Originally posted in প্রথম আলো on 8 November 2023
ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হলেও মজুরির পূর্ণাঙ্গ কাঠামো আমাদের দেখার সুযোগ হয়নি। সেটি যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করা জরুরি।
পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে শেষ পর্যন্ত মালিকপক্ষের প্রস্তাব চূড়ান্ত করার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের যেসব দাবিদাওয়া ছিল, তা যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হলো না।
শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা মজুরি প্রস্তাব করেছিলেন। মোট মজুরির মধ্যে মূল বেতন ৬১ শতাংশ করার পাশাপাশি সাতটির বদলে পাঁচটি গ্রেড প্রবর্তন, এক গ্রেড থেকে আরেক গ্রেডের মজুরির পার্থক্য ১০ শতাংশ, গ্র্যাচুইটি প্রবর্তন এবং রেশনব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব দিয়েছিলেন শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি।
তবে সামগ্রিকভাবে মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়নি। শ্রমিকদের ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার কথা বলা হলেও ২৮–৩০ লাখ শ্রমিকের জন্য এটি বাস্তবায়নে প্রক্রিয়াগত জটিলতা রয়েছে।
সিপিডির গবেষণা অনুযায়ী, এই মজুরিতে শ্রমিকদের প্রয়োজন মিটবে না। বিদেশি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মজুরি দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সে হিসেবে পোশাকশ্রমিকের মজুরি আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
আইন অনুযায়ী, নিম্নতম মজুরি বোর্ড প্রথমে খসড়া প্রস্তাব দেয়। তারপর সেই প্রস্তাবের ওপর ১৪ দিন লিখিত মতামত নেওয়া হয়। তারপর মজুরি বোর্ড প্রস্তাব চূড়ান্ত করে শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। তারপর সেটি আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়।
এই প্রক্রিয়া শেষ হলে মজুরিকাঠামো প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে শ্রম মন্ত্রণালয়। অতীতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখতে আমরা দেখেছি। এবারও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে মজুরি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নেওয়ার সুযোগ এখনো রয়েছে। সেটি হলে তা ইতিবাচক হবে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সিপিডি