Originally posted in প্রথম আলো on 12 March 2025
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে শুধু নয়, দেশের নাগরিক সমাজের মহিরুহ ছিলেন। তিনি বটগাছের মতো আমাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর যাপিত জীবন থেকে বাংলাদেশের সৎ ব্যবসা তথা মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। এই দিনে তাঁর সহধর্মিণী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী নিলুফার মঞ্জুরের কথাও বিশেষভাবে মনে পড়ছে।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর অবস্থানের ওপর নাগরিক সমাজের প্রগাঢ় আস্থা ছিল। খুবই ব্যতিক্রমীভাবে তিনি দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) বাংলাদেশের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে গঠিত নাগরিক কমিটি ২০০৬, যা ‘রূপকল্প ২০৩০’ প্রণয়ন করে, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে আমরা যে দেশের অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণের কথা বলি, সেখানেও তিনি অনুকরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তৈরি পোশাকের বাইরে চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্য খাতের ব্যাপক বিকাশ ঘটিয়ে একটি রপ্তানিমুখী শিল্প সৃষ্টি করেছেন।
দেশের বিকাশমান উদ্যোক্তা শ্রেণি সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর কর্ম থেকে শিক্ষা নিতে পারে। তাদের কাছে তিনি বাতিঘর হয়ে থাকবেন।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীকে নিয়ে সিপিডি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গর্বিত। সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী আমৃত্যু সিপিডি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তাঁর চলে যাওয়াকে আমি মহাপ্রস্থান বলব। তাঁর মহাপ্রস্থান শুধু ওনার পরিবারের জন্য নয়; নাগরিক সমাজ তথা দেশের জন্য বড় শূন্যতা সৃষ্টি করবে। আমরা একজন নির্ভর করার মতো অভিভাবককে হারালাম।
জাতির উত্তরণের এই সময়ে আমরা ওনার পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হব।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সম্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)