চাল রপ্তানির সুযোগ করে দেওয়া উচিত: ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

Published in খোলা কাগজon Sunday 19 May 2019

চাল রপ্তানির সুযোগ করে দেওয়া উচিত

উৎপাদিত ধানের কম দাম পাওয়া এটা কৃষকদের জন্য অবশ্যই দুঃখজনক। বেশি খরচে উৎপাদন করে সেটা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাদের যৌক্তিক দাম পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। সেদিক থেকে ইমিডিয়েটলি আমার মনে হয়, কিছু বিষয় সরকার হিসাব করে দেখতে পারে। প্রাক্কলনটা দরকার আছে, এখনই। সেটা হলো, আগামী মাসগুলোতে দেশে চালের কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে; যদি আপদকালীন বা দুর্যোগকালীন কিছু চাহিদা তৈরি হয় সেটা কেমন, কী পরিমাণ স্টক রয়েছে এবং উৎপাদন কেমন হতে যাচ্ছে এসব প্রাক্কলনসাপেক্ষে কৃষি ব্যবস্থাপনা সাজানো দরকার। কৃষক নতুন চাল বাজারে বিক্রির চেষ্টা করছে। এ মুহূর্তে যতটা দ্রুত সম্ভব নির্দিষ্ট পরিমাণ একটা অংশ যদি সরকার রপ্তানির সুযোগ করে দেয় তাহলে কৃষকরা বাঁচবে। বাজারে হয়তো এখন মূল্যের ক্ষেত্রে যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে সেটা কিছুটা সক্রিয় হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত যদি আরও সময়ক্ষেপণ হয় তাহলে কৃষক পর্যায় থেকে চালগুলো মিল পর্যায়ে চলে যাবে। তখন কৃষকও যে কোনো দীর্ঘসূত্রতার সিদ্ধান্তের কারণে বঞ্চিত হবে।

এর আগেও আমরা দেখেছি, আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে একটা বড় প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। যে কোনো বিষয়ে একটা ত্বরিত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। সেটা করার ক্ষেত্রে খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের চালের যদি উদ্বৃত্ত থাকার সম্ভাবনা থাকে সেটা নিয়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল রপ্তানির সুযোগ করে দিলে বাজারে কৃষক পর্যায়ে মূল্যের ক্ষেত্রে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি।

এনে রাখতে হবে দেরি করলে কৃষকরা এ সুবিধাটা না পেয়ে হয়তো মিল মালিকরাই সুবিধাটা বেশি পাবে। আর দীর্ঘ মেয়াদে যেটা, সেটা হলো চালের উৎপাদন ব্যয় কীভাবে কমিয়ে আনা যায়। কেননা কৃষকের এবার বড় সমস্যা হয়ে গেছে, উৎপাদন ব্যয় অত্যধিক বেড়ে যাওয়া। সুতরাং চালের উৎপাদন ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে এখন যেমন শ্রমিকের ব্যয় অনেক বেশি; কামলা ব্যয় অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। এটাকে কমানোর ক্ষেত্রে যেহেতু শ্রমিকের সরবরাহ কমে যাচ্ছে; গ্রামে জমিতে কাজ করার শ্রমিক কম পাওয়া যাচ্ছে। দ্রুত মেকানাইজেশনের বিষয়ে- বিশেষ করে হার্ভেস্টিং, প্ল্যান্টিং বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজকে কীভাবে আরও দ্রুত মেকানাইজ করা যায় এবং তার মাধ্যমে উৎপাদন ব্যয় কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সে রকম একটি কৌশল নেওয়া দরকার। ভর্তুকি মূল্যে যাতে এসব মেশিনারি আসতে পারে, কৃষক সমিতি যাতে মেশিনারিগুলো কিনতে পারে এসব বিষয়গুলো দীর্ঘ মেয়াদে সরকারের চিন্তা করা উচিত।