করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন প্যাকেজ বা প্রণোদনা বাস্তবায়নে ধীরগতি রয়েছে: মোস্তাফিজুর রহমান

Published in ভোরের কাগজ on Monday 24 August 2020

করোনাকালে দেশের অর্থনীতি

গতি ফিরছে, চ্যালেঞ্জ বাড়ছে

কুরবানি ঈদের আগে থেকে সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধ শিথিল ও গণপরিবহন চালু হওয়ায় দীর্ঘদিন স্থবির থাকা অর্থনীতির সব কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। ফলে ক্রমেই গতি ফিরছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে। একই সঙ্গে রপ্তানি আয় ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এসেছে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স, পুঁজিবাজারে ফিরেছে স্বস্তি। করোনা ভাইরাস অর্থনীতির নানা খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করলেও তুলনামূলক শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও কৃষি খাত। তবে এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে দেশের কর্মসংস্থান। প্রবাসীরাও ফিরতে পারেনি কর্মস্থলে। অর্থাৎ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হলেও এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে অর্থনীতি। সব মিলিয়ে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দেয়াকেই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর অন্যতম আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স শক্তিশালী হয়ে ওঠার মাধ্যমে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে করোনার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায়ও মন্থর হয়ে পড়েছে। ফলে গত মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় কমে প্রায় ৩৫ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র বিক্রিও কমে গেছে। ফলে ব্যাংকঋণমুখী হয়ে পড়েছে সরকার। এখন সরকারের উচিত যে কোনো উপায়ে রাজস্ব আয় বাড়ানো। এক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে বিশেষ নজর দিতে হবে। করোনার কারণে যে পরিমাণ রাজস্ব আয় সরকারের হওয়া উচিত তা যেন দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের পকেটে না গিয়ে সরকারের ঘরে যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সরকারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসবে এবং ব্যাংক নির্ভরতা কমে যাবে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার সুফল মিলবে পুরো অর্থনীতিতেই। গুরুত্বপূর্ণ এ ২টি খাত শক্তিশালী হলে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সাহায্য করবে। রেমিট্যান্স দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে। আর রপ্তানি আয় বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করবে। আমদানি বাড়তে থাকায় আশা করা হচ্ছে দেশে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুই-ই বাড়বে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর গবেষক ড. জায়েদ বখত এ প্রসঙ্গে বলেন, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার সুফল মিলবে পুরো অর্থনীতিতে। গুরুত্বপূর্ণ এ ২টি খাত শক্তিশালী হলে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে সাহায্য করবে। রেমিট্যান্স দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করবে। ছোট ছোট উদ্যোক্তা তৈরি করবে। আর রপ্তানি আয় বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করবে। এছাড়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে বিরূপ প্রভাব পড়ার কথা ছিল রপ্তানি বাড়ার কারণে সেটা হবে না।

দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এখনো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেতে না পারাটাই মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজনীন বলেন, করোনার আগে অর্থনীতি যে অবস্থায় ছিল, এখনো সেই জায়গায় যায়নি। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। রপ্তানিতে নতুনের পাশাপাশি পুরনো ক্রয়াদেশও ফিরে আসছে। রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাকের অবস্থা ভালো হচ্ছে। এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। তিনি বলেন, যেসব পণ্যের বেচাকেনা কম, সেসব ব্যবসায়ীরা কর্মহীন হয়ে পড়ছেন। অনেকে জীবিকা হারায়ে গ্রামে ফিরছেন। এখন যে হারে কর্মহীনতা দেখা যাচ্ছে, লকডাউন অবস্থাতেও দেশে এমন কর্মহীনতা দেখা যায়নি। ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীরা এখন কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন। সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাধারণ মানুষ করোনা মোকাবিলায় সচেতন ও সতর্ক থাকলে এবং সরকার স্বাস্থ্য খাতে সফলতা দেখাতে পারলে ‘বিপরীতমুখী’ এই ধারা অনেকটাই কমানো যেত বলে মন্তব্য এই অর্থনীতিবিদের।

গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক  মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অর্থনীতির চাকা কিছু কিছু ক্ষেত্রে সচল হচ্ছে। তবে মানুষ এখনো স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না। এজন্য স্বাস্থ্য খাত নিয়ন্ত্রণে এনে যদি সংক্রমণটা কিছু কমানো যায়, সংক্রমণ যদি স্থিতিশীলভাবে কমতে থাকে, তাহলে অর্থনীতি ‘রিকভারি ফেজ’অতিক্রম করে পূর্ণোদ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে আশাবাদ থাকলেও বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করেন এই গবেষক। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো বৈশ্বিক মন্দা কাটেনি, বিশেষত রপ্তানি খাতের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় বিভিন্ন প্যাকেজ বা প্রণোদনা বাস্তবায়নে ধীরগতি রয়েছে। সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে যদি ব্যক্তি খাতকে চাঙ্গা করা যায়, তাহলে হয়তো ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়াটি দ্রুততর হবে। সরকারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর এখন অনেক কিছু নির্ভর করছে। সব মিলিয়ে অর্থনীতি নিয়ে এখন সর্তক আশাবাদ রয়েছে।

করোনা পরবর্তী অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। দেশে মৃত্যুর সংখ্যা একদিন কমলে আরেকদিন বাড়ছে। সংক্রমণও সেই হারে কমছে না। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতি অদূর ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে কৃষি খাতে বেশ ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে এখন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে অদূর ভবিষ্যতে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা কম।

সংকটে আশার আলো রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সে : করোনার ভয়াবহ দুর্যোগের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছুটা আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে ইতিবাচক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাওয়া। সর্বশেষ গত বুধবার (১৯ আগস্ট’ ২০) দিনশেষে ৩৮ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এ রিজার্ভ দিয়ে দেশের ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। রিজার্ভ বেশি থাকায় তা দিয়ে সংকটের মধ্যে উন্নয়ন কাজে খরচের চিন্তা করছে সরকার। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থ ব্যবহারের কৌশল নির্ধারণে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিকে দেশের অর্থনীতির অন্যতম উদ্দীপক প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স করোনার কারণে মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে ভয়াবহভাবে কমে যায়। কিন্তু জুন ও জুলাই মাসে আগের সব রেকর্ড ভাঙে। জুনে একক মাসে সর্বোচ্চ ১৮৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই মাসে আসে ২৬০ কোটি ডলার। জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণ বাড়াতে হবে। মানুষের আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি সচল করা যাবে। তবে সবার আগে প্রয়োজন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো। স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো না গেলে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, বিদেশে শ্রম রপ্তানি বন্ধ। অনেককে ফেরত আসতে হচ্ছে। এতে রেমিট্যান্স কমে যাবে। রিজার্ভ বেশি আছে, এটা ইতিবাচক। তবে আমদানি বাড়লে রিজার্ভের চাপও বেড়ে যাবে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা হতে যাচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে। আগামীর অর্থনীতিকে রক্ষা করতে বৈশ্বিক মন্দা, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় কমে যাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। অভ্যন্তরীণ যে ইতিবাচক দিক রয়েছে সেগুলোকে এগিয়ে নিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে।

গতি ফিরেছে রপ্তানি আয়ে: করোনার কারণে সবচেয়ে ক্ষতির মধ্যে পড়ে দেশের রপ্তানি খাত। নতুন করে রপ্তানি আদেশ আসা দূরের কথা আগের আদেশ বাতিল হতে থাকে। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে রপ্তানিতে ব্যাপক ধস নামে। জুন মাস থেকে রপ্তানি বাড়তে শুরু করে। জুলাই মাসে রেকর্ড পরিমাণ রপ্তানি আয় আসে দেশে। ইপিবির তথ্য বলছে, জুলাইয়ে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেখানে আয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বড় অংশ (৮৫ শতাংশ) জোগায় তৈরি পোশাক। আর এই খাতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক সরাসরি যুক্ত রয়েছেন।

বাড়ছে আমদানি: করোনার মধ্যেও আমদানিতে ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জুন মাসে আমদানিতে প্রায় ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যদিও গত অর্থবছরে আমদানি কমেছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ।

পুঁজিবাজারে লেনদেনে উন্নতি : দীর্ঘদিন ধরে নিস্তেজ পুঁজিবাজারেও গতি ফিরেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) জুন মাসের চেয়ে জুলাইয়ে শেয়ার লেনদেন বেড়েছে। বেড়েছে নতুন বিনিয়োগও। জুন মাসে ৪ হাজার ৭৮০ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া জুলাই মাসে এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। আর মূলধন বেড়েছে ১৩ হাজার ৭৬৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সূচক বেড়েছে ২২৫ পয়েন্ট।

কৃষি ও সেবা খাত : করোনাকালে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে কৃষি। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ অবদান কৃষি ও সেবা খাতের। কর্মসংস্থানেও বড় ভূমিকা রাখছে খাতটি। আয় কমে যাওয়ায় শহরত্যাগী মানুষগুলোকেও ধারণ করেছে গ্রামীণ অর্থনীতি।

জিডিপি প্রবৃদ্ধি : শেষ পর্যন্ত সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ীই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে যখন অর্থনীতিতে ধস নেমেছে, তখনো বাংলাদেশে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।  বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। যদিও গত অর্থবছরে জন্য প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।

জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, করোনা মহামারির আঘাত কাটিয়ে উঠতে আমরা যে সময় লেগে যাবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম, তার অনেক আগেই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, এটা ভালো দিক। দেখা গেছে পাট এবং জনশক্তি রপ্তানি ছাড়া প্রায় সব কাঁচামাল আমরা আমদানি করে দেশে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে থাকি। অর্থাৎ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর ওপরে আমরা অনেকটাই নির্ভরশীল। এরপরও যে এত দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে, এটা বড় ধরনের স্বস্তির খবর। তবে এখনো তা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে এখনো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে বড় ধরনের একটি স্বস্তি আসবে। এছাড়া পলিসিগত পদ্ধতি যেমন মানিটারি পলিসি, ইনকাম ট্যাক্স কমানো, অ্যাডভান্স ট্যাক্স এক শতাংশ কমানো ইত্যাদি বিষয়গুলোতে আরো মনোযোগী হতে হবে। ফাহিম আরো বলেন, প্রণোদনার বেশির ভাগই ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের নিয়ে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো অনীহা প্রকাশ করছে। তবে আমি মনে করি, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের যে ৮৪ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি আছে, তা ব্যাংকিং চ্যানেলে চলে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারণ সিএসএমইর পরিধি অনেক বড়। তাই এ খাতে ঋণ দিলে ব্যাংকগুলোর যেমন ঋণ বিতরণ বাড়বে, তেমনি জাতীয় অর্থনীতিতে এবং এসডিজিতেও অবদান রাখতে পারবে। তিনি আরো বলেন, এ মুহূর্তে ব্যাংকের ঋণে ৯ শতাংশ সুদহার অনেক বেশি। আমরা যখন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের কথা বলি, তখন আন্তর্জাতিক বাজারের সুদহারও আমাদের যাচাই করে দেখা উচিত।