Originally posted in প্রথম আলো on 17 October 2025
বিনিয়োগ আনতে জ্বালানি নিরাপত্তা ও দুর্নীতি দমনে জোর দেওয়ার পরামর্শ

নতুন বিনিয়োগ আনতে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। তিনি বলেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুর্নীতি দমন ও দীর্ঘমেয়াদি নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি, যা কিনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও সুদৃঢ় করবে।
অ্যামচেমের আয়োজনে ‘অ্যামচেম ইনসাইটস: ইকোনমিক অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট আউটলুক’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ঢাকা শেরাটন হোটেলে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অ্যামচেমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তর পর্বের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেখানে লজিস্টিক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুটি পৃথক ইউনিটে বিভক্তকরণ এবং ব্যাংকিং খাতের সুশাসন জোরদারের মতো বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম চলছে। এসব উদ্যোগ একটি টেকসই ও বিনিয়োগবান্ধব অর্থনীতি গড়ে তোলার দৃঢ় অভিপ্রায়কে প্রতিফলিত করে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত: বর্তমান প্রবণতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ বিষয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিদায়ী অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যদিও প্রবাসী আয় ও রপ্তানি বৃদ্ধি কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে। স্থায়ী মূল্যস্ফীতি ও স্থবির মজুরি প্রবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আর্থিক ঝুঁকির দিকটি তুলে ধরে তিনি বলেন, অনাদায়ি ঋণের (এনপিএল) হার ২০ শতাংশের বেশি, যা এশিয়ার সর্বোচ্চ। বেসরকারি বিনিয়োগও গত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। আস্থা ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি খাতের প্রশাসন ও ব্যাংকিং খাতের তদারকিতে দ্রুত ও কার্যকর সংস্কারের আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের একত্রে কাজের জন্য স্থান নির্ধারণ, এনবিআরের সঙ্গে মাসিক সমন্বয় সভা, বিনিয়োগ সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা দল গঠনসহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বিডা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুলতানা ইয়াসমিন জানান, জাতীয় শিল্পনীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি ও এসএমই খাতের উন্নয়নে কাজ চলছে। ওয়ান-স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) ও অনলাইন অনুমোদন ব্যবস্থার মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশন, বৈদ্যুতিক গাড়ির নীতি ও লজিস্টিকস পলিসি হালনাগাদ করাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. বদরুজ্জামান মুনশি জানান, বাণিজ্য সহজীকরণের জন্য অগ্রিম কর হ্রাস, ফ্রি জোন নীতিমালা প্রণয়ন, ব্যাংক গ্যারান্টি সুবিধা, ডিজিটাল রেকর্ড সংরক্ষণ, আমদানি-রপ্তানি হাব ও বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো চালুর মাধ্যমে সীমান্ত বাণিজ্য আরও প্রতিযোগিতামূলক করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ডব্লিউটিও) মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যামচেমের কোষাধ্যক্ষ আল মামুন এম রাশেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য রাশেদ মুজিব নোমান প্রমুখ।



