ডব্লিউটিও, এলডিসি ও মনোযোগবঞ্চিত প্রসঙ্গ – ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

এলডিসি থেকে উত্তরণ

Originally posted in সমকাল on 26 November 2021

আগামী ৩০ নভেম্বর জেনেভায় শুরু হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের ১২তম সম্মেলন। বাংলাদেশের জন্য এবারের সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা এলডিসি তালিকা থেকে যে সব দেশের উত্তরণ ঘটছে তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা অব্যাহত থাকবে কিনা তা এই উচ্চ পর্যায়ের সভায় আলোচনা হবে। গত ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশ, নেপাল ও লাওস- এই তিনটি দেশকে কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) সুপারিশ অনুযায়ী চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ায় ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের তাৎপর্য এলডিসিদের দৃষ্টিকোণ থেকে বেড়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের এলডিসি গ্রুপ ত্যাগে ২০২৬ সালের সময় রেখা চূড়ান্ত হয়ে গেছে, সেহেতু জাতীয় প্রস্তুতির দৃষ্টিকোণ থেকে ডব্লিউটিওর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের গুরুত্ব আরও বেড়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয়, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রুপ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের মনোযোগে কার্পণ্য আছে। যেমন, একটি শক্তিশালী মধ্য আয়ের দেশ হতে হলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মেধাস্বত্বকে কীভাবে আমরা উন্নয়নের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করব। বর্তমান নিবন্ধে সে সব বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত ডব্লিউটিওর চুক্তির ৬৬.১ ধারার অধীনে সমস্ত স্বল্পোন্নত দেশকে ট্রিপসের সামগ্রিক বাস্তবায়ন থেকে প্রথমে ১০ বছর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। পরে আরও দুই বার বাড়ানো হয় এবং গত ১ জুলাই ছিল সর্বশেষ মেয়াদ। গত ২৯ জুন আরও ১৩ বছরের জন্য অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে কীভাবে উপকৃত হচ্ছে তা অনেকের কাছে পরিস্কার হয়নি। যদি এ সিদ্ধান্ত না হতো তাহলে বাংলাদেশকে গত জুলাই থেকে মেধাস্বত্ব বাণিজ্য-সংক্রান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হতো। এর গুরুত্ব সরকার যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে বলে মনে হয় না। ট্রিপসের অধীনে আমাদের ওষুধের ক্ষেত্রে যে বিশেষ সুবিধা দেওয়া আছে সেখানেই সরকারের আগ্রহ বেশি দেখা যায়। ওষুধের ক্ষেত্রে এ সুযোগ ২০৩৩ পর্যন্ত আছে।

বাংলাদেশ ২০২৬ সালে এলডিসি তালিকা থেকে যদি বের হয়ে যায় তাহলে মেধাস্বত্ব-সংক্রান্ত চুক্তি এবং ওষুধের ক্ষেত্রে বিশেষ চুক্তি থেকে অব্যাহতি বাকি সময়ের জন্য পাওয়া যাবে না, যদি এ বিষয়ে কোনো নতুন চুক্তি না হয়। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে গেলে আরও ১২ বছর পর্যন্ত এ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব ডব্লিউটিওতে বিবেচনাধীন রয়েছে এবং আসন্ন মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ট্রিপসের অধীনে বাংলাদেশ দুই রকম সুবিধা পেয়ে থাকে। একটি হলো, মেধাস্বত্ব চুক্তির সামগ্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে অব্যাহতি এবং আরেকটা হলো, সুনির্দিষ্টভাবে ফার্মাসিউটিক্যালস বা ওষুধশিল্পের জন্য অব্যাহতি। অব্যাহতি না থাকলে আমাদের ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে হবে। এ শিল্পে বড় ধরনের প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে এবং বিশেষ করে যারা ছোট উৎপাদক তাদের ওপর চাপ সবচেয়ে বেশি হবে। এছাড়া ওষুধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে পেটেন্ট দিতে হতে পারে। ওষুধের দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ তৈরি হবে এবং এতে মানুষের ব্যয় বাড়বে।

বাংলাদেশসহ ‘গ্র্যাজুয়েটিং এলডিসি’গুলোর জন্য বাড়তি ১২ বছর সুবিধার প্রস্তাবে যেসব দেশ অস্বস্তিতে রয়েছে, তারা কিছু আপত্তি তুলছে। বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের অনেক উন্নতি হয়েছে বলে বাড়তি এ ধরনের সুযোগ দেওয়া দরকার আছে বলে তারা অনেকে মনে করে না। আরেকটি হলো আইনি প্রশ্ন। ট্রিপসের চুক্তিতে ‘গ্র্যাজুয়েটেড এলডিসি’ বলে কোনো ধারণা নেই। ডব্লিউটিওতে এলডিসি-সংক্রান্ত যত আলোচনা এখন স্থগিত হয়ে আছে, সবগুলোতে গ্র্যাজুয়েটেড এলডিসি নিয়ে এক ধরনের আইনি বিতর্ক চলছে। এ আলোচনার জন্য সদস্য দেশগুলোর আরও সময় লাগবে। ট্রিপস কাউন্সিলে এ আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। গত ২৬ ও ২৭ জুলাই ডব্লিউটিওর জেনারেল কাউন্সিলে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু সেখানেও কোনো সমঝোতা হয়নি।

আরেকটা বড় এজেন্ডা আছে, যা বাংলাদেশে খুব বেশি আলোচনার ভেতরে আসে না। কভিডকে কেন্দ্র করে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ডব্লিউটিওতে ‘কভিড ওয়েভার’ নামে আগামী ৩ বছর সমস্ত ধরনের মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত বাণিজ্য বিষয়ে ছাড় প্রস্তাব রেখেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন এবং এ সম্পর্কিত যেসব প্রযুক্তি আছে সেগুলোতে ছাড় দিতে হবে। গত ১৮ নভেম্বর ট্রিপস কাউন্সিলের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে ফলাফলের আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশে কভিড ওয়েভার নিয়ে খুব বেশি আলোচনা নেই। কারণ, অনেকে মনে করেন, ট্রিপস চুক্তি থেকে ওষুধশিল্পের অব্যাহতি রয়েছে বলে বাংলাদেশের, আর এ সুবিধার দরকার নেই। বাংলাদেশকে কভিড ওয়েভারের সুবিধা আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত ও বিবেচনায় নেওয়া উচিত। এর অধীনে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে কভিড ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে কিনা এবং এ সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় বিবেচনায় নিতে পারে। যেহেতু বাংলাদেশের অন্য দেশের তুলনায় ওষুধশিল্পে অনেক অগ্রগতি আছে, তাই সবচেয়ে বেশি সুবিধা আমরা পেতে পারি।

ডব্লিউটিওর তালিকায় যে ৩৫টি স্বল্পোন্নত দেশ আছে, তার ভেতর বাংলাদেশসহ ১০টি দেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তাদের জন্য বাড়তি ১২ বছরের প্রস্তাব বিভিন্ন আলোচনায় খুব জোরালো ভিত্তি পায়নি। অনেক দেশ বলছে, ২০২৬ এখনও অনেক দেরি আছে। তাদের চিন্তা হলো, এ সুবিধা দিলে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের প্রতি বৈষম্য করা হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ নিয়ে আপত্তি তুলছে অনেকেই। বাংলাদেশের সাফল্য আমরা এমনভাবে প্রচার করেছি যে, বিশ্বসমাজ জিজ্ঞেস করছে তাহলে আর আমাদের বিশেষ সুবিধার দরকার কি।

মনোযোগ কোথায় দরকার এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের নতুন ধরনের নীতি, প্রবিধানমালা, প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়া লাগবে। মান নির্ণয় কীভাবে করতে হবে এবং সেগুলোর সুরক্ষা কীভাবে হবে তা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। আমাদের সুবিধা চলে গেলে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে। শুল্ক্কমুক্ত সুবিধার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিএসপি প্লাসে থাকতে হলে আমাদের কীভাবে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান এবং রেগুলেশনস করতে হবে এবং কী ধরনের সুরক্ষা দিতে হবে- এসব বিষয়ে মনোযোগ অত্যন্ত জরুরি।

এলডিসি উত্তরণের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো মেধাস্বত্ব এবং এটি বাংলাদেশে কম মনোযোগ পেয়ে থাকে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে যত মেধাস্বত্ব বিশেষজ্ঞ আছেন, তাদের দক্ষতা, মেধা ও অভিজ্ঞতা আমরা এই মুহূর্তে কাজে লাগাচ্ছি কিনা সেটি এখন বড় প্রশ্ন। এই মুহূর্তে আমাদের ওষুধশিল্প নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। তবে সামগ্রিক মেধাস্বত্ব নিয়ে কার্যকরভাবে একটি গঠনমূলক আলোচনায় আমরা যাই না। অন্তর্বর্তীকালীন যে সময় আছে, তা আমাদের ব্যবহার করতে হবে। যাতে আমরা যখন এ জায়গা থেকে বের হবো, তখন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিতে পারি। এ বিষয়ে যেসব আলোচনা বাংলাদেশে হচ্ছে তার ভেতরে অনেক বেশি আলোচনা হয় যে, শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানিসহ আন্তর্জাতিক সুবিধা কতদিন আমরা ভোগ করতে পারি, যাকে ‘প্রেফারেন্স অ্যাডিকশন’ যা ‘বাজার সুবিধার আসক্তি’ বলা যায়। এ অবস্থা থেকে কীভাবে উৎপাদনশীলতা ও বহুমুখীকরণের আসক্তিতে আসতে পারি সেটিই সবচেয়ে বড় কথা। এবং এই ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব আইন আগামী দিনে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে নিয়ামক ভূমিকা পালন করবে।

মেধাস্বত্ব আইন বাস্তবায়ন পর্যায়ে আমাদের সব ধরনের পেটেন্ট, কপিরাইট ও শিল্পের ডিজাইনের সুরক্ষা দিতে হবে। সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন, ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে হবে। তার জন্য সময় আছে ৭ বছর। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো আলোচনা আমরা শুনি না।

মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে গুরুত্বসহকারে সামনে আনতে হবে। মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত প্রয়োজন কী হবে তার জন্য সর্বাঙ্গীণ একটি চাহিদা নিরূপণ করা জরুরি। আমাদের এলডিসি উত্তরণের কৌশলের একদম মধ্যখানে মেধাস্বত্ব বিষয়কে স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে জাতীয় উদ্ভাবনী মেধাস্বত্ব নীতি প্রণয়ন করেছে এবং তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে বিধিমালা ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে যেগুলোকে এই মুহূর্তে এলডিসি উত্তরণের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি।

বাংলাদেশ ভৌগোলিক নির্ণয়ক হিসেবে সম্প্রতি রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং পিসিটি ও মাদ্রিদ সিস্টেমে যোগ দিতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ তার কপিরাইট আইন হালনাগাদ করেছে এবং ডিজিটাল পরিস্থিতি ঠিক করছে। বাংলাদেশের আইপি ফোরাম তৈরি হয়েছে, যারা নতুন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। তারা পেটেন্ট করার পদ্ধতি খুঁজছেন। এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যক্তি খাতে বিশেষ করে নতুন স্টার্টআপ এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের বড় চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে আইপি গভর্ন্যান্স ব্যবস্থার বড় একটা অংশ বিভাজিত অবস্থার মধ্যে আছে। একদিকে আছে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়, আরেক দিকে আছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে যে সমস্ত নতুন উৎপাদন হচ্ছে, যেমন তথ্যপ্রযুক্তি-সংক্রান্ত, সেগুলোর কোনো জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মেধাস্বত্ব সম্পর্কিত উৎপাদন বর্তমানের বৈশ্বিক অর্থনীতির সবচেয়ে বড় বিষয়। জ্ঞান অর্থনীতি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় অর্থনীতিতে পরিণত হচ্ছে। জ্ঞান অর্থনীতি আগামী দিনে সেবা ও পণ্য উৎপাদন- দুই ক্ষেত্রেই বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে। টেকনোলজি, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও ব্র্যান্ডিং আগামী দিনে অনেক বেশি পণ্যের মান উন্নয়ন করবে ও দাম বাড়াবে। ৪০৯ বিলিয়ন ডলারের মেধাসম্পদ বাজারে আছে এবং এক হিসাবে বলা হচ্ছে, মেধাস্বত্বভিত্তিক যে সমস্ত শিল্প আছে তাদের আয় অন্য যে সমস্ত চিরায়ত শিল্প আছে তার চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি।

ডব্লিউটিওর বাইরে মেধাস্বত্ব বিষয়কে দেখতে হবে এবং বাংলাদেশ আগামী দিনে যত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছে তাতে অবধারিতভাবে মেধাস্বত্ব বিষয় থাকবে। বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছে। এসব চুক্তিতে মেধাস্বত্ব আইনের অবস্থান কী হবে তা গুরুত্বপূর্ণ।

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে শুধু বাজার সুবিধাকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে বের হয়ে আরও ভারসাম্যপূর্ণভাবে আমাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, নীতিমালা ও সুরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে মেধাস্বত্ব বিষয়কে গুরুত্বসহকারে স্থাপন করে তার কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশের আগামী দিনের সাফল্য অনেক ক্ষেত্রে জ্ঞান অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল।

লেখক :সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো এবং ইউএন-সিডিপির সদস্য