তদারকির ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে – ড. মোয়াজ্জেম

Originally posted in খবরের কাগজ on 29 January 2024

বাজারব্যবস্থায় এভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া এবং সেটির বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত কাঠামো না থাকলে দেখা যায় সিদ্ধান্তে সফল হওয়া যায় না। ইতিপূর্বে আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি, যেসব পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন এলপিজি আর তেলের ক্ষেত্রে কিছুটা দেখা গেছে। কাঁচা পণ্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যেসব পণ্য কম সময়ে বাজারে আসে এবং চাহিদা থাকে, সে ক্ষেত্রে নিয়মিত বাজার তদারকি এবং নির্ধারণ করা মূল্যে সেটি বিক্রি হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য কাঠামো দরকার। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশে মনিটরিং কাঠামোটি শক্তিশালী না। সে কারণে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে যে প্রত্যাশা করা হয়, সেটি পূরণ হয় না।

এ ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে খুচরা বাজার পর্যন্ত যত মার্কেট এজেন্ট থাকবে তাদের প্রত্যেকের নিবন্ধন দরকার। শুধু নরমাল ট্রেড লাইসেন্স থাকলে চলবে না। আলু বিক্রি করতে গেলে আলুর ট্রেড লাইসেন্স, পেঁয়াজ বিক্রি করতে হলে পেঁয়াজের ট্রেড লাইসেন্স, মরিচ বিক্রি করতে হলে মরিচের ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। লাইসেন্সধারীরা বাজারে যে ব্যবসায়িক লেনদন করবেন, তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে রিপোর্ট করবেন।

তাদের প্রত্যেকের আইডি থাকবে এবং আইডি দিয়ে তার কাছে কী পরিমাণ পণ্য মজুত আছে, সেটি শনাক্ত করা যাবে। এগুলো জাতীয় পর্যায় থেকে মনিটরিং করলে হবে না। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও মনিটরিং সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের যে অফিসগুলো রয়েছে তাদের সক্রিয়ভাবে এখানে কাজ করা দরকার। একই সঙ্গে নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কি না, বাজার কমিটিগুলোকেও তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তাদেরও একধরনের দায়িত্ব রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে আইনগত কোনো দুর্বলতা আছে কি না, সেগুলো দেখে প্রয়োজন হলে সংশোধন করা দরকার। বাজারে বড় ধরনের কোনো অযাচিত প্রভাব আছে কি না, সেটিও দেখা দরকার। বেশি বিক্রেতা যেন একটি বাজারে থাকেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এককভাবে কারও ওপর যেন নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে সেটি দেখতে হবে। আইনগতভাবে নীতিগুলো দেখা, যাতে বাজারে পর্যাপ্তসংখ্যক উৎপাদক থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিক্রির বা বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা দেওয়া দরকার। একজন ডিলার যেন একটি পণ্যের একমাত্র সরবরাহক হতে না পারেন, সেই বাধ্যবাধকতা তৈরিতে আইনগত সংশোধনের দরকার আছে।