পরিবেশ রক্ষায় এনভায়রনমেন্টাল অ্যাক্টিভিস্টদের ক্ষমতায় যাওয়া উচিত – ড. রওনক জাহান

Originally posted in জাগো নিউজ on 17 January 2025

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আবেদন পরিবেশকে বাদ দিয়ে উন্নয়নের যে মডেল সেটা বাদ দিতে হবে। দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিবেশগত দিক বিবেচনা করতে হবে। উন্নয়ন পরিকল্পনায় পরিবেশ আন্দোলনকারীদের যুক্ত করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও পরিবেশ আন্দোলনের মধ্যে কোনো দেয়াল নেই। পরিবেশ রক্ষায় এনভায়রনমেন্টাল অ্যাক্টিভিস্টদের ক্ষমতায় যাওয়া উচিত। নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) ২৫ বছর পূর্ত উপলক্ষে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) পরিবেশ আন্দোলনের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জবিষয়ক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। সম্মেলনের আয়োজন করে বাপা ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)। সম্মেলনে রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিকোণ থেকে বাপা এবং পরিবেশ রক্ষার সংগ্রাম-শিরোনামে বক্তব্য দেন রাজনৈতিক নেতারা।

এসময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, জাতীয় এবং বৈশ্বিকভাবে পরিবেশের অবস্থা খুবই খারাপ। আগামীর রাজনৈতিক নেতাদের পরিবেশবান্ধব হতে হবে। বাপা বাংলাদেশের পরিবেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। এ সংগঠনটি গত ২৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে, যেখানে সব শ্রেণিপেশার মানুষ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ সংগঠনটি অনেক বাধা পেরিয়ে আজ এ অবস্থানে। আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবেশের ইশতেহার উপেক্ষিত থাকে। রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনের পর জনগণের কাছে ফেরত যাওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। শুধু ক্ষমতার পালাবদল হলে হবে না, ক্ষমতার গুণগত পরিবর্তন করতে হবে।

রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আমরা রাজনৈতিক নেতা হলে বলতাম গৌরবের ২৫ বছর। কিন্তু বাপা এটাকে তাদের অর্জন ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে। দেশের পরিবেশে বিপর্যয়ে যখন ঘটছে, বাপা তখন সমাজের অংশীজনদের এনে যেভাবে পরিবেশের জন্য কাজ করছে, সেই অবদান অনস্বীকার্য। শুরুর দিকে বাপাকে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করতে হয়েছে। বাপা সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, জঙ্গল কেটে উন্নয়ন করতে হচ্ছে। সেইজন্য স্লোগান হওয়া উচিত, উন্নয়ন দর্শন পাল্টাও, মানুষ ও প্রকৃতির মর্যাদা দাও। এখন শুধু সংস্কার চলে। এ সংস্কার করতে হবে উন্নয়ন দর্শনের। তথাকথিত উন্নয়ন ও অগ্রগতির সঙ্গে পরিবেশগত প্রভাব কেউ চিন্তা করে না। আমাদের উন্নয়ন দর্শনের সংস্কারকে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছেড়ে দিতে হবে। এটাকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয়ভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে। তাহলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ সংস্কার গুরুত্ব পাবে। পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন সফল হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. রওনক জাহান বলেন, আমাদের ডেভেলপমেন্ট ন্যারেটিভ শুধু কালভার্ট, ব্রিজ, রাস্তাকেই বোঝে। আমাদের ভোটাররাও উন্নয়ন বলতে কনস্ট্রাকশন বোঝেন। উন্নয়ন হলে পরিবেশ সম্মত কি না সেটা বোঝার অবস্থা নেই। পরিবেশ রক্ষায় এনভায়রনমেন্টাল অ্যাক্টিভিস্টদের ক্ষমতায় যাওয়া উচিত। তারা যদি কাজ করতে চায়, তারা যেন পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সঙ্গে লবিং করে। তাহলে তারা ইলেকশন করলে পরিবেশের জন্য কমিটমেন্ট করতে পারবে। ইউরোপে গ্রিন পার্টি আছে। সিভিল সোসাইটি আছে। বিশ্বের অনেক দেশ পরিবেশের আন্দোলন দিয়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে।