এসডিজি অর্জনে এনজিওগুলোর জন্য ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা উচিৎঃ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

Published in বণিক বার্তা on Tuesday, 13 March 2018

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা

ব্যাংকে মূলধন জোগান বন্ধের প্রস্তাব অর্থনীতিবিদদের

জনগণের টাকায় প্রতি বছর ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণের রেওয়াজ থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এর পরিবর্তে ব্যাংকিং খাতের অরাজকতা বন্ধ ও বিপদে পড়া ব্যাংকগুলোকে একীভূত করতে মার্জার অ্যান্ড অ্যাকুইজিশন আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছেন তারা। পাশাপাশি বাজেটের অর্থ বরাদ্দ-ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনা ও আর্থিক খাত সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাব দেন অর্থনীতিবিদরা।

ব্যাংকিং খাতে অরাজকতা বিরাজ করছে উল্লেখ করে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিং খাতের অরাজকতা দীর্ঘদিনের। সরকারের অনেক সফল কাজ এর ফলে ম্লান হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক লুটপাটকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে নতুন নতুন ঋণখেলাপি তৈরি হবে। ফলে ব্যাংকগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। জনগণের টাকায় ব্যাংকের মূলধন জোগান দেয়ার যে রেওয়াজ, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

এম সাইদুজ্জামানের বক্তব্যের সূত্র ধরে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারি টাকায় ব্যাংকগুলোয় মূলধন জোগান দেয়া হয়। আর ব্যাংক তা খেয়ে ফেলে। ফারমার্স ব্যাংক তাদের মূলধন খেয়ে ফেলেছে। ব্যাংকটিকে মরে যেতে দেয়া উচিত। জনগণের টাকায় এর মূলধন জোগান দেয়ার কোনো মানে হয় না। আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর পাশাপাশি কর, ভ্যাট ও শুল্ক আইন চাহিদা অনুযায়ী সংস্কারের প্রস্তাব দেন তিনি।

সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো একীভূত করতে আইন প্রণয়নের কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধানে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার কথা বলা হয়। কিন্তু এ-সংক্রান্ত কোনো আইন নেই। সংকটে ভোগা ব্যাংকগুলো যেন একীভূত হতে পারে, সেজন্য আইন প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগলে এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে।

শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানো দরকার উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষার ভিত্তি তৈরিতে সরকারকে মনোযোগী হতে হবে। কারিগরি ও বিজ্ঞানভিত্তিক পড়াশোনায় আরো বেশি সচেতন হতে হবে। দেশের ৩৮ শতাংশের বেশি মানুষ বেকার উল্লেখ করে এটিকে অর্থনীতির বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।

যেখানে-সেখানে ঋণ দেয়া, অব্যবস্থাপনাসহ যথাযথ নজরদারির অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা বিরাজ করছে বলে জানান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, অনেক ব্যাংকই ঋণদানের সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। ফলে মূলধন সংকট বাড়ছে। প্রতি বছর সংস্কার কার্যক্রমের নামে অকার্যকর কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। এটি মূলত দীর্ঘ সময়ের কাঠামোগত সমস্যার ফল, যা সমাধানে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

মেগা প্রকল্পগুলোয় দীর্ঘমেয়াদে ব্যয় বাড়ছে জানিয়ে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারায় ব্যয় যেমন বাড়ছে, তেমনি ভোগান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুযায়ী সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে মেগা প্রকল্প থেকে ফল আসবে না। জিডিপি প্রবৃদ্ধির তুলনায় শেয়ারবাজার ফাঙ্কশন করছে না। শেয়ারবাজারে সংস্কার না এলে এ খাত থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ার যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। আগে যেভাবে বিদেশ থেকে সাহায্য আসত, এখন আর সেভাবে আসছে না। দারিদ্র্য বিমোচনসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এগুলো ক্রমান্বয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কিছু সাহায্য এলেও তা চলে যাচ্ছে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে। ফলে সরকারের এসডিজি বাস্তবায়ন ব্যাহত হতে পারে। এজন্য চলতি বছরের বাজেট থেকে এসডিজি উন্নয়ন তহবিল গঠন করে সেখানে বরাদ্দ দিতে হবে।

ব্যয় ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের কথা উল্লেখ করেন সাবেক অর্থ সচিব মতিউল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে ব্যাপক হারে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি রয়ে যাচ্ছে। এতে ব্যয় বাড়লেও সুফল আসবে না। বেপরোয়া ঋণ দেয়ার মাধ্যমে মূলধন ঘাটতিতে আছে দেশের ব্যাংকিং খাত। আবার পুঁজিবাজারে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। আর্থিক খাতের সংস্কার ছাড়া উন্নয়নের সুফল মিলবে না।

বাজেটের আকার বাড়ানোর পরিবর্তে এর বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন সাবেক অর্থ সচিব মোহাম্মদ তারেক। তিনি বলেন, বছরের শুরু থেকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় শেষ দিকে এসে ব্যয় বেড়ে যায়। তড়িঘড়ি করতে গিয়ে অর্থের অপচয় করা হয়। ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে মুদ্রানীতি হওয়া উচিত।

শিক্ষার পরিধি বাড়লেও গুণগত মানে পরিবর্তন আসেনি বলে মন্তব্য করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। সরকারকে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সূচনা বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। আসছে ৭ জুন বাজেট উপস্থাপন করা হবে। আর ৩০ জুনের মধ্যেই বাজেট অধিবেশন শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এবারের বাজেটে পরিবহন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এসব খাতে বেশি বরাদ্দ থাকবে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, অনেকে অভিযোগ করেন, নির্বাচনের বছরে আর্থিক খাতসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যান। তাদের ক্ষেত্রে সরকার নমনীয় নীতি নেয়। বিষয়টা ঠিক এমন নয়। কোনোভাবেই অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের আগে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্টদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় না। আবার প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও আগে যাচাই-বাছাই করা হয়। সম্প্রতি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করেছে। এর মাধ্যমে আমদানি-রফতানি, নতুন ব্যবসা শুরুসহ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের জটিলতার অবসান ঘটবে।

Published in The Daily Star on Tuesday, 13 March 2018

Reforms needed to curb default loans: economists

Star Business Report

Noted economists yesterday called for institutional reforms to curb a banking sector culture of defaulting on loans and ensure proper use of development funds.

They said there should be a provision for punishment for delays in project implementation.

They made the observations at a pre-budget meeting with Finance Minister AMA Muhith at the auditorium of National Economic Council in Dhaka.

Prof Rehman Sobhan, chairman of think-tank the Centre for Policy Dialogue (CPD), said when an election approaches many get their loans rescheduled. He cautioned the government to remain alert about it.

In response, Muhith said, “I am assuring you that it will definitely not happen.” Prof Sobhan suggested that the parliament follows up on rescheduling of loans during parliamentary elections as there has been no such initiative.

Mustafizur Rahman, a distinguished fellow at the CPD, said Muhith in previous budgets spoke of a number of reforms and some draft proposals such as a Civil Service Act were also prepared.

Emphasis should be given on implementing those, he said.

M Matiul Islam, a former finance secretary, said banks were suffering from a serious liquidity crisis, pushing up the rate of interest to 12 percent.

He also said due to the crisis confronting Farmers Bank, government agencies were relocating deposits from private banks to state-owned banks.

Islam called for a policy for state-run banks to put government funds in private banks.

In reply, Muhith said he would consider the proposal.

About the crisis confronting private banks, Mohammed Farashuddin, a former governor of Bangladesh Bank, said there was no law at present in the country facilitating mergers and acquisitions.  He said a draft law was prepared in 2000 which should be enacted now.

Siddiqur Rahman Chowdhury, another former finance secretary, said projects were being taken without any feasibility study. As a result, the cost is going up and the implementation is being delayed, he said.

Mohammad Tareque, also a former finance secretary, said budget implementation has not improved and stress should be placed on monitoring.

CPD Executive Director Fahmida Khatun said the Rohingya crisis may put a big pressure on the economy.

She said the development partners were now giving funds on humanitarian grounds but the flow would slow down.

The finance minister needs to outline the government’s long-term plan to face the Rohingya crisis, said the economist.

CPD Distinguished Fellow Debapriya Bhattacharya said NGOs have been playing an important role in the development of Bangladesh, but donors’ fund for non-governmental organisations was shrinking for various reasons.

He called for a budgetary allocation to form a Tk 1,000 crore trust fund from which the government could give financial assistance to NGOs, he said.

M Syeduzzaman, a former minister, said Bangladesh required more public and private investment considering the type of development the country was aspiring to achieve.

The upcoming budget should address under-employment, he said.

 

Published in The Daily Sun on Tuesday, 13 March 2018

Loan defaulters won’t be allowed in next polls

Muhith tells pre-budget meeting

Staff Correspondent

Finance Minister AMA Muhith on Monday said the time has come to put an end to the culture of default loan, assuring that the loan defaulters won’t be allowed to contest in the next polls.

“Now it’s time to think about the loan default culture because this has continued somehow and such strong efforts were not taken to put an end to it,” Muhith said at a pre-budget meeting with economists.

About suggestions for not exempting loan defaulters during the election, Muhith said, “This time I can ensure that this won’t happen. Definitely, it won’t happen.”

Earlier, Prof Rehman Sobhan drew the finance minister’s attention, suggesting that such loan defaulters should not get the chance to take part in the polls.

“Loan default has become an internalised business mode of every business person in Bangladesh.

At the end of the day, there is no moral hazard about defaulting loans,” the seasoned economist asserted.

At the meeting held at city’s NEC auditorium, Muhith hinted that the next national budget’s size would be Tk 475,000 crore which will be placed before Jatiya Sangsad on June 7.

Prof Rehman Sobhan also suggested for imposing penalties for time and cost overrun in implementing most of the development projects, a notion in which the minister also agreed with.

Muhith said there would be substantial decentralisation of power in the tenure of the next government.

Turning to the current situation in the country’s premier bourse Dhaka Stock Exchange, the Minister alleged that “a vested quarter is trying to catch fish in troubled water.”

He, however, was hopeful of reaching a solution to this issue by the weekend with the Prime Minister returning home from abroad by this time.

Talking about the huge burden on Bangladesh with the influx of forcibly displaced Rohingya nationals, Muhith said this is a very big pressure right at the moment while the international community is also trying to help Bangladesh.

Former Bangladesh Bank Governor Dr Farashuddin suggested for accommodating some mega-sized textile industries in the countrywide Special Economic Zones to boost strong backwards and forward linkages for the RMG industry and thus help reduce a huge burden of imports from them.

Executive director of Centre for Policy Dialogue (CPD) Dr Fahmida Khatun called for addressing the cross-cutting issue of gender inequality for LDC graduation with momentum.

She strongly criticised the trend of re-capitalising the struggling state-banks with taxpayers’ money. She raised questions about the rationale behind bailing out Farmers Bank with public funds.

Distinguished fellow of CPD Prof Mustafizur Rahman thinks that the Tk 475,000 crore budget is logical for the country as the size of the per-capita budget will be around $400.

However, he was not convinced about budgetary discipline because every budget increases revenue earning target by around 35 to 40 percent that exerts huge pressure on National Board of Revenue (NBR).

He suggested increasing the number of taxpayers because income tax collection rate in the country is very low.

He also suggested finalising drafts of some reforms initiatives to improve good governance, which is going to play a critical role in driving the nation to the road to becoming a developed one as well as a welfare state.

He stressed on taking into consideration the increased maritime boundary and blue economy while preparing the budget.

CPD distinguished fellow Dr Debapriya Bhattacharya voiced concern over the fall in local NGOs’ funds after the country’s achieving lower middle-income country status and LDC graduation.

He mentioned that local NGOs played an important role in achieving MDGs in the past and their role will also be important in achieving SDGs. He suggested creating SDG trust fund from where the NGOs can get fund.

The speakers suggested for raising the Advanced Deposit Ratio by the Bangladesh Bank, addressing the structural problem of the banking and the financial sector, addressing the ongoing problem of cost and time overrun in the major and small development projects, attracting more investment in materializing the targets of Vision 2021 and Vision 2041.

The economists and professionals also suggested for raising the FDI, ensuring very effective supervision for roads maintenance, further improving the quality of education, addressing income disparity, launching one-stop service for attracting FDI, and keep maintaining the discipline of the budget.

Former finance minister Dr M Sayeduzzaman, chairman of Industrial and Infrastructural Development Finance Company Limited (IIDFC) M Matiul Islam, former Finance Secretary Dr Mohammad Tareque, Prof Khandoker Bazlul Haque, former Secretary Siddiqur Rahman, Atiqul Islam of North South University, Ifty Islam of AT Capital attended the meeting.

State Minister for Finance and Planning MA Mannan and secretaries concerned were also present at the meeting.

 

Published in দৈনিক ইত্তেফাক on Tuesday, 13 March 2018

ব্যাংক লুটপাটকারীদের শাস্তি না দিলে সাফল্য ম্লান হবে

ইত্তেফাক রিপোর্ট

দেশের ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের মত গুরুত্বপূর্ণ আর্থিকখাতে সংস্কার করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। সেই সঙ্গে ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনারও পরামর্শ তাদের। এ খাতে অরাজকতা বিরাজ করছে উল্লেখ করে তারা বলেন, দায়ীদের শাস্তির আওতায় না আনা গেলে সরকারের অনেক সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এতে সভাপতিত্ব করেন। তারা বলেন, প্রতিবছর দেশের বাজেটের আকার বাড়ছে, ব্যয় বাড়ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)। কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে এখন বড় বাধা আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা। বেপরোয়া ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে মূলধন ঘাটতিতে ব্যাংকিং খাত, আবার ক্যাপিটাল মার্কেটেও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। আর্থিক খাতের সংস্কার ছাড়া দেশের উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিং খাতের অরাজকতা দীর্ঘদিনের। ব্যাংকে লুটপাটকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে সরকারের অনেক সাফল্য ম্লান হয়ে যাবে। যে কোন মূল্যে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, যত্রতত্র ঋণ দেওয়া, অব্যবস্থাপনাসহ যথাযথ নজরদারির অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা বিরাজ করছে। বেপরোয়া ঋণ দেওয়ায় ক্ষেত্রে অনেক ব্যাংকই সীমা অতিক্রম করে  ফেলেছে। যার ফলে মূলধন সংকট বাড়ছে। প্রতিবছর সংস্কার কার্যক্রমের নামে অকার্যকর কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। এটি মূলত দীর্ঘ সময়ের কাঠামোগত সমস্যার ফল। যা সমাধানে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

বড় প্রকল্পে ব্যয় বাড়ার ইস্যুটিও তুলে ধরে তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পগুলোতে দীর্ঘমেয়াদে ব্যয় বাড়ছে। তেমনি ভোগান্তিরও সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুযায়ী সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে মেগা প্রকল্প থেকে ফল আসবেনা। দেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এই খাতের সংস্কার না করলে কাঙ্খিত ফল আসবে না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মধ্যম সারির দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ায় যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। আগে যেভাবে বিদেশ থেকে সাহায্য আসতো, এখন আর সেভাবে আসবে না। আবার, বর্তমানে যেসব সাহায্য আসছে, তাও চলে যাচ্ছে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

আগামী ৭ জুন সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। এবারের বাজেটে পরিবহন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এসব খাতে বেশি বরাদ্দ থাকবে। তিনি বলেন, অনেকে অভিযোগ করেন, নির্বাচনের বছরে আর্থিকখাতসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যান। তাদের ক্ষেত্রে সরকার নমনীয় নীতি নেয়। বিষয়টা ঠিক নয়। কোনোভাবেই অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নের চিত্র আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের আগে কোনোভাবেই সংশি­ষ্টদের অর্থবরাদ্দ দেওয়া হয় না। এছাড়া বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কর্তৃক ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুর কারনে আমদানি-রপ্তানিসহ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের জটিলতার অবসান ঘটবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

Published in মানবকন্ঠ on Tuesday, 13 March 2018

উন্নয়নের সুফল পেতে আর্থিক খাতের সংস্কার অতি জরুরি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক 

প্রতি বছর দেশের বাজেটের আকার বাড়ছে, ব্যয় বাড়ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি-এডিপিতেও। কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে এখন বড় বাধা আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা। এর ফলে মূলধন ঘাটতিতে দেশের ব্যাংকিং খাত, আবার ক্যাপিটাল মার্কেটেও বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। আর্থিক খাতের সংস্কার ছাড়া দেশের উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না। গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বিশিষ্টজন, অর্থনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের নিয়ে প্রাক বাজেট আলোচনা সভার দ্বিতীয় দিনে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, প্রতি বছর বাজেটের আকার বাড়ছে। বাজেটের আকার বাড়লে জনসেবা বাড়ে। পাশাপাশি জনগণকে অধিক সেবা দেয়া যায়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, সাবেক অর্থসচিব মতিউল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাস উদ্দিনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা বড় বাজেট বাস্তবায়নের দক্ষতা দেখাচ্ছি, সেই অর্জন আমাদের আছে। আমাদের বরাদ্দ যেখানে বেশি সেখানে জনগণ সেবাও ভালো পাচ্ছেন। সরকারের টাকার অভাব নেই উল্লেখ করে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। আসছে ৭ জুন বাজেট উপস্থাপন করা হবে। আর ৩০ জুনের মধ্যেই বাজেট অধিবেশন শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। এবারের বাজেটে পরিবহন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এসব খাতে বেশি বরাদ্দ থাকবে।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, অনেকে অভিযোগ করেন, নির্বাচনের বছরে আর্থিক খাতসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যান, তাদের ক্ষেত্রে সরকার নমনীয় নীতি নেয়। বিষয়টা ঠিক এমন নয়। কোনোভাবেই অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, আমাদের এডিপি বাস্তবায়নের চিত্র আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদনের আগে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্টদের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় না। আবার, প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রেও আগে যাচাই বাছাই করা হয়। সম্প্রতি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওয়ান স্টপ সার্ভিস শুরু করেছে। এর মাধ্যমে আমদানি-রফতানি, নতুন ব্যবসা শুরুসহ ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যবসায়ীদের জটিলতার অবসান ঘটবে।

সভায় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ব্যাংক ডিফল্ট একটা রীতি হয়ে গেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয় না বলেই এমনটা ঘটছে। যত্রতত্র ঋণ দেয়া, অব্যবস্থাপনাসহ যথাযথ নজরদারির অভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতে দুরবস্থা বিরাজ করছে। বেপরোয়া ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক ব্যাংকই সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। যার ফলে মূলধন সংকট বাড়ছে। প্রতি বছর সংস্কার কার্যক্রমের নামে অকার্যকর কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। এটি মূলত দীর্ঘ সময়ের কাঠামোগত সমস্যার ফল। যা সমাধানে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, মেগা প্রকল্পগুলোতে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যয় বাড়ছে। সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারায় যেমন ব্যয় বাড়ছে, তেমনি ভোগান্তিরও সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়ন প্রস্তাবনা অনুযায়ী সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে না পারলে মেগা প্রকল্প থেকে ফল আসবে না। দেশের ক্যাপিটাল মার্কেটে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এই খাতের সংস্কার না করলে এই মার্কেট থেকে কাক্সিক্ষত ফল আসবে না।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, মধ্যম সারির দেশ হিসেবে উন্নীত হওয়ায় যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। আগে যেভাবে বিদেশ থেকে সাহায্য আসত, এখন আর সেভাবে আসছে না বা আসবে না। আবার, বর্তমানে যেসব সাহায্য আসছে, তাও চলে যাচ্ছে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে। বর্তমানে রোহিঙ্গা আমাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

মতিউল ইসলাম বলেন, দেশে ব্যাপক হারে উন্নয়ন চলছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনাতে ত্রুটি রয়ে যাচ্ছে। এতে ব্যয় বাড়লেও সুফল আসবে না। এম সাইদুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিং খাতের অরাজকতা দীর্ঘদিনের। সরকারের অনেক সফল কাজ ম্লান হয়ে যাবে, যদি ব্যাংকে লুটপাটকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না যায়। যে কোনো মূল্যে তা করতে হবে। ড. ফরাস উদ্দিন বলেন, ব্যাংকিং খাতের জটিলতা সমাধানে ব্যাংকগুলোকে মার্জ করার কথা বলা হয়। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো আইন নেই। আগে আইন প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির বড় সমস্যা বেকারত্ব। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এখনো দেশের ৩৮ শতাংশেরও বেশি লোকজন আন্ডার এমপ্লয়মেন্ট, যা সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

উল্লেখ্য, অন্যান্য বছরের মতো এবারো আগামী অর্থবছরের জন্য গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে প্রি-বাজেট আলোচনা সভা। প্রথম দিনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

Published in শেয়ার বিজ on Tuesday, 13 March 2018

ডিএসই সঠিক ভূমিকা পালন করছে না: অর্থমন্ত্রী

আর্থিক খাত নিয়ে দুশ্চিন্তা অর্থনীতিবিদদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্থিক খাতের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। এছাড়া পুঁজিবাজার ঠিকমতো কাজ করছে না বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল অর্থবিভাগ আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ উদ্যোগ প্রকাশ করেন তারা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ব্যাংক খাত দীর্ঘমেয়াদি কাঠামোগত দুর্বলতার সম্মুখীন। এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। এছাড়া পুঁজিবাজারও কার্যকর ভূমিকা রাখছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বারংবার সময় ও খরচ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা ঠিকমতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না, তাদের জরিমানা করা উচিত। একই সঙ্গে নির্বাচনের বছরে যাতে খেলাপি ঋণ মওকুফের সংস্কৃতি পরিহারের পরামর্শ দেন তিনি।

সাবেক অর্থ সচিব মতিউল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ঋণ-আমানত অনুপাত (এডি রেশিও) কিছুটা শক্ত করেছে। এতে ব্যাংকগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো হবে বলে মনে করি। এ সিদ্ধান্ত ছয় মাসের প্রতিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি পালন করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো আমানত সংগ্রহের চাপে পড়েছে। আমি মনে করি, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এক বছর সময় দেওয়া উচিত। আর আমানতের ঘাটতি কমাতে সরকারের বিভিন্ন তহবিল বেসরকারি ব্যাংকের রাখার অনুমতি দেওয়া উচিত।

সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান বলেন, উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতা বেড়েছে ঠিক। কিন্তু এসব কাজের গুণগত মান খুবই খারাপ। তিনি বলেন, ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশ উত্তরণের পর বড় ধরনের বিনিয়োগ লাগবে। সে বিষয়ে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় ব্যাংক অধিগ্রহণ ও একীভূতকরণের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ সম্পর্কিত কোনো আইন নেই। তাই একীভূতকরণ বাস্তবায়ন করতে হলে আগে আইন প্রণয়ন করতে হবে। বাণিজ্য সহজীকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে মূলত বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রণোদণামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা সেটার পরিবর্তে নিয়ন্ত্রণমূলক কাজই করে থাকে।

সাবেক অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক বলেন, বর্তমানে শুধু বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হয়। শুধু এডিপি নয়, পুরো বাজেটই পর্যবেক্ষণ করা উচিত। তিনি বলেন, বাজেট একটি নীতিগত দলিল। এতে সরকারের অগ্রাধিকারগুলো নির্দিষ্ট করে সেগুলো বাজেটে পরিপালনের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত শিক্ষা খাতকে। দাতা সংস্থাগুলোর অর্থে গবেষণা করা হলে তা দেশের জন্য খুব বেশি ফলপ্রসূ হয় না উল্লেখ করে তিনি দেশি অর্থে গবেষণা জোরদারের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে ‘রিয়েল সেক্টর ডাটা’ পাওয়া যায় না উল্লেখ করে পরিসংখ্যানের উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রতি বছর বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন জোগান দিতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু কতদিন ধরে এটা অব্যাহত থাকবে? এ ধরনের কার্যক্রম বছরের পর বছর চলতে পারে না।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর (এনজিও) অর্থায়ন সংকট দেখা দেবে। কিন্তু টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) বাস্তবায়নে এ সংস্থাগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। এমডিজি বাস্তবায়নে এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তাই শুধু বিদেশি অনুদানের ওপর নির্ভরশীল এনজিওগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। তাই সরকারের বিভিন্ন ভিশন ও আন্তর্জাতিক এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে সরকারের সিস্টেমের মধ্যে এনজিওগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। তিনি এসডিজি অর্জনে এনজিওগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে একটি এসডিজি ট্রাস্ট ফার্ড গঠনের প্রস্তাব দেন।

সবশেষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বক্তব্য রাখেন। পুঁজিবাজারের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ঠিকমতো ভূমিকা পালন করছে না। যে কারণে পুঁজিবাজার অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। বেসরকারি ব্যাংকে সরকারের বিভিন্ন তহবিলের আমানত রাখার প্রস্তাব ভালো প্রস্তাব বলে তিনি বলেন।

 

খেলাপি ঋণের বিষয়ে তিনি বলেন, খেলাপি সংস্কৃতি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই চলে আসছে। তবে নির্বাচনী বছরে কোনো খেলাপি ঋণ মওকুফ করা হবে না বলে তিনি জানান।