Dr Debapriya Bhattacharya and Dr Khondaker Golam Moazzem on FY16 budget financing and ADP implementation

Dr Debapriya Bhattacharya and Dr Khondaker Golam Moazzem on FY16 budget financing and ADP implementation, published in Alokito Bangladesh on Friday, 5 June 2015.

অর্থনীতিবিদদের প্রতিক্রিয়া

অর্থায়নই চ্যালেঞ্জ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এবারের বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়নই হবে সরকারের জন্য মূল চ্যালেঞ্জ। বাজেটের যে স্ফিতি, তার বাস্তবসম্মত পরিসংখ্যান ভিত্তি যৌক্তিক মনে করছেন না অনেকে। কেউ কেউ প্রস্তাবিত এ বাজেটকে গতানুগতিক বলেও মন্তব্য করেছেন। সব মিলিয়ে সরকার এ বাজেট কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাজেটে ব্যয়ের অর্থ জোগানের ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা নেই, দেবপ্রিয় : ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে যে ব্যয়ের আকার ধরা হয়েছে, তা পূরণ করতে অর্থের জোগান কোথা থেকে হবে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, সামগ্রিক আয় সংস্থান করতে গিয়ে বৃহৎ ব্যয়কে সঙ্কুলান করার জন্য বিভিন্ন ধরনের আয়ের উৎসে অবাস্তব ধরনের বৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটের যে স্ফিতি, তার বাস্তবসম্মত পরিসংখ্যান ভিত্তি যৌক্তিক মনে হচ্ছে না। কিছু কিছু জায়গায় ব্যাপক ধরনের স্ফীতি দেখানো হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কী ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্জিত হবে, এ সম্পর্কে বাজেটে কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই। বাজটকে উচ্চাভিলাষী, অবাস্তব, আকারে বড়- এমনটা বলছি না। দেবপ্রিয় বলেন, ব্যক্তি ও করপোরেট পর্যায়ে করের হার, সম্পদের ওপর সারচার্জ নির্ধারণ নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছি না। শিশুবাজেটও ইতিবাচক।

বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়নই চ্যালেঞ্জ -গোলাম মোয়াজ্জেম : সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ঘোষিত বাজেটে দেখতে পাচ্ছি প্রকল্প সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অননুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা আগের বাজেটের চেয়ে বেড়েছে। এ ধরনের প্রকল্প বেশিরভাগ সময়ই পর্যাপ্তভাবে মূল্যায়ন না করে সংশোধিত বাজেটের সময় বেশি করে নেয়া হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায়ই এটা করা হয়ে থাকে। এসব প্রকল্প কীভাবে কমিয়ে আনা যায় এবং মূল প্রকল্প কীভাবে বাস্তবায়ন করে শেষ করা যায়, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরের এ বিশাল বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থসংস্থানই হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক -হোসেন খালেদ : প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদ। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন কিছু নেই। তবে এতে বেশকিছু শিল্পের কাঁচামাল শুল্ক কমানো ও ব্যক্তি খাতের আয়করের সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার মতো কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৪১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু তা কোথা থেকে আসবে, সে বিষয়ে কোনো সুপারিশ নেই। এক্ষেত্রে ১০ লাখ ট্যাক্সপেয়ারের ওপরই হয়রানি ও চাপ বাড়বে।

মুঠোফোনে শুল্ক ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্তরায় -মাহবুব আলী : মুঠোফোনের সেবার ওপর শুল্ক আরোপের প্রস্তাবকে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য অন্তরায় বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ মাহবুব আলী। তিনি বলেন, মুঠোফোন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ১ মিনিট কথা বলে মানুষ ১ ঘণ্টার চেয়েও বেশি সময় সাশ্রয় করতে পারে। টাকা পাঠানো থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ হচ্ছে মুঠোফোনে। এ অবস্থায় সরকার মুঠোফোনের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলে তা বুমেরাং হবে। তিনি বলেন, এখনও ভারতের চেয়ে বাংলাদেশে মুঠোফোনের কলরেট অনেক বেশি। মুঠোফোন অপারেটরগুলোও ইচ্ছেমতো বিল আদায় করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মুঠোফোনের গ্রাহকদের ওপর শুল্ক আরোপ করা ভালো হবে না।