Professor Mustafizur Rahman on Bangladesh’s RMG sector

Published in The New Nation and The Daily Inquilab on Saturday, 26 April 2014.

Bangladesh’s ‘messy’ clothing sector tidies up

Reazul Bashar and Ashik Hossain, bdnews24.com

After the Rana Plaza collapse, Bangladesh’s readymade garment industry faced unprecedented pressure from buyers abroad to improve working conditions in factories.

Buyers from the European Union formed the group Accord and those from North America formed Alliance to look into compliance issues in the country’s garment factories.

The government formed a review committee to analyse their reports on working conditions in the more than 3,500 factories in Bangladesh.

Accord is monitoring working conditions in 1,619 factories and the Alliance is monitoring that in another 700.

These factories produce 86 percent of the country’s readymade garments, which are exported to European and American markets.

Both Accord and Alliance have come up with reports after assessment of conditions in about 700 factories.

The review panel, on the basis of the reports, has shut down 13 factories in four buildings in Dhaka and Chittagong.

What impact the Rana Plaza collapse has had on Bangladesh’s readymade garments industry?

Hafiz Ahmed Mazumder, one of the industry’s early entrepreneurs, says that the garments industry was initially was unorganised, but the new generation entrepreneurs are now paying a lot of attention to compliance issues .

Mazumder says some are trying to come up with ‘international standard factories.’

At least 90 percent of factories are now located in good and safe buildings, he said.

On April 24 last year, the multi-storied building in Savar caved in, killing over 1,100 people, mostly workers of the five garment factories in that high-rise.

Some months before, a fire at Tazreen Fashions killed over 110 workers.

These disasters drew global attention to issues of workplace safety and labour rights in Bangladesh, the second largest clothing exporter in the world after China.

Western buyers faced flak back home for sourcing their products from ‘unsafe working environments’.

USA cancelled its GSP facilities under which it offered Bangladesh some trade privileges in June, saying the factories were unsafe.

Bangladesh Institute of Development Studies (BIDS) researcher Zaid Bakht, however, said the fears of losing business did not happen.

“We have achieved a 13 percent growth in RMG even after Rana Plaza.”

As the Savar tragedy made global headlines, the government, buyers, International Labour Organisation and workers came together in an unprecedented effort to jointly improve the conditions in the garments industry.

Many measures have already been implemented, some are underway, the minimum wages have been raised and legal and policy reforms carried through.

The US Trade Representative’s office says Bangladesh has made ‘considerable improvement’ in workplace safety and labour rights, but said ‘more needed to be done’.

CPD Executive Director Mustafizur Rahman is optimistic.

“So many initiatives have never been taken before for this sector. In light of the accident, an unprecedented amount of coordinated programmes have been taken,” he said.

BIDS Senior Researcher Naznin Ahmed agrees that the factory compliance issues have received a lot of importance.

“Previously we only talked of wage hikes, but since Rana Plaza, workplace safety issues have been given much consideration,” she told bdnews24.com.

Last December, minimum wage for RMG workers was raised by almost 76 percent to Tk 5,300 per month.

The government and owners have also softened up to the idea of allowing trade unions.

New laws have been introduced to ensure occupational health and safety at the factories.

The 2006 labour law has been amended. Forming trade unions has been made easier and monitoring has improved as well.

Manpower at the Office of the Chief Inspector of Factories and Establishment has been increased by several times.

Over 3,500 buildings that have RMG factories in them have been inspected by 23 new inspection teams.

Contracts have been signed with several international agencies to ensure safe work environment, allocation has been increased in fire-fighting.

Many initiatives have also been taken for workers’ welfare.

Buyers are reluctant to source products from factories that are housed in shared buildings considered unsafe and crowded.

The government intends to construct an industrial village in Munshiganj for the RMG industry to offer greater space and better working conditions.

BGMEA President Atiqul Islam believes most of the garments factories would survive the scrutiny of compliance.

“The way some people talk, you would think every factory in Bangladesh is in terrible condition. But the truth is quite different.

“Only 13 of the 700 factories have been found to have problems, which means the majority of factories are just fine,” he told bdnews24.com.

Owners want buyers to raise prices to maintain compliance.

Atiqul Islam said, “Our production costs have increased by 18 percent a year, but retail garment prices in Europe and USA have fallen by seven percent. So the buyers must raise prices.”

BIDS Research Director Bakht, however, higher prices can be achieved if exporters bargain hard.

“The problem is on our side. Buyers drive down the prices through competition.”

European buyers’ group Accord’s Executive Director Rob Ways told bdnews24.com that the Bangladeshi garments industry would rise to the top globally once compliance issues were fully addressed.

CPD’s Mustafizur Rahman sees hope in the buyers’ efforts.

“Both Alliance and Accord want to work with Bangladesh to improve the garments sector. We have to utilise this opportunity,” he said.

Naznin Ahmed, too, sees possibilities.

“In the free market economy, the biggest barriers to international trade are non-tariff barriers. Most of these barriers involve compliance issues. Sri Lanka is increasing their compliance to attract buyers,” she said.

Recently, Finance Minister AMA Muhith expressed hope that the country’s exports will grow to $70 billion in the next five years.

Hafiz Mazumder, the current Pubali Bank chairman, says the sector had been quite resilient.

“The Rana Plaza collapse was unanticipated and undoubtedly it was a stray incident. You cannot judge all factories by Rana Plaza.”

“Despite the tragedy, and the political unrest last year, the industry saw an astonishing growth.

“This growth will accelerate. In five to seven years, garment exports will double and reach $ 50 billion,” he said.


Published in The Daily Inquilab

চরম সংকটে পোশাক শিল্প

তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের

দেশের তৈরী পোশাক শিল্প এখন চরম সংকটের মুখে। সরকার আর বিজিএমইএ মিলে ডোবালো অর্থনীতির ত্রাতা এই তৈরি পোশাক খাতকে। বাংলাদেশকে জিএসপি না দিতে মার্কিন সরকারকে সুপারিশ করেছে শ্রমিক সংগঠন এএফএল-সিআইও। এই সংগঠনটির সুপারিশেই জিএসপি বাতিল করে ওবামা প্রশাসন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও বাংলাদেশের জিএসপি ফিরে পেতে নতুন দুটি শর্ত যুক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত কোন পোশাক পশ্চিমা ক্রেতারা কিনবে না। বিজিএমইএ এবং সরকারকে অবশ্যই এ সহজ বার্তাটি বুঝতে হবে। বিশ্লেষকদের ধারণা, পশ্চিমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক সমঝোতা না হওয়াতেই জিএসপি ইস্যুতে একের পর এক শর্ত যুক্ত হচ্ছে। রাজনৈতিক সমঝোতায় না গিয়ে যত শর্তই পূরণ করা হোক জিএসপি পাওয়া যাবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও সম্প্রতি একাধিকবার এ কথা স্বীকার করেছেন।

গবেষকদের হিসেবে, বর্তমান সংকটে গার্মেন্ট খাতে প্রত্যক্ষ ক্ষতি হয়েছে ১২১ কোটি ডলারের বেশি। বিজিএমইএ’র আংশিক জরিপে দেখা গেছে, ৫৭টি গার্মেন্ট কারখানা গত ছয় মাসে ১১ কোটি ডলারের কার্যাদেশ হারিয়েছে। গার্মেন্ট মালিকরা জানিয়েছেন, তারা পূর্বের চেয়ে ৬ শতাংশ কম দাম পাচ্ছেন যদিও শ্রমিকদের বেতনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বেড়েছে। মার্চে গার্মেন্ট রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত জানুয়ারীতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী নতুন মজুরী স্কেল ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত বছরের শেষ তিন মাসেই ৫০ হাজারের অধিক গার্মেন্টস শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। এ ছাড়া এ সময় ছোট-বড় কয়েক হাজার গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে।

সমালোচকরা বলছেন, ৫ জানুয়ারির ‘অগ্রহণযেগ্য’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ আর বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের বিতর্কিত ভূমিকার বলি হয়েছে তৈরি পোশাক খাত। ‘বিতর্কিত’ উপায়ে ক্ষমতা গ্রহণের কারণে সরকার দর-কষাকষির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যে কারণে হাতছাড়া হওয়ার পথে ইউরোপের জিএসপি সুবিধা। এদিকে ‘জনপ্রত্যাশা উপেক্ষা করে’ দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগতে ক্ষমতায় এনে এর পুরোপুরি বাণিজ্যিক সুবিধা নিচ্ছে ভারত। পশ্চিমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারও বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী করেছে বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ সরকারকে। রানা প্লাজা ধসের এক বছর উপলক্ষে গতকাল মার্কিন সিনেটের দেয়া এক বিবৃতিতে সরকার ও বিজিএইএর যথাযথ দায়িত্ব পালন না করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত করে জিএসপি পুনর্বহালে একের পর এক নতুন শর্ত দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিভিন্ন আইনের ঘোর প্যাঁচে ফেলা হয়েছে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা বা জিএসপি (পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার) ইস্যুটিকে। জিএসপি পুনর্বহাল অনেক পরের কথা, এ বিষয়ে শুনানিই এখন অনিশ্চিত। শুনানির জন্য নতুন দুটি ইস্যু যোগ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল জিএসপি কর্মসূচি নবায়ন সংক্রান্ত বিল এবং ১৯৭৪ সাল থেকে অকার্যকর ট্রেড প্রমোশন অথরিটি (টিপিএ) বিল কংগ্রেসের উভয় কক্ষে পাস না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত জিএসপি নিয়ে শুনানি করতে পারবে না দেশটির বাণিজ্য দপ্তর। আর ওই দুটি বিল কংগ্রেসের দুই কক্ষে (সিনেট ও হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) কবে পাস হবে, তাও অনিশ্চিত। এ কারণে বাংলাদেশের জিএসপি পুনর্বহাল বিষয়ে শুনানি কবে হবে, তার কোনো ঠিক নেই।

বাংলাদেশকে জিএসপি ফিরিয়ে না দেয়ার সুপারিশ করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী শ্রমিক সংগঠন আমেরিকান ফেডারেশন অব লেবার এন্ড কংগ্রেস অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্গানাইজেশন (এএফএল-সিআইও)। ২ এপ্রিল পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, সুশাসনের অভাবে শ্রমিকদের ওপর সহিংসতার পাশাপাশি বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে স্বাধীনভাবে ট্রেড ইউনিয়ন করার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আইনের শাসনের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের ধারাবাহিক অবহেলার কারণে পোশাক খাতে শ্রমিক নির্যাতন বাড়ছে বলে অভিযোগ করা হয় চিঠিতে। চিঠিতে ট্রেড ইউনিয়ন করার কারণে শ্রমিক নির্যাতনের দুটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। আড়াই পৃষ্ঠা দীর্ঘ চিঠির শেষ অংশে সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ট্রুমকা মার্কিন প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শ্রমিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারকে যেন আরও বেশি চাপ দেয়া হয়। এমনকি বাংলাদেশকে পুনরায় জিএসপি সুবিধা দেয়ার আগে যেন তার চিঠির বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় নেয় মার্কিন প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট চিঠিতি এমন সময় দেয়া হয়েছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। এ বিষয়ে ১৫ এপ্রিল একটি অগ্রগতি প্রতিবেদনও পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া বেশিরভাগ শর্তপূরণ হয়েছে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, এরপরও যদি জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল না করা হয়, তবে এর কারণ হবে শুধুই রাজনৈতিক।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম সংগঠনটি চিঠিতে এমন বার্তা দিয়েছে, যা বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্যের ঠিক উল্টো। মার্কিন বাণিজ্য দফতরকে এএফএল-সিআইও জানায়, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয় গত বছরের জুনে। জুলাইয়ে মার্কিন প্রশাসন থেকে একটি অ্যাকশন প্ল্যান দেয়া হয়। গত ৯ মাসে (জুলাই থেকে মার্চ) বাংলাদেশ সরকার কেবল ওই অ্যাকশন প্ল্যানের শর্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে তা-ই নয়, শ্রমিক অধিকার রক্ষায় দেখাতে পারেনি তেমন কোনো অগ্রগতি। চিঠিতে আরও বলা হয়, যদিও বাংলাদেশ সরকার দাবি করছে, পোশাক খাতে ট্রেড ইউনিয়ন সুবিধা বাড়ছে, কিন্তু খুব কম ক্ষেত্রেই শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে মালিক পক্ষের সঙ্গে দরকষাকষি করতে পারে। শ্রমিকদের অধিকাংশই এ ক্ষেত্রে সংশয়ে থাকেন। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কার্যক্রম শুরু করলেই শ্রমিক নেতা ও সংগঠকরা নিয়মিতভাবে কর্তৃপক্ষের হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হন। দাবি-দাওয়া ও আইনি সুরক্ষার বিষয়ে জবাব দিতে গেলে তাদের শিকার হতে হয় উপেক্ষার। শ্রমিক নির্যাতন-সংক্রান্ত সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনার উল্লেখও করা হয় চিঠিতে।

হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় ক্রমেই কমে যাচ্ছে। গত পাঁচ মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ থেকে নেমে ১৩ শতাংশে পৌঁছেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ শতাংশের কম। গত বছরের নভেম্বরে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়ও এই প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ২১ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে মার্চে গার্মেন্ট খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এটা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এদিকে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আদেশও দিন দিন কমছে। বিজিএমইএ’র হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১২ সালে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আদেশ ছিল ২৯ হাজার ৪১৬টি। প্রতিমাসে গড়ে ২৪শ ৫১টি। ২০১৩ সালে এই আদেশ ছিল ৩০ হাজার ১টি। মাসে গড়ে ২৫ শতটি করে। আর ২০১৩ সালের প্রথম ৭ মাসে গড় আদেশ ছিল ২৭শ ২১টি করে। কিন্তু শেষ ৫ মাসে এর গড় কমে এসে দাঁড়ায় ২১শ ৯০টিতে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বর্তমান সংকটপূর্ণ অবস্থা না থাকলে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হতো ২০ শতাংশের ওপরে।

তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ১ হাজার ৯শ ২৬ কোটি ডলারের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি হওয়ার কথা। তবে রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৮০৫ কোটি ডালার। এই হিসেবে ১২১ কোটি ডলার রপ্তানি আয় কম হয়েছে।

এদিকে বিজিএমইএ শেয়ারড বিল্ডিংয়ে অবস্থিত ৪১৯টি কারখানায় জরিপ চালিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৫৭টি কারখানার ১১ কোটি ডলারের কার্যাদেশ বাতিল করেছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। শেয়ারড বিল্ডিংয়ে অবস্থিত কারখানার সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এই হিসেবে এসব কারখানায় ৫০ কোটি ডলারের বেশি কার্যাদেশ বাতিল হয়েছে বলে ধারণা বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দের।

এদিকে কমপ্লায়ান্স ইস্যুর কারণে দর-কষাকষির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে গার্মেন্ট মালিকরা। তারা জানিয়েছেন, রানা প্লাজা ধসের পর থেকে ক্রেতারা ৬ শতাংশ কম দাম দিচ্ছে। গার্মেন্ট খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ভিয়েল্লাটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালাক ড্যাভিড হাসানাত বলেছেন, রানা প্লাজা ধসের পর থেকে কমপ্লায়েন্স প্রসঙ্গ তুলে ক্রেতারা ৬ শতাংশ দাম কমিয়ে দিয়েছে। অথচ, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়নের কারণে গার্মেন্ট কারখানার ব্যয় কয়েকগুণ বেড়েছে। এদের সঙ্গে দর-কষাকষিও করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। বলেন, দর-কষাকষি করলেই আফ্রিকার দেশগুলোতে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ক্রেতারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দায়ভার সরকারের পাশাপাশি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকেও বহন করতে হবে। কারণ এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেননি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দ শুধু মালিকদের স্বার্থ না দেখে বৃহত্তর স্বার্থে পুরো খাতটির স্বার্থ রক্ষা করতো তবে এই সংকটে পড়তো না পোশাক খাত। তারা ব্যবসার স্বার্থে পশ্চিমাদের সঙ্গে সরকারকে সংঘাতে যেতে বারন করেননি। সংকট উত্তরণে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে দুরত্ব কমিয়ে আনার কোন কার্যকর উদ্যোগ নেই। এজন্য বিজিএমইএ বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দ সরকারকে কোন চাপও দিচ্ছেন না। এভাবে পক্ষান্তরে প্রতিযোগী দেশগুলোকে- বিশেষ করে প্রধান প্রতিযোগী ভারতকে বাংলাদেশের বাজার দখলের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশন্সে অগ্নিকা-ে একশরও বেশি শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। এ দুর্ঘটনার রেশ না ফুরোতেই গত বছরের ২৪ এপ্রিল ইতিহাসের মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে সাভারে রানা প্লাজা ধসে। ভবনের নিচে চাপা পড়ে নিহত হন হাজারের বেশি শ্রমিক। আহত হন তিন সহস্রাধিক। পোশাক কারখানায় ঘটে যাওয়া এ দুটি মর্মান্তিক ঘটনা সারা বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমিক-নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। এর সঙ্গে যোগ হয় শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যার ঘটনা। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী শ্রমিক সংগঠন এএফএল-সিআইওর সুপারিশে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে মার্কিন প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধার মাধ্যমে ৫৬ মিলিয়ন ডলার আয় করে। যার মধ্যে পোশাক খাতে মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলার। আর্থিক বিবেচনায় বিষয়টি তৈরি পোশাক খাতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের ইমেজ সংকট হিসেবে দাঁড়িয়েছে এই জিএসপি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ২০ ভাগ যুক্তরাষ্ট্রে আর ৬০ ভাগ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ানের বাজারে রপ্তানি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি ইস্যুর প্রভাব বাংলাদেশের পুরো বাজারেই পড়েছে। এতে রপ্তানি ও রপ্তানি আদেশ ক্রমান্বয়ে কমে যাচ্ছে।