Dr Debapriya Bhattacharya on salient features of the FY2015 budget

Published in Amader Shomoy on Monday, 9 June 2014.

প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৪-১৫
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা নেই

আবু আলী

২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উচ্চাভিলাষী বলেছেন। বাজেট বক্তৃতায় মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন, চলতি অর্থবছরের শুরুতে হরতাল ও অবরোধ চলতে থাকায় পণ্য সরবরাহ বিঘিœত হয়েছে। এ কারণে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য-জ্বালানি মূল্যহ্রাস ও দেশীয় অর্থনীতিতে সন্তোষজনক কৃষি উৎপাদন হলে এবং সহায়ক মুদ্রানীতি চালু থাকলে আগামী অর্থবছর মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেননি বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে গেছেন। কৌশলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রাও স্পষ্ট করেননি। এভাবে বাজেট প্রস্তাব করায় বাজেটের মূল সূচক দুর্বলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে বলে মনে করেন তারা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, বাজেট দেওয়া সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাই দেওয়া হয়েছে। বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। শুধু আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তার মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশ বেশি নয়। কিন্তু ঘাটতি অর্থায়ন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা ঘাটতি অর্থায়নের একটি মাধ্যম হচ্ছে বৈদেশিক সাহায্য। টার্গেট ধরা হয়েছে ২৪ হাজার কোটি টাকার মতো। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৈদেশিক সাহায্যের অবমুক্তি ঘটেছে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৪ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের গত ৯ মাসে অবমুক্তি ঘটেছে ১০ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। এতে যদি গতি আরও কিছুটা বাড়ে বাকি ৩ মাসে, তাতেও আমার মনে হয় ১৭ হাজার কোটি টাকার বেশি অবমুক্ত করা সম্ভব হবে না। সেখান থেকে যদি ২৪ হাজার কোটি টাকার টার্গেট পূরণ করতে হয় তাহলেও ৪০ শতাংশ বেশি। এত বড় মাত্রায়, এটাও অবমুক্তি সম্ভব নয়। এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে সরকার বাধ্য হবে ব্যাংক থেকে ধার করতে। ইতোমধ্যেই যে টার্গেট রাখা হয়েছে সরকারের বাজেটের ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে, ৩১ হাজার ২২১ কোটি টাকা, এটা হলে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ মাত্রার ব্যাংক-বরোয়িং। কিন্তু এর একটা কুফল হল, এটি মূল্যস্ফীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, আগামী অর্থবছরে চারটি দিক প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলেছেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে আর্থিক সংহতি ফিরিয়ে আনা, প্রবৃদ্ধির ত্বরণ পুনরুজ্জীবিতকরণ, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে খরা কাটানো এবং মূল্যস্ফীতি কমানো।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাতে গুরুত্বারোপ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রা স্পষ্ট না করায় হতাশার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বাজেটে অর্থমন্ত্রী অনেক বিষয় অস্পষ্ট রেখেছেন। তিনি চালাকি করে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেননি।

অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা বলার কথা। কিন্তু তিনি তা স্পষ্ট করেননি।