আবার লকডাউনে যেতে হলে অর্থনীতির ক্ষতি বাড়বে: খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

Published in সমকাল on Sunday 10 May 2020

অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরবে কবে

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কোটি কোটি মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। শিল্পকারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত কার্যত স্থবির। জীবন বাঁচাতে জীবিকার কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিশ্ব। ফলে পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে মন্দা। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। কিন্তু জীবিকা না থাকলে জীবন অসহায়। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ লকডাউন শিথিল করে ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বাংলাদেশও হাঁটছে সেই পথে। সীমিত পরিসরে শিল্পকারখানা চালু হয়েছে। খোলা হচ্ছে অফিস-আদালত, দোকানপাট। পর্যায়ক্রমে পরিবহন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।

অর্থনীতিবিদ, নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ীদের কাছে প্রশ্ন ছিল, দেশের অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরতে কত সময় লাগবে বা আদৌ কি আগের অবস্থায় ফেরা সম্ভব হবে। জবাবে তারা বলেছেন, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে, তার ওপর। বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা, এই পর্যায়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে অর্থনীতি ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। কারণ বাংলাদেশের কৃষি খাত এখনও ঠিক রয়েছে। আমদানি চাহিদায় বিশেষ পরিবর্তন আসেনি। তবে অর্থনীতির প্রধান দুটো সূচক রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আয় ব্যাপক কমেছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ নেই। তবে বাংলাদেশের সামনে কিছু ক্ষেত্রে সম্ভাবনা রয়েছে। মন্দার কারণে বিশ্বে কম মূল্যের পণ্য ও সেবার চাহিদা বাড়বে। বাংলাদেশের সেক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব বাড়ানোর সুযোগ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অর্থনীতিসহ সামগ্রিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে স্ব্বাস্থ্যঝুঁকির ওপর। স্বাস্থ্যঝুঁকি যত দ্রুত কমে আসবে, তত দ্রুত সবকিছু স্বাভাবিক হবে। তবে সরকার এখন যে পথে হাঁটছে তাকে ‘কঠিন পথ’ বলতে হবে। স্বাস্থ্যঝুঁকি না কমলেও লকডাউন শিথিল করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। এতে অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরতে সময় বেশি লাগবে। আবার ঝুঁকিও বাড়বে। এমনও হতে পারে যে, ফের সম্পূর্ণ লকডাউনে যেতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অর্থনীতি আগের অবস্থায় ফিরতে অনেক বেশি সময় লাগবে। তিনি বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর অর্থনীতি গতিশীল হওয়ার বিষয়টি ক্ষতিপূরণে নেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজ ও তার বাস্তবায়ন এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাহিদার ওপর নির্ভর করবে।