দৈনিক প্রথম আলো:
অধ্যাপক রেহমান সোবহান এ দেশের একজন প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৭ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এ ছাড়া তিনি পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়া ১৯৯১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। তিনি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৫।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু গ্রামীণ ব্যাংকসহ নানা বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন এই স্বনামধন্য ও বরেণ্য অর্থনীতিবিদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম ও জাহাঙ্গীর শাহ
প্রথম আলো গ্রামীণ ব্যাংক পুনর্গঠনের উদ্যোগ কতটা যৌক্তিক?
রেহমান সোবহান গ্রামীণ ব্যাংক পুনর্গঠনে কমিশন যেসব প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে আমি উদ্বিগ্ন। এই কমিশন গ্রামীণ ব্যাংক পুনর্গঠনের যে অনেকগুলো প্রস্তাব দিয়েছে, আমি তার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। প্রথমত, কমিশন সুপারিশ করেছে শিল্প ব্যাংকের আদলে গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা উচিত হবে। সরকারের হাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকবে। এই প্রস্তাবের সঙ্গে বর্তমান ও বিগত সরকারের নীতি বা প্রতিশ্রুতির মিল নেই। বিগত সব সরকারই রাষ্ট্রের মালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের শেয়ার কমাতে চেয়েছে। বর্তমান অর্থমন্ত্রীও কয়েক বছর আগে সব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, যদি এসব ব্যাংক তাদের সরকারি শেয়ার ছেড়ে না দেয়। তাই গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের শেয়ারের পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশটি সরকারের প্রচলিত নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া এই প্রস্তাব যুক্তিসংগত নয়, কারণ গ্রামীণ ব্যাংক ভালোভাবেই চলছে। যে প্রতিষ্ঠান ভালো চলছে, তার পুনর্গঠনের প্রচেষ্টার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
দ্বিতীয়ত, কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতার সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশেরও কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমাদের দেশের আইন প্রণয়নের পাশাপাশি জটিল সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশ চালান প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সাংসদেরা। কিন্তু তাঁদের কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার বাধ্যবাধকতা নেই। তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সদস্য হতে কেন শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে হবে? এমন বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই যে বিগত তিন দশক ধরে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ডের স্বল্পশিক্ষিত নারী সদস্যদের মধ্যে যোগ্যতার অভাব ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা দেখিয়ে তাঁদের কেন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে?
প্রথম আলো কমিশন বলছে, গ্রামীণ ব্যাংকের এত শেয়ারধারী কীভাবে বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) যোগ দেবেন?
রেহমান সোবহান আমার মনে হচ্ছে, কমিশন ঠিক জানে না যে সারা পৃথিবীতে এ ধরনের শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠান কীভাবে পরিচালনা করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনকি বাংলাদেশেও বহু করপোরেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যাদের বিশালসংখ্যক শেয়ারধারী রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তাদের সব শেয়ারধারীকে এক স্থানে সমাগত করা বা বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করার প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই নানাভাবে শেয়ারধারীদের মতামত যাচাই করার পথ উদ্ভাবন করা হয়। গ্রামীণ ব্যাংকেরও রয়েছে এ ধরনের প্রথা। আর গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ব্যাংকের সদস্যরা কখনো চ্যালেঞ্জ করেননি। যদি ব্যাংকের সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারধারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনের দাবি না করেন, তাহলে কমিশন কেন এ ধরনের সুপারিশ করবে? গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের সদস্যরা, যাঁদের বৃহৎ একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিজ্ঞতা প্রায় নেই বললেই চলে, তাঁরা কেন গ্রামীণ ব্যাংকের মতো ভালোভাবে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়।
প্রথম আলো গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার কথা বলা হচ্ছে। আপনি কি মনে করেন, এটা করা উচিত?
রেহমান সোবহান এই প্রশ্নের উত্তর আমি আগেই দিয়েছি। যেহেতু জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার বাধ্যবাধকতা সংগত কারণেই আমাদের দেশে নেই, তাই গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সদস্য হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের দরিদ্র নারীরা যে নিজেরা তাঁদের ব্যাংকের বোর্ড সদস্য হতে পারছেন, তা সারা পৃথিবীতে নারীর ক্ষমতায়নের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা বলে দরিদ্র নারীদের বোর্ডের সদস্য হওয়া থেকে বঞ্চিত করলে, এটা নারীদের ক্ষমতা হরণেরই একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াবে।
প্রথম আলো সরকারি ব্যাংকের ‘শিক্ষিত’ বোর্ড সদস্যরা কেমন চালাচ্ছেন?
রেহমান সোবহান সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে ‘শিক্ষিত’ বোর্ড সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষিত বোর্ড সদস্য থাকার পরও বছরের পর বছর এসব ব্যাংক লোকসানে থাকে। দেউলিয়াত্বের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুনর্মূলধনের ব্যবস্থা করা হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন যে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সরকারি মালিকানাধীন আটটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি প্রায় সাত হাজার ১৫০ কোটি টাকা। এতে এসব ব্যাংকের ঋণ পরিচালনা কার্যক্রমে প্রভাব পড়ছে। তাই এসব ব্যাংকের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সরকারের সহায়তা দরকার। শেষ পর্যন্ত আগামী অর্থবছরের বাজেটে জনগণের করের পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রথম আলো সরকারি ব্যাংকের এমন অনিয়ম তদন্তে কি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা উচিত বলে আপনি মনে করেন?
রেহমান সোবহান সাম্প্রতিক সময়ের বড় অনিয়মগুলো ঘটেছে দেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। সোনালী ব্যাংক তার অন্যতম। অর্থমন্ত্রী এ জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটিকে দেখতে হবে কেমন করে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা থেকে একজন গ্রাহক তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলে নিলেন? এই সময় বোর্ড সদস্যরা কী করেছিলেন, তাঁরা কি ঘুমিয়ে ছিলেন? সোনালী ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের শিক্ষাগত, পেশাগত, রাজনৈতিক ও নৈতিক যোগ্যতা তাঁদের দায়িত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, এই প্রশ্ন কেউ তোলেননি। তাহলে গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড সদস্যদের সম্বন্ধে এ ধরনের প্রশ্ন কেন? যদি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে হয়, শুধু সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর জন্য নয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, রেল খাত, সড়ক ও জনপথ, নির্মাণ খাতের সব নিয়ন্ত্রণ সংস্থার জন্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা উচিত।
যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান ভালোভাবে চলছে না এবং সরকারের কোষাগারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, এমন প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠনে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। গ্রামীণ ব্যাংকের মতো একটি প্রতিষ্ঠান, যা ভালোভাবেই চলছে, যাতে সরকারের মালিকানা সীমিত এবং যা সরকারের কোষাগারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেনি, তার জন্য অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কি কোনো প্রয়োজন রয়েছে?
প্রথম আলো আপনি তো ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় কি গ্রামীণ ব্যাংকে কোনো অনিয়ম দেখেছেন?
রেহমান সোবহান দায়িত্ব পালনকালে আমার নজরে কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি।
প্রথম আলো গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ ব্যবস্থাপনা কতটা সফল?
রেহমান সোবহান কিছু দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। ১৯৮৩ সালে মাত্র ৪২ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ঋণ বিতরণ করেছে গ্রামীণ ব্যাংক। আর ২০১৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ১০৪ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে বিতরণ করেছে। এই সময়ে গ্রামীণ ব্যাংকের খেলাপির হার (ডিফল্ট রেট) মাত্র ১ থেকে ৩ শতাংশ, যা যেকোনো সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ভালো। ঋণ দেওয়া অর্থ আদায়ের হার খুব ভালো থাকায় গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিনিয়ত তার ঋণ কার্যক্রম বাড়াতে পেরেছে। ১৯৮৩ সালে মাত্র ৫৮ হাজার ৩২০ জন ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। ২০১২ সালের শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪ লাখে। এই দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে খুব কমই আছে। রাষ্ট্র কিংবা দাতাদের তহবিল ছাড়াই গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থায়ন চলছে। আর এর ব্যবস্থাপনা বেশ ভালোভাবেই হচ্ছে।
প্রথম আলো দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংক কি যথাযথভাবে কাজ করতে পারছে?
রেহমান সোবহান দারিদ্র্য বিমোচনে গ্রামীণ ব্যাংক সহায়তা করছে। গ্রামীণ ব্যাংকের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচনের প্রাথমিক পর্বে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা করা। কেননা, আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং কার্যক্রম এসব দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছতে পারে না। এর মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র মানুষ, বিশেষ করে নারীরা তাঁদের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়। এরপরের পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের অন্যান্য উদ্যোগের প্রয়োজন হয়।
প্রথম আলো গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের পদক্ষেপে দেশের কি লাভ হচ্ছে?
রেহমান সোবহান লাভ তো হচ্ছেই না, বরং ক্ষতি হচ্ছে। কিছুদিন আগে ফোর্বস সাময়িকী বিশ্বের অন্যতম ধনী ওয়ারেন বাফেট ও ড. ইউনূসকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে। এ ছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এমন একজন ব্যক্তি, যিনি দেশের গৌরব। তাঁকে সম্মান করলে দেশের গৌরব বাড়ে।
প্রথম আলো সরকার অগ্রাধিকার নির্ধারণে কি ভুল করেছে?
রেহমান সোবহান যখন রাষ্ট্রায়ত্ত খাতগুলো বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের উত্তম ব্যবস্থাপনা সবারই মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। সরকার শুধু এই ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে সরিয়ে দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম নিয়ে অনুসন্ধান কমিশন গঠন করেছে। এই কমিশন গ্রামীণ ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ করেছে। অথচ এই পর্ষদে গ্রামের দরিদ্র নারীরাই বেশির ভাগ প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কমিশনের সুপারিশে তাঁদের পর্ষদে অংশীদারত্ব কমিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মানে হলো, এ দেশের নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সরকার জাতিসংঘে যে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার সঙ্গে এ অবস্থান সংগতিপূর্ণ নয়। এটা শুধু অন্যায় নয়, দুর্ভাগ্যজনকও।
সরকারের এই শেষ সময়ে যখন আর্থিক খাত ছাড়া আরও অনেক সমস্যা পুঞ্জীভূত আছে, সেগুলোর সমাধান সরকারের অগ্রাধিকার বিবেচনার দাবি রাখে। যেমন সাভারে ভবনধসের ঘটনা প্রমাণ করে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। এ ছাড়া অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্বল পরিচালনা শুধু রাষ্ট্রের কোষাগারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে না, রাজনৈতিক ভাবমূর্তিরও ক্ষতি করছে। সর্বশেষ চার সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের বিষয়টিও সরকারকে আমলে আনতে হবে। সরকারের শেষ সময়ে সুশাসনকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
প্রথম আলো গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আপনার পরামর্শ কী?
রেহমান সোবহান গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধান অনেক আগেই করা যেত। তা সম্ভবও ছিল। যখন তা হয়নি, এখন অন্তত গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যু নিয়ে সরকারের আর অগ্রসর হওয়া উচিত হবে না। গ্রামীণ ব্যাংককে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো চলতে দেওয়া উচিত। এতে দেশের মঙ্গল হবে।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
রেহমান সোবহান ধন্যবাদ।