এবারের বাজেট কোভিড বছরের বাজেট হয়নি: ফাহমিদা খাতুন

Published in বণিকবার্তা on Wednesday 15 July 2020

অনলাইন বৈঠক

করোনা পরিস্থিতিতে নারীর কাজের চ্যালেঞ্জ ও জেন্ডার বাজেটিং

গত ২৩ জুন বণিক বার্তা ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘করোনা পরিস্থিতিতে নারীর কাজের চ্যালেঞ্জ ও জেন্ডার বাজেটিং’ শীর্ষক এক অনলাইন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ভার্চুয়াল প্লাটফরমে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সম্মানিত আলোচকদের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এ ক্রোড়পত্রে প্রকাশ হলো। আলোচনাটি ইউকেএইডের সহায়তায় অনুষ্ঠিত হয়।

 

ফাহমিদা খাতুন, নির্বাহী পরিচালক, সিপিডি

প্রথমত, এবারের বাজেট কোভিড বছরের বাজেট হয়নি। তারপর যদি বলা হয়, এটা কভিডের পরিপ্রেক্ষিতে নারী বাজেট হয়েছে কিনা, তাহলে বলব—না। কারণ নারীদের কাজ করতে যেতে যে ধরনের চিরাচরিত বৈষম্য যেমন মজুরিবৈষম্য, কাজের অনিশ্চয়তা, কর্মক্ষেত্রে নিপীড়নের বিপরীতে  সীমিত আকারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখছি। কয়েক বছর ধরে মন্ত্রণালয়গুলো জেন্ডার বাজেটিং দিচ্ছে, গত বছরের চেয়ে এবার বরাদ্দ ৯ শতাংশ বেড়েছে, কিন্তু মজুরিবৈষম্যের বিপরীতে কোনো ধরনের পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। চাকরির অনিশ্চয়তা, বিশেষ করে অনানুষ্ঠানিক খাতের কথা কি বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে? না। ঘরে নারীরা বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে বাজেটে বলা হয়েছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র থাকবে। এটা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে খুব ভালো। এছাড়া নারী ও শিশু নিপীড়নের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ফরেনসিক  ডিএনএ  প্রোফাইলিং  ল্যাবরেটরি ম্যানেজমেন্ট ডিরেক্টর নেয়া হবে, যাতে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়, তা দ্রুত বিচার করা যায়। উল্লিখিত দুটো পদক্ষেপ ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। যদিও  বরাদ্দ বেড়েছে। তবে বরাদ্দের গুণগত ব্যবহারের বিষয়টাও জরুরি। এছাড়া ৫০ লাখ পরিবারকে যে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার কথা বলা হয়েছে, তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। অনানুষ্ঠানিক খাতে অনেক নারী কাজ করেন, সে তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম। এ খাতে পাঁচ কোটির উপরে জনসংখ্যা কাজ করছে। তাদের জন্য এ সহযোগিতা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো বেশির ভাগই গ্রামকেন্দ্রিক। এ প্রণোদনা ও ত্রাণ কিন্তু গ্রামের পাশাপাশি শহরের মানুষগুলোর জন্যও দিতে হবে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির যে তালিকাটা তৈরি করা হচ্ছে, সেটাকেই রিভাইজ করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যাদের প্রয়োজন তারা নেই, বরং যাদের সাহায্যের কোনো প্রয়োজন নেই, তারা তালিকায় আছে। এটা সংশোধন করতে হলে সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থাকে নিয়েই তা করতে হবে। প্রণোদনা  প্যাকেজে ব্যাংক ক্লায়েন্টের সম্পর্কের ভিত্তিতে অর্থ প্রদানের কথা বলা হয়েছে। ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা এক্ষেত্রে কী করবেন, তাদের হয়তো ঋণ নেয়ার কোনো রেকর্ডই নেই। তাই প্রণোদনা প্যাকেজ যদি সুনির্দিষ্টভাবে নারীর জন্য না হয়, তাহলে তা নারীদের কাছে পৌঁছবে না বলেই আমার আশঙ্কা।