সরকারি পর্যায়ে অতি আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিচ্ছি: মোস্তাফিজুর রহমান

প্রথম আলো গোলটেবিল

Originally posted in প্রথম আলো on 20 July 2025

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাল্টা শুল্ক নিয়ে সরকার ভেবেছিল, আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করে ফেলবে। এ নিয়ে সরকারের একধরনের কৃতিত্ব নেওয়ার মানসিকতা ছিল। দর-কষাকষির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ভেবেছিলেন, পাল্টা শুল্ককে ১০ শতাংশ বা শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনতে পারবেন। সরকারি পর্যায়ে এমন আত্মবিশ্বাস ও অতি আত্মবিশ্বাসের খেসারত দিচ্ছি।

আজ রোববার ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। দৈনিক প্রথম আলো রাজধানীর এক হোটেলে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে। সেখানে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, গবেষকেরা অংশ নিয়েছেন।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো শুল্ক আলোচনায় কোন অবস্থায় থাকছে, সেটি আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।’ তাঁর মতে, পাশাপাশি অশুল্ক বাধা ও ভূরাজনৈতিক কৌশলের নানা ইস্যু আছে। সেখানে আমাদের সার্বভৌমত্ব, অন্য দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক—এসব আমরা কতটুকু করতে পারব, কতটুকু পারব না, তা–ও বিবেচনায় আনতে হবে।

মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাংলাদেশ পোশাকের অনেক বড় সরবরাহকারী দেশ। এক দিনে এখান থেকে চলে যেতে পারবে না। ক্রেতারা একটা দর-কষাকষির মধ্যে আসতে চাইবেন। এখন দেশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বিদেশি বড় ক্রেতারা এ বাড়তি শুল্ক কতটুকু সইতে পারবে, তা–ও হিসাবের মধ্যে রাখতে হবে। তাঁরা বাড়তি শুল্ক কিছুটা সইবার ক্ষমতা অবশ্যই রাখেন। এখানে দর-কষাকষি করার জায়গা আছে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বড় বাজার। এটি যতটুকু সম্ভব ধরে রাখতে হবে। কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে ভারতসহ অনেক দেশ এই বাজারে আসতে চাইছে। তারা এখন সুযোগ কাজে লাগাতে চাইবে।

মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন করেছে। ভবিষ্যতে এ ব্যবস্থা কত দিন অব্যাহত থাকবে, সেটা দেখার বিষয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) ও ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট, এটা আমাদের একটু ভালোভাবে বোঝার ব্যাপার আছে। আমরা এত দিন শুধু ইউএসটিআরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে আলাপ করলাম। এখন শুনছি, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ পাল্টা শুল্ক আলোচনায় বড় অংশীদার। সেখানে আলোচনা করতে হবে, লবিস্ট নিয়োগ করতে হবে।’