Published in Bangladesh Pratidin on Saturday, 28 February 2015.
সহিংসতা কমে এলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, রাজনৈতিক সহিংসতা কমে এলেও মানুষের মাঝে অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। টানা এ হরতাল-অবরোধে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে কাক্সিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জনেও সমস্যা হতে পারে।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচির প্রথম দিকের তুলনায় বর্তমানে জীবনযাত্রার গতি কিছুটা বেড়েছে। তবে জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা না কাটলে বিনিয়োগ হবে না। ফলে ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতেও সময় লাগবে। বর্তমানে মানুষের মাঝে একটা কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। কিন্তু বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্ন করতে চাইলে অনিশ্চয়তা কাটাতে হবে। বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ক্ষতি পুষিয়ে দিতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী অর্থাৎ যারা শ্রমজীবী মানুষ, তাদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।
অন্যদিকে এও ভাবতে হবে যে, সহিংসতা কিন্তু থেমে যায়নি। আবারও হতে পারে। ফলে সরকারকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তবে আশা করা যায় খুব দ্রুতই সাধারণ মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যাবে। তিনি বলেন, সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সব সময় বিনিয়োগে বাধার সৃষ্টি করে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে আলাপ-আলোচনাও হতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নিশ্চয়তা আসতে হবে। কেননা সাংঘর্ষিক রজনৈতিক পরিস্থিতি এড়াতে না পারলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হবে না। এজন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি। পরিবহন, কৃষি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়- এ খাতগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এসব খাতে সরকারকে নজর দিতে হবে। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কৃষিজীবী মানুষকে কিছু কিছু প্রণোদনা দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। তাদের জীবনযাত্রায় ছন্দ ফিরিয়ে আনতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরও বলেন, সাধারণ মানুষই অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। ফলে তাদের কাজের নিশ্চয়তা দিতে হবে। আবার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে এসে বিরোধীদের ভিন্ন কর্মসূচি দিতে হবে। কেননা দেশের উন্নয়নের স্বার্থে একটা জায়গায় আমাদের একমত হতে হবে। অন্যথায় দেশে বিনিয়োগের অনিশ্চয়তা কাটানো যাবে না।