রাজনীতিবিদদের কারণে পাল্টে যাচ্ছেন ইতিহাসের নায়করাও – রওনক জাহান

Originally posted in কালের কন্ঠ on 23 March 2025

রওনক জাহান

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বয়ান দিচ্ছেন দেশের রাজনীতিবিদরা। তাঁরা বয়ানটা দিচ্ছেন নিজেদের রাজনীতির স্বার্থসিদ্ধির জন্য। এতে করে একেক সরকারের আমলে একেকভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখা হচ্ছে। তাতে ইতিহাসের নায়করাও পাল্টে যাচ্ছেন।

গতকাল শনিবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও স্বাধীনতা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত স্মারক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ : রাজনীতি ও গবেষণার চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক বক্তব্যে অধ্যাপক রওনক জাহান বলেন, ইতিহাস বদলের ফলে আমাদের প্রজন্ম যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, তারা হয়তো বিভ্রান্ত হচ্ছি না; যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, যারা বই পড়ছে কিংবা স্কুলের ছাত্রছাত্রী, তারা যদি কয়েক বছর পর পর একেক রকমের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে, তাহলে তারা বুঝতেই পারবে না ঘটনাটা কী? এখানে কোনটি সত্য আর কোনটি মিথ্যা, সেটা প্রতিষ্ঠিত করাই বড় সমস্যা রয়ে যাচ্ছে।

রওনক জাহান বলেন, ‘বাংলাদেশে রাজনৈতিক তথ্য সংগ্রহে অনেক রকম ভয়। এ জন্যই রাজনৈতিক কোন্দল।

এটা যেমন নিজের গবেষণাকাজের সময় দেখেছি, আজও তাই দেখছি।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীন হয়েছি। কিন্তু এই যুদ্ধের কোনো কিছুই রক্ষা হচ্ছিল না। তখন সরকার নয়, আমাদেরই কয়েকজনের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর গড়ে উঠেছিল।

এটি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার, গর্বের বিষয়। এর পর থেকে জাদুঘরটি আজ বিশাল হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে রওনক জাহানের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে শোনান নাট্যজন ত্রপা মজুমদার। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যা কিছু অর্জন, এর সবটাই সম্ভব হয়েছে দেশের সাধারণ জনগণের সহযোগিতায়।

যে শিশুকে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিষে মারা হয়েছিল, তার কাছেও দায় আছে। জাদুঘরের দায় হচ্ছে, অতীতকে মানুষের হাতে তুলে দেওয়া। এই কাজটির মধ্য দিয়ে আমরা অতীতকে সক্রিয় করতে চাই।’

জাদুঘরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ট্রাস্টি ও সদস্যসচিব সারা যাকের। তিনি বলেন, চার বছর ধরে বার্ষিক ছয় কোটি টাকা করে অনুদান পাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। তবে পরিচালন ব্যয় অনেক বেশি। তাই তহবিল সংগ্রহে মনোযোগ দিতে হয়।