প্রচুর মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে বাড়তি ভাড়া হ্রাস পেয়েছে: ফাহমিদা খাতুন

Published in দেশ রুপান্তর on Tuesday 7 July 2020

৩ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ

সবশেষ তিন বছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত তিন অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিবিএসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এর আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ ছিল।

গতকাল সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিবিএসের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে মাসিক হিসাবে গত মে মাসের তুলনায় জুন মাসেও মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে শহর ও গ্রাম উভয় জায়গাতেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, মে মাসের তুলনায় জুনে শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মূল কারণ হচ্ছে হঠাৎ বন্যা। এ কারণে ফসল, বিশেষ করে সবজির ক্ষতি হয়েছে। তা ছাড়া এমনিতেই আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে অতিবৃষ্টির কারণে এ সময়টাতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে যায়। তবে আমরা আশা করছি বন্যার পানি নেমে গেলে দ্রুত রাস্তাঘাট সংস্কার হবে, তখন সরবরাহব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে। ফলে মূল্যস্ফীতিও কমে আসবে।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একক মাস হিসেবে জুনে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ডা. ফাহমিদা খাতুন বলেন, কোভিড-১৯ দেশের পণ্য সরবরাহের শৃঙ্খলা ব্যাহত হয়েছে।  জনগণের কাছে যথেষ্ট খাদ্যপণ্যের সমাহার নেই। কিছু ব্যবসায়ী এ সুযোগটি হাতছাড়া করেননি, তারা খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে, এর কারণ হলো মানুষ শপিং মল বা অন্য কোথাও কেনাকাটার জন্য যাচ্ছে না। জনসাধারণ গণপরিবহন ও বাজারে এখন খুব একটা যাচ্ছে না। প্রচুর মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার কারণে শহরে বাড়তি ভাড়াও হ্রাস পেয়েছে।

বিবিএসের প্রতিবেদন অনুসারে,  জুন মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভৃত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।

এদিকে গ্রামে সার্বিক মূলস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ, যা তার আগের মাসে ছিল ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।