Professor Mustafizur Rahman on dropping foreign investment and politics

Published in Samakal on Monday, 9 February 2015.

তিন বছর পর কমেছে বিদেশি বিনিয়োগ

সমকাল প্রতিবেদক

পর পর তিন বছর বৃদ্ধির পর গেল বছর সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাময়িক হিসাবে ২০১৪ সালে এফডিআই এসেছে ১৫৩ কোটি ডলার। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল ১৬০ কোটি ডলার। এফডিআই কমার হার সোয়া ৪ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর যে পরিমাণ অর্থ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, তার প্রায় অর্ধেকটাই এসেছে আগেই আসা বহুজাতিক কোম্পানির পুনর্বিনিয়োগ হিসেবে। ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ এসেছে আন্তঃকোম্পানি ঋণের মাধ্যমে। মাত্র ২৫ শতাংশ অর্থ নতুন বিনিয়োগ হিসেবে এসেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছিল। ওই বছর এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ৯১ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। এর আগের বছর ২০০৯ সালে এর পরিমাণ ছিল ৯৬ কোটি ৬ লাখ ডলার। তবে ২০১১ সালে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ একক কোনো বছরে প্রথমবারের মতো ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। ওই বছর এর পরিমাণ ১১৩ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। পরের দুই বছরও প্রবৃদ্ধি বজায় থাকায় তা সর্বোচ্চ ১৬০ কোটি ডলারে পেঁৗছায়।বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাসের জন্য রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকেই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, এফডিআই হ্রাসের হার এবং মোট এফডিআইর পরিমাণের কোনোটিই উল্লেখযোগ্য নয়। তার মতে, ভিয়েতনামে যেখানে এখন প্রতি বছর ৮০০ থেকে ১ হাজার কোটি ডলার এফডিআই আসে, সেখানে বাংলাদেশের এফডিআই ১৫৩ কোটি ডলার কিছুই নয়।

সমকালকে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের শেষে থেকে সম্ভাব্য যে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল, সে কারণে বিনিয়োগ কম এসেছে। তবে শেষ পর্যন্ত গত বছর রাজনৈতিক অঙ্গনে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করার পরও কেউই নিশ্চিত ছিল না যে তা স্থায়ী হবে। বিশেষত, এ কারণেই যারা এদেশে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাদের অনেকেই সিদ্ধান্ত স্থগিত বা বাতিল করেন।

মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার অন্যতম প্রধান দুই শর্ত হলো_ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে যথেষ্ট ও কার্যকর উদ্যোগ। বিশেষত, ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা ও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা।মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ দুই ক্ষেত্রে এখনও আশাব্যঞ্জক কিছু দেখছি না। ফলে এ বছরও এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলে আশা করতে পারছি না। বরং এফডিআই নিবন্ধন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’