look at the common good over our narrow selfish and petty interests. Thinking along the lines that what is good for one must be also good for all is not the correct way either to achieving long term development goals. The goals must be egalitarian but also differential based on capacity and nature of demand for goods and services of socio-economic groups. Where total good is the highest, individual good is also likely to be on the high side. We believe that the SDGs must be prioritized accordingly to bring maximum development to the nation within the stipulated 15 years time.


Published in The Inquilab

প্রবৃদ্ধি অর্জনের চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশে ভোগের স্থিতিশীলতা, রফতানী প্রবৃদ্ধি ও সাময়িক রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বব্যাংক মনে করছে, চলতি অর্থ বছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৫ ভাগ হতে পারে। গত এপ্রিলে বিশ্বব্যাংকের ঘোষণায় প্রবৃদ্ধির হার ২০১৫-১৬ অর্থনৈতিক বছরে ৬ দশমিক ২ হবে বলে বলা হয়েছিল। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল  ৬ দশমিক ১ ভাগ। বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে চার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমটি হলো আর্থিক খাত। বলা হয়েছে, আর্থিক খাতে খেলাপি ঋণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসছে না। ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিরা তাদের অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। কেননা তারা রেহাই পাচ্ছে। জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে তার সুযোগের সদ্ব্যবহার করছে না। সবশেষে আর্থিক খাতে সরকারী ব্যয় ও রাজস্ব প্রশাসনের দক্ষতা বাড়ানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ । রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন  প্রতিষ্ঠানসহ প্রশাসনিক সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এদিকে টেকসই উন্নয়ন  লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশকে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছে, বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। এগুলো হলো, বৈশ্বিক উন্নয়ন কর্মসূচীকে জাতীয় পরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করা, সকলের অংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা, অর্থের জোগান বা সম্পদের প্রাপ্যতা, বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান ও তদারকি এবং কাঠামোগত কৌশল ও বাস্তবায়ন। এছাড়া এসব চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে প্রয়োজন জাতীয় নীতি কাঠামোর ভেতরে দেশের ভিতর ও এক দেশের সাথে অন্য দেশের মধ্যে বৈষম্য কমানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থায়নের ব্যবস্থা, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং কর্মসূচী বাস্তবায়নে সবার অংশগ্রহণ  নিশ্চিত করা।যেমনটি বিশ্বব্যাংক ও সিপিডি বলেছে বাস্তবতাও হলো অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আলাদা করে দেখার সুযোগ বর্তমান সময়ে খুবই কম। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মকা-ে সকল জনগণের অংশগ্রহণ সুশাসন এসব প্রসঙ্গ কার্যতঃ নতুন কিছু নয়। বিদ্যমান বাস্তবতার বিশ্লেষণ দিয়ে সিপিডি বলেছে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের হার জিডিপির ১২ দশমিক ১ শতাংশ। আর পাচার হয়ে যায়, জিডিপি’র প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ। এদিকে স্বল্পসুদে বা স্বল্পমূল্যের বিদেশী সহায়তা না নিয়ে সরকার প্রতিবছর উচ্চ সুদে বা উচ্চমূল্যে ব্যাংকঋণ নেয়। এটা কোন অর্থনৈতিক যুক্তিতে টেকে না। বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৯টি লক্ষ্যের বিষয়ে খুব বেশি জোর দেয়া হয় না, পর্যাপ্ত বরাদ্দও থাকে না। এর মধ্যে রয়েছে, স্বাস্থ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান, অবকাঠামো, বৈষম্য, নগরায়ণ, টেকসই ভোগ ও উৎপাদন, সমুদ্র ও সম্পদের ব্যাবহার, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময়তা এবং সুশাসন। সুশাসন সম্পর্কে বলা হয়েছে, এসডিজিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টিতে জোর দেয়া হয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতদিন উন্নয়নকে  আয়ের হিসাবে দেখা হতো, এসডিজিতে তা মানবাধিকারের দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন ও এর সাথে যেসব চ্যালেঞ্জের কথা বলেছে সেসব মেলালে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রকৃতই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে দেশে গ্রহণযোগ্য বাস্তবতার বাতাবরণ তৈরি করতে হবে। এর সাথে পরিসংখ্যানগত ব্যাপারটিও রয়েছে। সরকারের পরিসংখ্যানের সাথে বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যানগত গরমিল রয়েছে। সরকার যে পরিসংখ্যান ধরে বারবার প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের কথা বলছে তার সাথে সুনির্দিষ্ট পার্থক্য রয়েছে। বিশ্বব্যাংক এর আগেও সুনির্দিষ্ট করে বলেছে, রাজনৈতিক অস্থিরতাই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান বাধা। এবছর প্রথম তিন মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকাÑ যা মোট দেশজ উৎপাদনের একভাগ। সম্প্রতি বিদেশী নাগরিকদের হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতেও বিনিয়োগ রফতানি নতুন সংকটে পড়েছে। সুশাসন, মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নতুন আলোচনা অর্থহীন। সামগ্রিকভাবে বলা  যায়, সরকার যাই বলুক একটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সূত্র ধরে দেশে কার্যতঃই অস্বাভাবিক বাস্তবতা বিরাজ করছে। সে বিবেচনায় বিশ্বব্যাংকের আশাবাদ শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকবে কিনা তা খুব নিশ্চিত করে বলা যায় না।জিডিপি ৭ ভাগ যদি অর্জন করা সম্ভব না হয় তাহলে আমরা কোন বিবেচনাতেই একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারব না। বিশ্বব্যাংক মনে করছে, বাজেটে ঘোষিত ৭ ভাগ জিডিপি অর্জনের জন্য মূল্য¯ফীতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বিশ্বব্যাংক আরো মনে করছে, নিকট মেয়াদে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ভোগ ও রফতানিতে তেজী ভাব থাকবে। এসব ধারণা কার্যতঃ অনেক যদি ও কিন্তুতে ঘেরা। সংস্থাটির মতে, ৬ দশমিক ৫ ভাগ অর্জনেই অর্থনীতির উৎপাদনশীলতার উপর অত্যন্ত  কার্যকর তদারকি করতে হবে। বাজেটের অর্জনে অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায়িক নিয়ম-কানুনে সংস্কার আনার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছে বিশ্বব্যাংক। সেই সাথে সংস্কারে বাংলাদেশের ধীরগতির কথাও সংস্থাটি উল্লেখ করেছে। বাস্তবতা হলো, প্রবৃদ্ধি অর্জনে রাজনৈতিক ইচ্ছাই অগ্রাধিকার প্রাপ্ত। এই রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার কোন প্রয়োজন নেই। উন্নয়নকে কার্যকর বাস্তবতায় নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে প্রায় সব ক্ষেত্রেই যে ধরনের বৈষম্যমূলক প্রবণতা কোন না কোনভাবে সক্রিয় রয়েছে তার অবসান করা না গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন কোন বিবেচনাতেই সম্ভব নয়। কথা-বার্তা যাই হোক একথাই ঠিক যে, বাংলাদেশের ৭ ভাগ জিডিপি অর্জনের কোন বিকল্প নেই। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এ লক্ষ্য অর্জনে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক আন্তরিক থাকবেন- এটাই প্রত্যাশিত।