Published in Banglanews24 on Wednesday 3 June 2020
২০২০-২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কত হলো এই মুহূর্তে সেটা চিন্তা না করে করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়িয়ে রোগীর সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা গেলেই আমরা আবার স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে যেতে পারবো। তাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে গতিময়তা ফিরে পাবে। এখন চিন্তা করা দরকার যারা দারিদ্র সীমার নিচে নেমে গেছে তাদের খাইয়ে পড়িয়ে বাঁচিয়ে রাখার।
মঙ্গলবার (২ জুন) এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) একটি মহামারি। যে কোনো মহামারি দূর হওয়ার জন্য দুই/তিন বছর সময় লাগে। তারপরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে তিন-চার-পাঁচ বছর লেগে যেতে পারে। সুতরাং জিডিপি কত হলো সেটা চিন্তা না করে, কী করে কত শিগগির স্বাস্থ্য ঝুঁকিটা এড়াতে পারি এবং কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনা এবং স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কমকাণ্ডে যখন ফিরে যেতে পারবো, তখন এমনিতেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি করতে পারবো।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, করোনা মহামারির কারণে সারা বিশ্বেই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। সেটা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ব্যবসা বাণিজ্য, আমদারি-রপ্তানি, বিনিয়োগ ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই আমরা এর নৈতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করছি। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়, বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা- বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রত্যেকেই বিভিন্ন ধরণের হিসাব করে দেখেছে যে, প্রত্যেকটি দেশই অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হবে। ফলে ২০২০ অর্থবছরে এবং সামনের অর্থবছরগুলোতেও তাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার অনেক কমে যাবে।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আইএমএফ হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার কমে ২ শতাংশ হবে। যেটা কিনা আমরা এর আগে প্রজেকশন করেছিলাম ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে আইএমএফ’র হিসাব মতে এই প্রবৃদ্ধির হার বাড়বে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়- এই সময়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে এতটা চিন্তা না করে বর্তমান মহামারি দুর্যোগ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে কী করে পরিত্রাণ পেতে পারি এবং কী করে যে সমস্ত মানুষর অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ও যারা (নিম্ন আয়ের জনগণ) দারিদ সীমার নিচে নেমে গেছে তাদের কীভাবে এই সংকটকালীন সময়ে বাঁচিয়ে রাখা যাবে সেটাই হওয়া উচিত এখনকার চিন্তা।