Originally posted in প্রথম আলো on 15 May 2023
আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মধ্যে ভারতীয় রুপির অংশ খুব বেশি নেই। রুপি ব্যবহার করতে গেলে ২০০ কোটি ডলারের রপ্তানির সমপরিমাণ অর্থ ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্য হতে পারে। ফলে টাকা ও রুপিতে লেনদেন চালু হতে পারে সীমিত আকারে। তারপরও ব্যবস্থাটি চালু হলে অনেক প্রশ্ন এসে যায়। যেমন সিদ্ধান্তটির সঙ্গে বিনিময় হারসহ অনেক বিষয় জড়িত।
আমার বড় প্রশ্ন, এত রুপি আসবে কোথা থেকে? ভারতে তো বাংলাদেশের তেমন বিনিয়োগও নেই। টাকা দিয়ে ডলার কিনে আবার সেই ডলারকে রুপিতে রূপান্তর করলে তো কাজের কাজ তেমন কিছুই হবে না। ডলারকে রুপিতে পরিবর্তন করে তারপর রুপিতে আমদানি করলে তাতে কী লাভ হবে? তারপরও সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ একটা নেওয়া হয়েছে, দেখা যাক কী হয়।
আরেকটা বিষয়, বাংলাদেশি টাকা এখন না হয় একটু অবমূল্যায়িত, ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি না-ও থাকতে পারে। ভারতের অবশ্য রিজার্ভের সমস্যা নেই। ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর ক্ষমতা আছে দেশটির। আমাদের রিজার্ভের সমস্যা আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাওয়া অনুযায়ী, আগামী জুন এমনকি সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকৃত অর্থে যে রিজার্ভ থাকার কথা, তা থাকবে কি না, আইএমএফ নিজেই সন্দিহান। ভারতের মতো একটি বড় অর্থনীতির দেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে আমাদের।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিষয়টিকে কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন বা স্বাগত জানাচ্ছেন, তা-ও আমলে নেওয়ার দরকার। চূড়ান্ত বিচারে
তো বাণিজ্যটা তাঁরাই করবেন। রুপিতে বাণিজ্য করার জন্য ব্যবসায়ীরা যেন লোকসানের শিকার না হন, তা আগেভাবেই বিবেচনা করতে হবে। আর চুক্তি করার সময় খেয়াল রাখতে হবে অন্য দেশগুলো একই বিষয় ভারতের সঙ্গে কীভাবে করছে বা করেছে। সরকার যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা দেখতে পারি বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।