জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে দুই ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে: মোস্তাফিজুর রহমান

Published in দৈনিক জনকন্ঠ on Wednesday,  8 February 2017

কর্মপরিবেশ উন্নত হলেও পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয়নি

  • কর্মশালায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥

mustafizur-rahman-interviewপোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ আগের চেয়ে অনেক উন্নত হলেও পোশাকের ন্যায্যমূল্য এখনও নিশ্চিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মঙ্গলবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা নিয়ে দিনব্যাপী এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমরা এখন একটা অবস্থানে পৌঁছতে পেরেছি। আমাদের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত। বিশ্বের ২৫টি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে প্রথম ৭টিই আমাদের। কিন্তু এখনও পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হয়নি।

তিনি বলেন, মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধার মধ্যে চলে যাবে। এজন্য আমরা নানা ধরনের কাজ শুরু করেছি।

কর্মশালায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়। যেখানে ২০২৩ সালে নতুন জিএসপি পলিসিতে বাংলাদেশের মতো এলডিসিভুক্ত দেশের আর্থিক, সামাজিক, শ্রমিক অধিকার এবং পরিবেশের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে- তা নিয়ে আলোচনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি, দেশের অর্থনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৩ সালে নতুন যে জিএসপি পলিসি করবে সেটা নিয়েই আজকের কর্মশালা। এই জিএসপি পলিসি আমাদের মতো দেশের আর্থিক, সামাজিক, শ্রমিক অধিকার এবং পরিবেশের ওপর কি ধরনের প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশকে দুই ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, পোশাক খাতের বাইরে এই সুযোগটা আমরা খুব কমই নিতে পেরেছি। তাই সরবরাহ, রফতানি এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়িয়ে আরও কিভাবে পোশাক খাত এবং এর বাইরে এই সুবিধাটা নিতে পারি সেটা দেখতে হবে। তিনি বলেন, অন্যদিকে, আমরা যখন এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) তালিকা থেকে বের হয়ে জিএসপি প্লাসে যাব, তখন অনেক শর্ত এটার মধ্যে চলে আসবে। বিশেষ করে আইএলওর যে ২৭টি কনভেনশন আছে তা পূরণ করা হয়েছে কি না, তা দেখা হবে। যদিও আমরা ২৫টি পূরণ করেছি। এছাড়া বিনিয়োগ পরিবেশ, শ্রমিক অধিকার, কারখানা পরিবেশ, শ্রমিকদের মজুরি এগুলোও চলে আসবে। ‘এক্ষেত্রে যদি আমরা ভাল পদক্ষেপ নিতে পারি, সক্ষমতা বাড়াতে পারি, তাহলে আমরা এলডিসি থেকে বের হওয়ার পরেও জিএসপি প্লাস গ্রহণ করতে পারব। যার মধ্যেও শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা থাকবে।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এইচই পিয়েরে মায়াদুন, ইউরোপিয়ান কমিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ফর ট্রেড ডেনিয়েল ক্রামার, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বেগম মাফরুহা সুলতানা, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ, শ্রমিক নেত্রী কল্পনা আক্তার।