Originally posted in The Business Standard on 1 June 2021
১১ মাসে রেমিট্যান্স ২২.৮৪ বিলিয়ন ডলার, রিজার্ভ আবারো ৪৫ বিলিয়ন ডলার
এর আগে গেল ৩ মে এক দিনের জন্য প্রথম বারের মত রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইল ফলক ছুঁয়েছিল। আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপ থাকায় পর দিনই রিজার্ভ আবার ৪৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়
করোনার অভিঘাতে অর্থনীতি যখন বিপর্যস্ত, তখন প্রতি মাসে বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসছে প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিটেন্স।
চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি ছাড়া বাকি মাসগুলোতে গড়ে ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিটেন্স আয় হয়েছে। মে মাসেও রেমিটেন্স আয় ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
উচ্চ রেমিট্যান্সের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণও বেড়ে চলেছে। রিজার্ভ আবারো ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। ৩১ মে দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫.০৫ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে গেল ৩ মে এক দিনের জন্য প্রথম বারের মত রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলারের মাইল ফলক ছুঁয়েছিল। আমদানি ব্যয় পরিশোধের চাপ থাকায় পর দিনই রিজার্ভ আবার ৪৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে যায়।
বর্তমানে যে পরিমাণ রিজার্ভ আছে তা দিয়ে বাংলাদেশ আট মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মিটানোর সক্ষমতা রাখে। সাধারণত কোন দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ রিজার্ভ থাকতে হয়।
রেমিট্যান্স সংক্রান্ত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, গেল মাসে রেমিটেন্স আয় হয়েছে ২.১৭ বিলিয়ন ডলার, যা গেল বছরের মে মাসের চেয়ে ৪৪ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে এই ১১ মাসে রেমিটেন্স আয় এসেছে ২২.৮৪ বিলিয়ন ডলার। যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। গেল অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) ১৬.৩৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আয় হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তা গেল অর্থবছরের পুরো ১২ মাসের চেয়ে ৪.৬ বিলিয়ন ডলার বেশি। গেল অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় এসেছিল ১৮.২১ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ শতাংশের কাছাকাছি।
রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবাহের বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ২ শতাংশ প্রণোদনা এবং করোনার ফলে অবৈধ পথে রেমিটেন্স আসা বন্ধ হওয়াই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মূল কারণ।
এছাড়া, রমজান ও ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মে মাসে এপ্রিলের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। আসছে ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে আগামী দুই মাস এই প্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে তার ধারণা। জুন শেষে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তার ধারণা।
তবে ঈদুল আযহার পর থেকে রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি কমে আসবে বলে, তিনি মনে করছেন। প্রবৃদ্ধি কমে আসলেও রেমিট্যান্সের গতি ধরে রাখতে, বিদেশে কর্মী প্রেরণ বাড়ানো, অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা এবং ২ শতাংশ প্রণোদনার জন্য বাজেটে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখার পরামর্শ তার।
বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়ায় ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী অবস্থানে যাওয়ার কথা থাকলেও বাজার থেকে অতিরিক্ত ডলার কিনে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অন্যদিকে, রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করেছে সরকার। সম্প্রতি শ্রীলংকাকে রিজার্ভ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ধার দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন করেছে।