Number of family members is ignored in wages for RMG workers: Dr Moazzem

Published in প্রথম আলো on Tuesday, 8 March 2016

এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের সমীক্ষা প্রকাশ

দেশে পোশাকশ্রমিকের গড় মজুরি ৬ হাজার ৮২০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকেরা গড়ে ৬ হাজার ৮২০ টাকা মজুরি পান। কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ১ শতাংশ পান গড়ে ১৯ হাজার ৪৪ টাকা। এঁরা সবাই দক্ষ শ্রমিক। আর যাঁরা সবচেয়ে কম দক্ষ, তাঁরা মাসে পান গড়ে ৫ হাজার ৬২৫ টাকা।

গতকাল সোমবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) প্রকাশিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এসিডির নির্বাহী পরিচালক এ কে এনামুল হক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশই নারী শ্রমিক। আর বাকি ৩৫ শতাংশ পুরুষ শ্রমিক। সব মিলিয়ে এ খাতে ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে ২৬ লাখ নারী ও ১৪ লাখ পুরুষ।

শ্রমিকেরা কোন কোন খাতে ব্যয় করেন—এর চিত্রও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, খাবারের পেছনে শ্রমিক পরিবার মাসে গড়ে ৪ হাজার ৭৮২ টাকা ১৮ পয়সা ব্যয় করে থাকে, যা ওই পরিবারের মোট ব্যয়ের ৪২ শতাংশ। এ ছাড়া ঘর ভাড়ায় ব্যয় করতে হয় মাসিক খরচের ৩০ শতাংশ বা ৩ হাজার ৪০৯ টাকা ৬৪ পয়সা। মোবাইল ফোনের পেছনে মাসে প্রতিটি পরিবার গড়ে ৩১৬ টাকা ৫৮ পয়সা ব্যয় করে থাকে। অন্যদিকে গ্রামের বাড়িতে প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ২৯২ টাকা ১২ পয়সা পাঠান তাঁরা। এ ছাড়া কাপড়চোপড়ে ৫২৯ টাকা, শিক্ষায় ৬৬৭ টাকা, প্রসাধনে ২৯৯ টাকা, কর্মস্থলে আসা-যাওয়ায় ২২৯ টাকা, বিনোদনে ৯৯ টাকা ও অন্য খাতে ২ হাজার ৪৭৯ টাকা খরচ করে প্রতিটি পরিবার।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) অধ্যাপক সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার বলেন, অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স এ দেশে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এখন ৯০ শতাংশ কারখানায় অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা রয়েছে।

তৈরি পোশাক খাতে নারী শ্রমিকের অংশীদারত্ব নিয়ে প্রাপ্ত ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিম রায়হান। এ জন্য প্রতিবেদনে আরও ব্যাখ্যা থাকা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পোশাকশ্রমিকদের যে মজুরি দেওয়া হচ্ছে, তা শুধু একজনকে বিবেচনা করেই নির্ধারিত হয়, তাঁর পরিবারের সদস্যসংখ্যা বিবেচনা করা হয় না। তাই এখন মানসম্পন্ন জীবনধারণের চাহিদা মেটানোর জন্য মজুরি নির্ধারণের কথা বলা হচ্ছে। শহরে থাকার কারণে একজন শ্রমিককে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হচ্ছে। সন্তানের শিক্ষা, বিনোদনের কথা চিন্তা করতে হচ্ছে। এসব চাহিদা তাঁরা আর পাশ কাটিয়ে যেতে পারছেন না।

ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের (ইআরজি) পরিচালক অতনু রব্বানীর মতে, পোশাক খাতের শ্রমিকদের জীবনযাত্রায় কী ধরনের প্রভাব পড়ছে, তা নিয়মিতভাবে তদারকিতে আনা দরকার। এ জন্য এ প্রতিবেদনের ফলাফলকে ভিত্তি ধরে নিয়মিত তা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। তাঁর মতে, পোশাকশ্রমিকেরা ১০-১২ বছর কাজ করার পরে এ পেশায় আর থাকেন না। এরপর তাঁরা কী করেন, সেটাও দেখতে হবে।