Published in বাংলাদেশ প্রতিদিন on Sunday, 3 June 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের আর্থিক খাত নিয়ে উদ্বেগ আছে, তবে আতঙ্ক আছে বৈশ্বিক খাতে। কারণ বিভিন্ন রকমের বিলাসবহুল পণ্য আমদানির নামে বিদেশে পাচার হয়ে যায় কোটি কোটি টাকা। নির্বাচনের প্রাক্কালে টাকা পাচারের পরিমাণ আরও বেড়ে যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সিপিডির ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বাধীন পর্যালোচনা’ (আইআরবিডি) শীর্ষক আয়োজনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে রোগের চিকিৎসা করার চেয়ে উপসর্গের পেছনে দৌড়ানো বেশি হচ্ছে। উপসর্গ বলতে সব সময় তথাকথিত তারল্য সংকটের বিষয়ে বলা হচ্ছে। তারল্য সংকট আসলে কিছু নয়, সমস্যা হলো পুরো ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব। এটাকে বলা যায় লক্ষ্যভ্রষ্ট রাজনৈতিক অর্থনীতি। অর্থাৎ ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে যার স্বার্থ রক্ষা করা হবে তাকেই অত্যাচার করা হচ্ছে। যাদের দেখভাল করার কথা যেমন- মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক তারাই তো লক্ষ্যভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করছে। কিন্তু একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার লাখ লাখ আমানতকারীর কথা চিন্তা করতে হবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় কিছু ক্ষেত্রে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিগত সময়ের শোভন প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় থাকলেও আয় বৃদ্ধি, বৈষম্য বিলোপ এবং কর্মসংস্থান তৈরিতে তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের আয়-ব্যয়ের খাতে যতটা সমস্যা আছে তার চেয়ে বেশি সমস্যা আছে বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নির্ভরশীলতা যাচ্ছে না। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের জায়গা বৈশ্বিক খাত নিয়ে। এ জন্য আমদানির ক্ষেত্রে টাকা পাচার হচ্ছে কিনা তার তদারকিতে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। মিথ্যা ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের টাকা বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সিপিডি ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের ভর্তুকি বাজেটে পরিবর্তন আনতে হবে। ভর্তুকির পরিমাণ বাড়তে থাকলে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হবে উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের ওপরে। দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমদানি মূল্য এবং পাইকারি মূল্যের মধ্যে কয়েক কোটি টাকার পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাত এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আলাদা কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।