শ্রমিকদের সঞ্চয়ের হার ৩ শতাংশেরও কম – ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

Published in আমাদের অর্থনীতি on Saturday, 21 April 2018

ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে ৯০ শতাংশ শ্রমিক

আনোয়ার হোসেন

দেশের পোশাক শ্রমিকদের ৯০ শতাংশই ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে রয়েছে। তাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় এনে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গতকাল গুলশানে ‘সারথি-আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে উন্নয়ন’ শীর্ষক ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সারথি প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত হয়। সে সময়ের মধ্যে ১ হাজার ১০০ তৈরি পোশাক কর্মীকে সুবিধা প্রদানের পর এখন প্রকল্পটি ৬০ হাজার কর্মীর কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে সুইসকন্টাক্ট। এরই মধ্যে তিনটি তৈরি পোশাক কারখানা তাদের কর্মীদের জন্য এ সুবিধা প্রদানে সম্মতি জানিয়েছে।

আলোচনায় ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমানে পোশাক খাত ৩৫ লাখ শ্রমিকের জীবিকার উৎস। সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, তাদের মাসিক গড় মজুরি ৭ হাজার টাকা। এ হিসাবে প্রতি মাসে শ্রমিকদের হাতে যাচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর ব্যাংকের মাধ্যমে করা যেতে পারে। শ্রমিকরা মাসের আয় থেকে খুব সামান্যই সঞ্চয় করেন, এমন তথ্য উল্লেখ করে ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সঞ্চয়ের হার ৩ শতাংশেরও কম। এটি উদ্বেগের বিষয়। যদি শ্রমিকদের মধ্যে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থা চালু করা যায়, তবে শ্রমিকের মাসিক মজুরির ৫৩ শতাংশ ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা যাবে। এর পরিমাণ হবে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে স্থানান্তরের লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ মুহূর্তে পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের মাত্র ১০ শতাংশের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। আর তাদের বেশির ভাগই পুরুষ। অর্থাৎ পোশাক খাতের মোট শ্রমিক সংখ্যার ৯০ শতাংশ ব্যাংকিং পদ্ধতির বাইরে। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। নারীসহ ৯০ শতাংশ শ্রমিককে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আনার মাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা অবশ্যই সম্ভব।

প্রকল্পের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, এটা অনস্বীকার্য যে, আমাদের মূল সমস্যা শুধু দারিদ্র্য নয়। আরো কারণ আছে। আমাদের লক্ষ্য, ইনক্লুশন ও এফারমেটিভ অ্যাকশনের মাধ্যমে সবাইকে সুন্দর জীবন উপহার দেয়া।