Published in প্রথম আলো on Sunday 28 June 2020
পাটকল শ্রমিক ক্ষুব্ধ, জটিলতার শঙ্কা
মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি
সরকারি পাটকলের সঙ্গে একদিকে শ্রমিকের স্বার্থ জড়িত, অন্যদিকে সেগুলোতে বড় ধরনের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি রয়েছে। প্রতিবছর করদাতাদের শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে পাটকলগুলো চালু রাখতে হচ্ছে। তারপরও প্রায় সব কটিই লোকসান গুনছে। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন ছিল বলে আমি মনে করি।
পাটকলগুলোর আকার যুক্তিসংগত পর্যায়ে নামিয়ে আনার পাশাপাশি যন্ত্রপাতির আধুনিকায়ন করে সরকারি খাতে রেখে বা ব্যবস্থাপনা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিয়ে কিংবা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিই) ভিত্তিতে পরিচালনার মাধ্যমে পুনর্গঠন সম্ভব। বর্তমানে পিপিপির মাধ্যমে পরিচালনার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ভিত্তিতে করতে হবে। পাটকলগুলো পরিচালনার জন্য কাদের দেওয়া হবে, সেটি যেন রাজনৈতিক বিবেচনায় না হয়। অতীতে অন্যান্য খাতের বেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার পর সরকারি কলকারখানার জমি হাতছাড়া হয়ে গেছে। অনেকগুলোর চরিত্রই পাল্টে ফেলা হয়েছে।
পিপিপির মাধ্যমে পাটকলগুলো লাভজনক করতে হলে ভালো পরিকল্পনা থাকতে হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি বসাতে হবে। বর্তমানের মতো অনেক শ্রমিক প্রয়োজন হবে না। সে জন্য শ্রমিকের ন্যায্য দেনা–পাওনা পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আমি আবারও বলব, সরকারি পাটকলের পুনর্গঠনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বব্যাপী পাটপণ্যের চাহিদা বর্তমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে জন্য সরকারকে বাংলাদেশি পাট ও পাটজাত পণ্যের ব্র্যান্ডিং করতে হবে। তাহলে পাটচাষি থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন।