Book Launching: Rehman Sobhan’s UNTRANQUIL RECOLLECTIONS

 

untranquil-recollections-the-years-of-fulfilment-rehman-sobhan-cpd

Rehman Sobhan’s

 UNTRANQUIL RECOLLECTIONS

 The Years of Fulfilment

 on Monday, 14th December 2015 at 6:30 pm at Lecture Room – II

 Basement (Annexe). India International Centre
40 Max Mueller Marg, New Delhi 110 003

Published in প্রথম আলো on Wednesday, 16 December 2015

রেহমানের গল্প শোনালেন বন্ধু মনমোহন

সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি

নয়াদিল্লিতে গত সোমবার রেহমান সোবহানের বইেয়র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) দেব মুখার্জী, মুচকুন্দ দুবে, মনমোহন সিং ও রেহমান সোবহান l ছবি: সংগৃহিত
নয়াদিল্লিতে গত সোমবার রেহমান সোবহানের বইেয়র প্রকাশনা অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) দেব মুখার্জী, মুচকুন্দ দুবে, মনমোহন সিং ও রেহমান সোবহান l ছবি: সংগৃহিত

উথাল-পাতাল জীবনের গল্প শোনালেন রেহমান সোবহান। গল্পের রেশ ধরে আরও গল্প উঠে এল মনমোহন সিংয়ের কণ্ঠে। ক্রমেই বিস্তৃত হলো গল্পগুচ্ছের শাখা-প্রশাখা। মন আচ্ছন্ন হলো স্বাধীনতার সংগ্রাম-কাহিনিতে।

সোমবার, ১৪ ডিসেম্বরের সন্ধ্যা। নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে আবেশমুগ্ধ পরিবেশে উন্মোচিত হলো বাংলাদেশের কৃতী অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের স্মৃতিকথা আনট্রাঙ্কুইল রিকালেকশনস, দ্য ইয়ারস অব ফুলফিলমেন্ট। উন্মোচক রেহমান সোবহানের কেমব্রিজের বন্ধু ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এই নামেই শেষ হলে সন্ধ্যাটা আবেশে হয়তো এতটা মাখামাখি হতো না। কারণ, বাংলাদেশের উথাল-পাতাল অধ্যায়ের গল্প শোনাতে রেহমান সোবহানের সঙ্গী দুই সাবেক কূটনীতিক মুচকুন্দ দুবে ও দেব মুখার্জি। তাঁদের সঙ্গী দার্জিলিংয়ের সেন্ট পলসে পড়া বিখ্যাত চিকিৎসক সমীরণ নন্দী এবং সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের সিনিয়র ফেলো ইতিহাসবিদ শ্রীনাথ রাঘবন। রেহমান সোবহানের গল্পের রেশ ধরে পাল্টা কাহিনি এবং সেই সঙ্গে নানান কৌতূহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম যেন বিমূর্ত হয়ে ওঠে। শ্রোতারা ফিরে ফিরে যান ইতিহাসের সেই অধ্যায়গুলোতে।

শুরুতেই রেহমান সোবহান কবুল করে নেন, এই বই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নয়, তবে ইতিহাসের কিছু অঙ্গ, যা তিনি দেখেছেন তাঁর মতো করে এবং ব্যাখ্যাতেও রয়েছে স্বকীয়তা। সেন্ট পলস থেকে লাহোরের এচিসন কলেজ, তারপর বিলেতে কেমব্রিজের আঙিনা এবং সেখান থেকে ক্রমে ক্রমে ষাটের দশকের উত্তাল দিনের শরিক হয়ে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সান্নিধ্য-বর্ণনা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে রাজধানীর ‘হুজ হু’কে। ১৯৫৫ সালে কেমব্রিজে জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে তোলা একটা গ্রুপ ফটো থেকে তাঁর মুখটা কেটে পাকিস্তানি শাসক কীভাবে অন্য একজনের তল্লাশ করছিল, কীভাবে তিনি তাজউদ্দীন আহমদকে ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, সেই কাহিনি শোনাতে শোনাতে রেহমান সোবহান বলেন, স্বাধীনতার সংগ্রামের সেই পর্বে অর্থনীতিবিদদের কাছে ঋণী থাকতেই হবে। কেননা, ‘অমর্ত্য সেন থেকে অশোক মিত্রর হাত ধরে পি এন ধর হয়ে শেষ পর্যন্ত সেই সময়কার ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর পর দ্বিতীয় শক্তিশালী ব্যক্তি পি এন হাকসারের সঙ্গে আমার পরিচয়। তাজউদ্দীন আহমদকেও তত্কালীন ভারতীয় নেতৃত্ব সেভাবে চিনতেন না। চেনা-জানার সেই সলতে পাকানোর কাজটিও আমায় করতে হয়েছিল।’

এখান থেকেই গল্পের রাশ হাতে তুলে নেন মনমোহন সিং। বলেন, ‘সেই ’৫৫ সাল থেকে চেনাজানা। রেহমানের জীবনটাই একটা অ্যাডভেঞ্চার। পুঁথির জগৎ থেকে স্বাধীনতার অংশীদার হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। রেহমানে বঙ্গবন্ধু এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে সেই সাহচর্য ছয় দফা দাবির জন্ম দেয়। একটা সময় রেহমান ছিলেন বিদেশে বাংলাদেশের স্বার্থ তুলে ধরার ওয়ান ম্যান আর্মি।’ মনমোহন মনে করিয়ে দেন, স্বাধীনতার পর পি এন হাকসারই তাঁকে সে দেশে পাঠিয়েছিলেন দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তার করতে। অন্যদের সঙ্গে রেহমান সোবহানও তখন বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদের দলে ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘সেই কাজ আমরা আজও করে চলেছি।’ মনমোহনের আক্ষেপ, বঙ্গবন্ধু কী সুন্দরভাবে আমাদের রিপোর্ট দেখেছিলেন এবং মতবিনিময় হয়েছিল, রেহমানের বইয়ে সেই কাহিনি বিধৃত হয়নি। মনমোহনের আক্ষেপ দূর করে রেহমান বলেন, সেটা হবে তাঁর পরবর্তী বইয়ের অংশ।

বই নিয়ে বিস্তর কাটাছেঁড়ার মাঝে মুচকুন্দ দুবে জানিয়ে দেন রেহমানের বহুমুখী প্রতিভার কাহিনি। শিক্ষাক্ষেত্র থেকে রাজনীতি তো আছেই কিন্তু হেন কোনো খেলা নেই যেখানে রেহমানের ছায়া পড়েনি। ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, অ্যাথলেটিকস মায় বক্সিংয়েও ছিল তাঁর সমান দখল।
রেহমান সোবহানের জীবনের আরও ঘটনা তুলে ধরেন দেব মুখার্জি, সমীরণ নন্দী ও শ্রীনাথ রাঘবন।

রেহমান সোবহানের এই বইয়ের প্রকাশক ‘সেজ পাবলিকেশনস’। সেজ-এর এটা ৫০তম বছর। এই বছর থেকেই তারা অন্য ভাষাতেও বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেহমান সোবহানের এই বইটির বাংলা অনুবাদও তারাই করবে বলে জানানো হয়।