Originally posted in BBC Bangla on 30 January 2024
সহায়তা কীভাবে হতে পারে?
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডি’র সম্মানীয় ফেলো ও অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, চীনের কাছ থেকে যে সহায়তা আসুক না কেন সেটি হবে ঋণ আকারে।
বিবিসি বাংলাকে মি. ভট্টাচার্য বলেন, একটি হচ্ছে বাজেট সাপোর্ট দেয়া। সেক্ষেত্রে যে টাকা পাওয়া যাবে সেটি সরকার তার পছন্দমতো খরচ করতে পারে। আরেকটি হচ্ছে, আমদানির বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ঋণের মাধ্যমে সহায়তা দেয়া।
“সেটা সফট লোন হবে, হার্ড লোন হবে, নাকি মিডিয়াম লোন হবে – সেটা একটা বিষয়,” বলেন মি. ভট্টাচার্য।
বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানি করে চীন থেকে। আমদানি অব্যাহত রাখার জন্যও ঋণ দিতে পারে – সেটি আরেকটি পদ্ধতি।
বাংলাদেশ চীনের যেসব কোম্পানির কাছ থেকে আমদানি করে সেসব কোম্পানির বিল মিটিয়ে দিতে পারে চীনা সরকার। এটিও এক ধরণের ঋণ।
বাংলাদেশে বর্তমানে বহু অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীন থেকে যদি নানা ধরণের উপকরণ আমদানি করতে হয়, সেক্ষেত্রেও চীন বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। তাহলে প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।
ভারতের দেয়া ক্রেডিট লাইনের কথা উল্লেখ করে মি. ভট্টাচার্য বলেন, ভারতীয় কোম্পানির কাছ থেকে যেসব জিনিস আমদানি করা হচ্ছে, সেগুলোর বিল পরিশোধ করছে ভারত সরকার।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ তার সময় মতো ভিন্ন আরেকটি চুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় সেটি পরিশোধ করতে পারবে।
তবে, বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় চীনের কাছ থেকে ঋণ নেবার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা হতে পারে বলে উল্লেখ করেন মি. ভট্টাচার্য। কারণ, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে ঋণ নিয়েছে এবং সামনে ঋণের আরো কিস্তি আসবে।
এমন অবস্থায় চীনের কাছ থেকে ঋণ নিতে গেলে আইএমফ বিষয়টা মানবে কি না সেটাও একটা দেখার বিষয়, বলছিলেন মি. ভট্টাচার্য।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, বাংলাদেশে সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে চীনের ‘রাজনৈতিক পয়েন্ট’ যুক্ত হয়েছে। এখন আরো ঋণ প্রদানের ইচ্ছা পোষণের মাধ্যমে চীন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান আরো জোরালো করতে চায়।
“অর্থনীতির বিষয়টিকে যদি রাজনীতির সাথে যুক্ত করা যায় তাহলে ভূ-কৌশলগত অবস্থান শক্তিশালী হয়,” বলেন মি. ভট্টাচার্য।