Published in সংবাদ on Monday, 2 January 2017
অর্থনীতি ছিল অনেক স্বস্তিতে
গৌতম ঘোষ
বিদায়ী বছরে (২০১৬) দারিদ্র্য মোচন, প্রবৃদ্ধি, রিজার্ভ আর মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানে অর্থনীতি ছিল অনেক স্বস্তিতে। এর মধ্যে প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কমেছে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার। ব্যালান্স অফ পেমেন্ট ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল, চলতি আয় ইতিবাচক। জানুয়ারিতেই আরেক দফা জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে। এতে করে শিল্পের উৎপাদন খরচ হ্রাস পাবে। বাড়বে বিনিয়োগ। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি ও এটিএম জালিয়াতির ঘটনা আর্থিক খাতের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তবে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর বেশিরভাগ ইতিবাচক অবস্থায় থাকায় সন্তুষ্টি নিয়েই বছর শেষ করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একই সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমও এ বছর বাংলাদেশে এসে অগ্রগতির প্রশংসা করে গেছেন।
অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, প্রতিটি সূচকে দেশের অর্থনীতি এখন স্থিতিশীল ও অগ্রসরমান। এই সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে, রেমিটেন্স প্রবাহ একটু কমলেও আবার তা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে, বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হলেও দাতারা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে নতুন করে অর্থায়ন করছেন। মেগা ১০ প্রকল্প বাস্তবায়নে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে উন্নয়ন ফোরামের বৈঠকেও প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে দাতাদের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। অর্থনীতির এতসব ভালো খবরের মধ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা চাপে আছে অর্থনীতি। বিনিয়োগ বোর্ডের ওয়ান স্টপ সার্ভিস এখনও বাস্তবায়ন হতে পারেনি। চাহিদা অনুযায়ী উদ্যোক্তারা কলকারখানায় গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন না। কারখানা গড়তে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত জমি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতে করে কর্মসংস্থানেও বাড়ছে নতুন চ্যালেঞ্জ। নতুন বছরে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনে ছয়টি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এগুলো হলো- দুর্বল অবকাঠামো, অর্থনৈতিক বহিমুখিতার অভাব, অর্থায়নের সীমিত সুযোগ, বন্দর সমস্যা, অদক্ষ শ্রমশক্তি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, জনসংখ্যার চাপ ইত্যাদি। তবে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখার জন্য বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্থনীতির সব সূচকে ইতিবাচক ধারা বজায় থাকায় ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রায় ৪ লাখ কোটির বাজেট দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, মোটা দাগে বলতে গেলে বছরটিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেকগুলো সূচক স্থিতিশীল ছিল। অর্থনীতির যেসব সূচক সরাসরি সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করে, সেসব সূচকের বেশ কয়েকটি স্বস্তিদায়কই ছিল বলা চলে। বছরজুড়ে মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় ছিল। ব্যাংকিং খাতে ঋণের সুদহার নিম্নমুখী ছিল। এটি বিনিয়োগের জন্য সহায়ক। যদিও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগে আমরা কাঙ্ক্ষিত গতি দেখতে পাইনি। এছাড়া শিল্প খাতের পরিবেশ, উৎপাদন পরিস্থিতি, মোট দেশজ উৎপাদন বা জাতীয় প্রবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোও ইতিবাচক ছিল এ বছরটিতে। প্রথমবারের মতো ৭ শতাংশের বেশি জাতীয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমাদের এ বছরটিতে। যদিও এ প্রবৃদ্ধি নিয়ে কারও কারও মনে কিছুটা সংশয় রয়েছে। তা সত্ত্বেও যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উল্লেখ করার মতোই। এছাড়া বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন, রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ, রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ, বিদেশি শ্রমশক্তি রপ্তানিও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আমরা এগিয়ে চলেছি। বিদায়ী বছরজুড়েই অর্থনীতিতে স্বস্তি ছিল। বিনিয়োগ, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়াতে বড় বড় অবকাঠামো বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার। মধ্য আয়ের দেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। রূপকল্প-২১ সামনে যেসব অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে তার সবটাই বর্তমান সরকার বাস্তবায়ন করতে চায়। বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম কমানো হবে। শীঘ্রই অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ৬ শতাংশের বৃত্তে আটকে থাকা জিডিপি প্রবৃদ্ধি এ বছর ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করেছে। বিদেশি মুদ্রার ভা-ার ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়েই আটকে রাখা গেছে। বাড়ছে বিদেশি ঋণ-সহায়তা; রাজস্ব আদায়ের গতিও ভালো। এ বছর জঙ্গিবাদের নতুন উত্থান চোখ রাঙালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সাফলে?্য’ অর্থনীতিকে খুব বেশি ভুগতে হয়নি। ব্রেঙ্টি এখন পর্যন্ত কোন বিপদ ঘটাতে পারেনি। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতাদেশ ও সংস্থা বাংলাদেশকে এখন অন্য দৃষ্টিতে দেখে। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট তো ঢাকায় এসে বলেই গেলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
অর্থনীতির চালচিত্র
রপ্তানি আয় : এ বছরের প্রথম ৯ মাসের মধ্যে সাত মাসই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সে জন্য প্রবাসী আয়ে মন্দাভাব থাকলেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় নিয়ে হাঁসফাঁস তৈরি হয়নি। চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ডলার। তখন প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। নতুন অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় এসেছে। প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। মাসওয়ারি হিসাব ধরলে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ৩ হাজার ১৮৪ কোটি ডলারে রপ্তানি আয় হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গড় প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশের কাছাকাছি। পণ্য রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক খাত থেকে আসছে। মূলত পোশাক রপ্তানি ভালো হলেই দেশের পুরো রপ্তানি খাত চাঙা থাকে। কিন্তু রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের সংখ্যা এবং পরিমাণ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে পাট, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, পশুর চামড়া, মৎস্য, চা, ওষুধ, টিনজাত পণ্য, সিমেন্ট, গরুর মাংস, দুধ, মুরগির মাংস, চাল, শাকসবজি ইত্যাদি রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সুযোগ রয়েছে। সবচেয়ে আশার কথা, বাংলাদেশের অপ্রচলিত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে।
রাজস্ব আদায় : ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫১৯ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। ওই অংক ছিল আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে এগোনোর পথে প্রথম চার মাসে ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান আশা করছেন, রাজস্ব আদায়ে এবার লক্ষ্য পূরণ হবে।
মূল্যস্ফীতিতে লাগাম : বেশ কিছুদিন ধরেই অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) সর্বশেষ নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর ১২ মাসের গড় হিসেবে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। অর্থবছর শেষে দেখা যায়, সেই হার ছিল ৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৮ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য রয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, কয়েক বছর ধরে বাম্পার ফলন ও বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের কম থাকায় মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা সহজ হয়েছে। আগামীতেও তা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করছেন।
৩২ বিলিয়নের উচ্চতায় রিজার্ভ : গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার ভা-ার গত ৪ নভেম্বর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে তিন হাজার ২০০ কোটি (৩২ বিলিয়ন) ডলার ছাড়ায়। যা দিয়ে ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। তবে ৭ নভেম্বর এশিয়ান কিলয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের তা কমে যায়। ডিসেম্বরের শেষে তা ফের ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গতবছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৭ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে এলে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কিলিয়ারিং ইউনিয়নের আমদানি বিল বকেয়া রাখতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেড়েছে ৩২ গুণ। রিজার্ভের এই অর্থ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার এখন অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এডিপি : বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) পালে হাওয়া লেগেছে ২০১৬ সালে। ২০১৬ সালে নভেম্বর পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হার দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশে। গত অর্থবছরের একই সময়ে তা ছিল ১৭ শতাংশ। এখনও ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে ছয়টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বাস্তবায়ন হার। চলতি অর্থবছরে মোট এডিপির আকার হচ্ছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করেছে মোট ২৩ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ১৭ হাজার ১১ কোটি টাকা।
প্রবৃদ্ধির নতুন ধাপে : এক দশক ৬ শতাংশের বৃত্তে ‘আটকে’ থাকার পর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ‘ঘর’ অতিক্রম করেছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। সরকারের প্রত্যাশা অনুযায়ী ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিতে হলে প্রবৃদ্ধির হার হতে হবে দুই অংকের বেশি। সেই লক্ষ্যে প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতে প্রবৃদ্ধি আর ৭ শতাংশের নিচে নামবে না।
মধ্যম আয়ের দেশ: মাথাপিছু বার্ষিক আয় এক হাজার ৪৬৫ ডলারে পেঁৗছে যাওয়ায় এ বছর জুলাই মাসে বিশ্বব?্যাংক তাদের তালিকায় বাংলাদেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে তুলে এনেছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বাংলাদেশে ‘অতিদরিদ্র’ মানুষের সংখ্যা এখন মোট জনগোষ্ঠীর ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে (পারচেজিং পাওয়ার পেরিটি) বাংলাদেশের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষের দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯ ডলারের (১১৫ টাকা) কম। এই হার ভারত, পাকিস্তান ও ভুটানের চেয়েও ভালো।
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চল: এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও দেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের পর্যায়ে উন্নীত করার প্রচেষ্টায় মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এখান থেকে রপ্তানি আয় করা যাবে অন্তত ৪ হাজার কোটি ডলার। ইতোমধ্যে সরকারি ও বেসরকারিভাবে অনুমোদিত মোট ৩৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে। এছাড়া অনুমোদনের অপেক্ষায় অন্তত আরও ৩১টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। পর্যায়ক্রমে আগামী ১৫ বছরে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সরকার।
মানবসম্পদ ও সামাজিক খাতে অগ্রগতি : দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদে রূপান্তর করতে সরকার সামাজিক উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আগামী ১০ বছরে ১৫ লাখ দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরি করতে চাচ্ছে সরকার। বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রধান তিন খাত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় ৮৬ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা মোট বাজেটের প্রায় ২৬ শতাংশ। শিক্ষায় ৪৯ হাজার ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।