Recovering from investment crisis – interview with Mustafizur Rahman

Published in Bangladesh Protidin on Tuesday, 3 June 2014.

কেমন বাজেট চাই
বিনিয়োগে আস্থার সংকট কাটাতে হবে – ড. মোস্তাফিজুর রহমান

মানিক মুনতাসির

উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগবান্ধব বাজেট প্রণয়ন করতে হবে বলে মনে করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আস্থার সংকট কাটাতে না পারলে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়। তাই বাজেটে এ জন্য উদ্যোগ থাকা জরুরি।’ আসন্ন ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘কৃষি ও শিল্প খাতে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট দ্রুত সমাধান করতে হবে। গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়লেও সে হারে প্রকৃত উৎপাদন বাড়েনি। এ ছাড়া কয়েক বছরে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েছে। ফলে সংকট কাটছে না। সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য রেন্টাল, কুইক-রেন্টাল থেকে সরকার উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ কিনছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অথচ এখন স্থির খরচ না থাকায় কম মূল্যে বিদ্যুৎ কেনাই ছিল কাম্য। সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ কেনার ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া প্রয়োজন। আর টেকসই উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাওয়া দরকার।

এ বিষয়ে বাজেটেও সুর্নিদিষ্ট নির্দেশনা থাকা উচিত।’ এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, রপ্তানি আয় বাড়াতে রপ্তানির বাজার বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সম্ভাবনাময় দেশে বাণিজ্যিক উইং খুলে বাজার শক্তিশালী করতে হবে। রাজস্ব আয়-ব্যয় কাঠামো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২০০৯-১০ অর্থবছরের পর এ বছরই প্রথম এনবিআর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েছে। ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা কমিয়েও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যয় মেটাতে সরকারকে ঋণ করতে হচ্ছে। এদিকে ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির তুলনায় কম হলেও ঘাটতি অর্থায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। কারণ ঘাটতির প্রায় ৯১ ভাগই অর্থায়ন করা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ করে। ফলে সুদ বাবদ ব্যয় বাড়ছে। উন্নয়নবহিভর্ূত ব্যয় হিসেবে সুদ একটি বড় খাত হিসেবে পরিণত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিদেশি অর্থায়নে উন্নয়ন ব্যয় বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।’

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে তুলনামূলকভাবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি। উৎপাদক ও কৃষক পর্যায়ে পণ্যের দাম খুব কম হলেও ভোক্তা পর্যায়ে দাম অনেক বেশি। এ ধরনের প্রবণতা অর্থনীতির জন্য খুব নেতিবাচক। তবে খাদ্যবহিভর্ূত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাজেট ঘাটতির অর্থায়নে বৈদেশিক সম্পর্ক জোরদার করে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ আরও বেশি আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি পাইপলাইনে যে রেকর্ড পরিমণ অর্থ আটকে আছে, তা ছাড় করতে উদ্যোগ নিতে হবে।’