নারীর কাজের যথার্থ মূল্যায়ন হোক – ফাহমিদা খাতুন

Fahmida Khatun elaborates on how women’s unpaid labour is measured, in an interview published in Samakal on Wednesday, 29 October 2014.

সাক্ষাৎকার: নারীর কাজের যথার্থ মূল্যায়ন হোক

ড. ফাহমিদা খাতুন

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : একরামুল হক শামীম

সমকাল :সম্প্রতি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ‘জাতীয় অর্থনীতিতে নারীদের অবদান নিরূপণ :বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ শীর্ষক একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে। গবেষণা পরিচালক হিসেবে আপনি কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছেন। এই গবেষণার মূল ফোকাস কী ছিল?

ফাহমিদা খাতুন :নারীরা যেসব কাজ করে থাকেন ঘরে এবং ঘরের বাইরে, যে কাজগুলোর অর্থনৈতিক স্বীকৃতি নেই সেই কাজগুলোকে যদি আমরা অর্থনৈতিক মূল্যে পরিমাপ করি, তাহলে তার পরিমাণ কত তা বের করা ছিল গবেষণার উদ্দেশ্য। সেটি জিডিপির সঙ্গে তুলনা করে কত অংশ তা নিরূপণ করা। আমরা জরিপ করে বের করেছি, যে কোনো একটা সাধারণ দিনে নারী ও পুরুষরা কত ঘণ্টা কোন কাজে ব্যয় করেন। তারা যেসব কাজ করেন যার জন্য তারা বেতন পান না, সে ধরনের কাজের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের জন্য সুপারিশমালা তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু নারীরা ঘরের ভেতরেই বেশিরভাগ কাজ করে থাকেন, যেসব কাজের জন্য তারা স্বীকৃতি পান না, সেজন্য সমাজে ও পরিবারে তাদের মর্যাদা কম থাকে। অনেক সময় তারা সহিংসতার শিকার হন। সহিংসতা রোধে এবং নারীর সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নারীর কাজের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন ভূমিকা রাখতে পারে। আরেকটা দিক রয়েছে, আমরা প্রচলিত উপায়ে মোট দেশজ উৎপাদন কিংবা জিডিপি যেভাবে হিসাব করি, তা হলো যেসব পণ্য বা সেবা বাজারে বিক্রি করে তার বিনিময়ে অর্থ পাওয়া যায় সেগুলোই হিসাবের মধ্যে আসে। কিন্তু তার বাইরে অনেক ধরনের কাজ ও সেবা রয়েছে যার বিনিময়ে কোনো অর্থ পাওয়া যায় না, বাজারে সেগুলো লেনদেন হয় না। সেগুলো জিডিপির মধ্যে হিসাব করা হয় না। সেজন্য আমরা দেখতে পাই, জিডিপিতে নারীর অবদান অনেক কম।

সমকাল :গবেষণাটি কীভাবে পরিচালিত হয়েছে?

ফাহমিদা খাতুন :গবেষণা করতে গিয়ে সারা বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় একটি জরিপ করেছি। প্রাথমিক তথ্যভিত্তিক এ গবেষণায় ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের মোট ১৩,৪৬০ ব্যক্তির কাজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ৮,৩২০ এবং পুরুষ ৫,৩২০। জরিপের মোট হাউজহোল্ড (খানা) সংখ্যা ৫,৬৭০, যা ৬৪টি জেলার ৩৭৮টি নমুনা একক থেকে নির্বাচন করা হয়েছে। ২০১৪ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। একটি বিস্তারিত কাঠামোগত প্রশ্নমালার ভিত্তিতে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। জরিপে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করেই গবেষণাপত্র তৈরি করা হয়েছে।

সমকাল : গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের মূল্যায়নগুলো কী কী?

ফাহমিদা খাতুন :নারীর কাজগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। আমাদের প্রচলিত জিডিপি হিসাব প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা উচিত। জিডিপি হিসাবের যে পদ্ধতি যাকে বলে সিস্টেম অব ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টস (এসএনএ), তা জাতিসংঘ নির্ধারিত উপায়েই করা হয়। সেখানে পরিবর্তন আনতে হলে জাতীয়ভাবে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদেরই সেই সুপারিশটা করতে হবে, যাতে ইউএন এসএনএ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়। এর আগে নারীবাদী আন্দোলনকারীরা এসএনএ পদ্ধতিতে পরিবর্তনের দাবি করেছেন। এর প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, দৃষ্টির অগোচরে থাকা কাজগুলোর হিসাব অর্থনৈতিক মূল্যে করা অনেক জটিল। সেই লক্ষ্যে কাজ করতে গেলে আমাদের কয়েকটা ধাপে কাজ করতে হবে। প্রথম ধাপ যেটি জাতিসংঘও বলেছে তা হলো, ‘টাইম ইউজ ডায়েরি’ পদ্ধতি অর্থাৎ দিনে কে কতটুকু কাজ করছেন এবং কোন ধরনের কাজ করছেন। নিয়মিতভাবে এই ‘টাইম ইউজ’ জরিপ করা উচিত, যাতে দেখা যায় কে কীভাবে কাজ করছেন। তারপর সে কাজগুলোর অর্থনৈতিক মূল্যায়ন হয় না। তার অর্থনৈতিক মূল্যায়ন করে জিডিপি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত না করা গেলেও সমান্তরালভাবে এই হিসাবটা রাখা যেতে পারে। নিয়মিতভাবে জরিপ করে কাজের হিসাব রাখলে আমরা দেখাতে পারব নারীর কাজের অর্থনৈতিক মূল্য কতটুকু। আমরা আমাদের গবেষণা দুটি পদ্ধতিতে হিসাব করেছি। প্রতিস্থাপন পদ্ধতি অর্থাৎ নারীর এসব কাজ নিজেরা না করে অন্যকে দিয়ে করালে কত খরচ হতো। জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, এর পরিমাণ জিডিপির প্রায় ৭৬.৮ শতাংশ। অন্যদিকে গ্রহণযোগ্য মূল্য পদ্ধতি অর্থাৎ কাজগুলো কেউ করতে বললে তার পারিশ্রমিক কেমন নেওয়া হবে তার ভিত্তিতে যে হিসাব করা হয়েছে, সেখানেও দেখা যাবে কাজের প্রাক্কলিত বার্ষিক মূল্য জিডিপির প্রায় ৮৭.২ শতাংশের সমপরিমাণ। অর্থাৎ নারীর এই কাজগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করলে আমাদের জিডিপি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তবে এখানে গুলিয়ে ফেলার কোনো অবকাশ নেই যে, এর মাধ্যমে জিডিপির পরিমাণ বেড়ে যাবে। যদি এই কাজগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে সারা পৃথিবীতেই জিডিপির পরিমাণ বেড়ে যাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অর্থনীতিতে নারীর অবদান দৃষ্টিগোচর না হওয়ায় তাদেরকে অবমূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। এখানে মানসিকতার একটা পরিবর্তন প্রয়োজন।

সমকাল :বাস্তবতা হলো নারী ঘরের কাজ বেশি করেন, বাইরের কাজ কম করতে পারছেন। তাতে নারীর প্রতিভা ও মেধার বিকাশ ঠিকভাবে ঘটতে পারছে না। এর সমাধান কীভাবে সম্ভব?

ফাহমিদা খাতুন :আমাদের জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ নারী; কিন্তু জিডিপিতে তাদের অবদান ৩০ শতাংশের মতো। একদিকে নারীরা আনুষ্ঠানিক শ্রমবাজারে আসছেন না, অন্যদিকে যেসব কাজ করছেন তা নিম্নমজুরির। নারীদের আনুষ্ঠানিক শ্রমবাজারে বেশি করে আনতে হবে। সেজন্য তাদের শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শহরের মধ্যে অনেকের থাকার ব্যবস্থা নেই। সেজন্য তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যাতায়াত একটা বড় সমস্যা। সন্তানদের কোথায় রাখবেন তার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এছাড়া নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। নিরাপত্তাহীনতার কারণে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া-আসার কাজ মাকেই করতে হয়। সন্ধ্যার পর নারীরা অনেক ধরনের কাজ করতে পারছেন না। বিশেষ করে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে উদ্যোক্তাদের অনেক ধরনের সমস্যা হয়। অনেক সময় তাদের দোকান আগে থেকেই বন্ধ করতে হয়।

সমকাল : ঘরে-বাইরে নারীদের কাজ করতে না চাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ আপনার গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে পরিবারের সদস্যদের আপত্তি, পরিবারকে অধিক সময় দেওয়ার মানসিকতা ইত্যাদি। এর সমাধান কী?

ফাহমিদা খাতুন :এ ক্ষেত্রে মানসিকতার পরিবর্তন খুব জরুরি। এখানে শ্রমের একটা বিভাজন হয়ে গেছে। আমরা ধরেই নিয়েছি, কিছু কাজ কেবল নারীকেই করতে হবে। ঘরের কাজ পুরুষরা করবেন না, এই মানসিকতার পরিবর্তন আসতে হবে। আমরা উন্নত বিশ্বে দেখছি, ঘরের কাজগুলোও সমানভাবে পুরুষরা করছেন। সে কারণেই উন্নত বিশ্বের শ্রমবাজারে মেয়েদের অংশগ্রহণ বেশি। প্রত্যেকেই ঘরের কাজের কিছু অংশ করলে মেয়েদের কাজের বোঝা কিছুটা লাঘব হয়। যেসব নারী বাইরে কাজ করেন, তাদের ঘরে এসেও অনেক কাজ করতে হয়। সেজন্য তারা অবসর খুব কম পান।

সমকাল :মানসিকতার পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে পরিবার ও সমাজের ভূমিকা কী হতে পারে?

ফাহমিদা খাতুন :স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থায় জেন্ডার-সংবেদনশীলতার বিষয়টি যুক্ত করতে হবে। নারীর ভূমিকা, নারীর কাজকর্ম এগুলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়াতে হবে। পাঠ্যক্রমের মধ্যে, শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মিডিয়ার মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। যেসব সংগঠন নারীর অধিকার রক্ষায় কাজ করছে সবাইকেই মানসিকতা পরিবর্তন করার কাজে এগিয়ে আসতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন না হলে আপনি যতই সুযোগ-সুবিধা দেন না কেন, তার মাধ্যমে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। নারীরা যাতে বেশি করে আনুষ্ঠানিক খাতে আসতে পারেন তার সুযোগ করে দিতে হবে নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে। গত এক-দুই দশকে অনেক নারী বাইরে এসেছেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পে কাজ করছেন। সেসব পরিবারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন এসেছে।

সমকাল :আপনাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, নিজে উপার্জন করলেও মাত্র ৫১.৭ শতাংশ নারী নিজের ইচ্ছামতো খরচ করতে পারেন…

ফাহমিদা খাতুন :তার মানেই দেখা যাচ্ছে, এখনও মানসিকতার পরিবর্তন ঘটেনি। যারা কাজ করছেন তাদের হয় পরিবারের অনুমতি নিতে হয় অথবা পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে নিতে হয়। একেবারে নিজের ইচ্ছায় খরচের সুযোগ নেই। সেখানেও সামাজিক অগ্রগতির একটা চিত্র পাওয়া যায়।

সমকাল :নারীরা ঘরে ও ঘরের বাইরে কাজ করছেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নারী ও শিশুরাই তুলনামূলক বেশি অপুষ্টির শিকার হচ্ছেন। এমনটি কেন?

ফাহমিদা খাতুন :আমরা মনে করে থাকি, নারীর জন্মই হয়েছে আত্মত্যাগের জন্য। ত্যাগের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মেয়েরা নিজেরাই অনেক কিছু করে থাকেন। দেখা যায়, স্বেচ্ছায় পরিবারের সবাইকে খাওয়ানোর পর তিনি খাচ্ছেন। শুধু কম খাওয়া নয়, অনেক সময় চিকিৎসাসেবার দিক দিয়েও নারীরা পিছিয়ে আছেন। অর্থ ব্যয়ের ভয়ে অনেক নারী অসুস্থতার কথা পরিবারের সদস্যদের জানতে দিচ্ছেন না। এর ফলে সঠিকভাবে তাদের চিকিৎসাও হয় না। সেজন্যই নারীরা যত বেশি আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণগুলো ততই কমবে। সবকিছু তো আর আইনের মধ্যে লেখা থাকে না।

সমকাল :এত কাজ করার পরেও নারী নির্যাতিত হচ্ছে ঘরে ও ঘরের বাইরে। গবেষণায় দেখা গেছে, নারীর প্রতি সহিংসতার কারণে অর্থনীতিরও ক্ষতি হয়। এ সমস্যার সমাধান কীভাবে সম্ভব?

ফাহমিদা খাতুন :আমরা এর আগে নারীর প্রতি যে সহিংসতা হচ্ছে তার অর্থনৈতিক ক্ষতি নিরূপণে একটি গবেষণা করেছিলাম। তাতে দেখা গেছে, এই ক্ষতির পরিমাণ জিডিপির ২ শতাংশের বেশি। যখন নারীর প্রতি সহিংসতা হয়, তখন তিনি কাজে যেতে পারেন না, ছুটি নিতে হয়, সহিংসতা ভয়াবহ হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়, তার জন্য খরচ হয়, আরও বেশি ভয়াবহ হলে তারা সালিশ করেন। সালিশের জন্য অর্থ খরচ হয়। আদালতের আশ্রয় নিতে গেলেও টাকার প্রয়োজন হয়। নারীরা তাদের অধিকারের বিষয়ে আরও সচেতন হলে এবং আমাদের সমাজে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটলে সহিংসতা কমে আসবে। এর জন্য নারীর কাজগুলোর অর্থনৈতিক মূল্য নিরূপণের মাধ্যমে তাদের অবদানের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করতে হবে। তবে এরপরেও সহিংসতা হয়ে থাকে। সহিংসতার ব্যাপারে আইন রয়েছে, সেই আইনের বাস্তবায়ন করা উচিত। সেজন্য মানবাধিকার সংস্থা, নারী অধিকার সংস্থাগুলো আইনি প্রক্রিয়ার ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।

সমকাল : নীতিনির্ধারকদের প্রতি আপনাদের সুপারিশগুলো কী কী?

ফাহমিদা খাতুন :নারীদের কেবল ঘরের চার দেয়ালে না রেখে আনুষ্ঠানিক শ্রমবাজারে বেশি করে আনতে হবে। যাতে করে আয় বর্ধনমূলক কাজে জড়িত থেকে আয় করতে থাকে। অনেকে ঘরের দায়িত্বের কারণে বাইরে কাজ করতে পারেন না। সেজন্য আমরা বলছি, কিছু কিছু সাহায্য সরকার থেকে আসতে পারে। যেমন, বাচ্চাদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টার তৈরি করা কিংবা কর্মজীবী নারীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এ ধরনের কিছু সুযোগ-সুবিধা সরকার এবং ব্যক্তি খাত থেকে তৈরি করা গেলে বাইরের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ করা নারীদের জন্য সুবিধাজনক হবে। তাহলে প্রচলিত পদ্ধতির জিডিপিতে নারীর অবদানও বাড়বে। শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ করার জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো প্রয়োজন। অর্থাৎ এখানে দুই ধরনের কাজ সমান্তরালভাবে করতে হবে। একদিকে আয়মূলক কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য দক্ষতা, শিক্ষা, সরকার থেকে সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, আরেকটি তাদের অস্বীকৃত কাজের মূল্যায়ন করার জন্য নিয়মিতভাবে জরিপ করে অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। এই অর্থনৈতিক মূল্যকে জিডিপি হিসাবের মধ্যে সংযুক্ত করতে হলে জাতীয়ভাবে করতে হবে। কীভাবে করা যায় তা নির্ধারণে অর্থনীতিবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ, অ্যাডভোকেসি গ্রুপসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বয়ে সরকার একটি কমিটি গঠন করতে পারে। জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদানের হিসাব কম আসার একটি অন্যতম কারণ হলো, কর্মক্ষেত্রে নারীর মজুরি তুলনামূলকভাবে কম। এ বৈষম্য দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রণয়ন করা উচিত। এর মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক অবদান আরও যথাযথভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হবে।

সমকাল : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ফাহমিদা খাতুন :ধন্যবাদ।