Originally posted in সমকাল on 1 October 2022
বাংলাদেশের ৫০ বছরের অর্থনৈতিক ইতিহাসে সাম্প্রতিক দশকটি যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল, তা যে কোনো সমালোচককেও স্বীকার করতে হবে। এই দশক ভবিষ্যতেও গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়িত হবে। কারণ এ সময়ে বাংলাদেশ নিম্ন আয় থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উঠেছে এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। দু-একটি সূচকে দুর্বলতা ছাড়া এমডিজিতে আমরা বড় সাফল্য দেখিয়েছি এবং এসডিজি বাস্তবায়নের দিকে এগিয়েছি। আমাদের মাথাপিছু রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বেড়েছে। গড় আয়ু বেড়েছে অন্তত পাঁচ বছর। কৃষি উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। শিক্ষার হার ও মাথাপিছু গড় শিক্ষা বছর বেড়েছে। ভৌত অবকাঠামো খাতেও পদ্মা সেতুসহ বড় ধরনের পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। কভিড অতিমারি মোকাবিলা ও টিকাদান কর্মসূচির বাস্তবায়নও আমরা মোটামুটি সফলভাবে করতে পেরেছি। ফলে ২০১০ থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে অত্যন্ত সমৃদ্ধ দশক বলেই বিবেচনা করতে হবে।
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে পেশাদার অর্থনীতিবিদদের দুঃখের জায়গাটা কোথায়? একটা দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা থেকে এই অর্জনের অন্তত চারটি জায়গায় ‘বিচ্যুতি রেখা’ বা ‘ফল্ট লাইন’ আমি দেখেছি। এগুলো মোকাবিলা করা না হলে উন্নয়নের পরের ধাপে যেতে অসুবিধা হবে এবং আমাদের অর্জনগুলো টেকসই করা জটিলতর হবে।
ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে স্থবির অবস্থা গত ১০ থেকে ১২ বছরে যে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার মূল চালিকাশক্তি ছিল রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি। ব্যক্তি বিনিয়োগ জিডিপির ২৩ থেকে ২৪ শতাংশেই আটকে আছে। প্রবৃদ্ধি ৫-৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে সরকারি বিনিয়োগে ভর করে। যদিও সরকার দাবি করে দেশে বেসরকারি খাতনির্ভর উন্নয়ন হচ্ছে। তবে এ কথায় কিছুটা ঘাটতি আছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবে হয়নি। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এখনও জিডিপির এক শতাংশের নিচে। ব্যক্তি বিনিয়োগের এ চিত্র কোনোভাবেই একটি গতিশীল নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। বিনিয়োগের এই পরিমাণ আগামী দিনে প্রবৃদ্ধির ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যও যথেষ্ট নয়।
অর্থনীতিতে রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি বিনিয়োগের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে দুটি প্রধান মতামত আছে। একটি হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বেশি হলে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ কোণঠাসা হয়। কারণ, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের সুযোগগুলো রাষ্ট্রীয় খাত নিয়ে নেয়। দ্বিতীয়টি হলো সরকারি বিনিয়োগ বাড়লে ব্যক্তি বিনিয়োগ সম্পূরক হিসেবে বাড়ে। অর্থাৎ সরকার যদি বেশি বেশি রাস্তা-ঘাট, অবকাঠামো করে তাহলে ব্যক্তি খাত তার সুযোগ নেয় ও বিনিয়োগ বাড়ায়। আমি এই মতের পক্ষে। কিন্তু এটা বাংলাদেশে হয়নি। এখানে সরকারি বিনিয়োগ বাড়লেও ব্যক্তি বিনিয়োগ সেভাবে বাড়েনি। এটা বাংলাদেশের উন্নয়ন ধারার অন্যতম বিচ্যুতি রেখা। তাই আগামী দিনে ব্যক্তি বিনিয়োগ বাড়ানো খুব জরুরি।
আর্থিক খাতের দুর্বলতা ও কর আহরণে অপারগতা
বাংলাদেশে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু কর আহরণ জিডিপির ১০ শতাংশের নিচে। এর অর্থ কী? আমরা কি ধরে নেব আয় হয়নি? নাকি প্রশাসনিক বা অন্য দুর্বলতার কারণে আয় হলেও কর আদায় করা যায়নি? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে। কারণ আর্থিক খাতের দুর্বলতা অর্থনীতির সব খাতে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী আমদানি করতে পারছে না। সাধারণ মানুষকে পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা দিতে পারছে না। প্রয়োজন অনুযায়ী শুল্ক্ক কমাতে পারছে না।
কর আহরণ, বিশেষভাবে প্রত্যক্ষ কর আদায়ের দুর্বলতা সবচেয়ে বেশি সমস্যা করছে। দেশে প্রত্যক্ষ কর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আদায়ের মাত্র ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া আহরণের প্রক্রিয়াও বৈষম্যমূলক। অর্থাৎ যিনি বেশি আয় করছেন তিনি কম কর দিচ্ছেন। আর যিনি কম আয় করছেন তার কাছে ভ্যাটের মাধ্যমে বেশি কর নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ শুধু কর আদায় কম হচ্ছে তাই নয়, বরং সামর্থ্যহীনের কাছে বেশি কর আদায় হচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের দ্বিতীয় বিচ্যুতি রেখা এটি। এখানে এক ধরনের ভেল্ক্কিবাজি হচ্ছে। বড় বাজেট দিয়ে আয়-ব্যয় বড় করে দেখানো হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে আয়-ব্যয় ও ঘাটতি সবই কম। সক্ষমতার অভাবে বিদেশি ঋণ ব্যবহার করা যাচ্ছে না, নির্ভর করতে হচ্ছে অভ্যন্তরীণ উৎসের ওপর। আমি বাংলাদেশের বৈদেশিক দায়দেনা নিয়ে চিন্তিত নই, বরং আমি অভ্যন্তরীণ দায়দেনা নিয়ে চিন্তিত। বাংলাদেশের ৫৪ শতাংশ দায়দেনাই অভ্যন্তরীণ। এ দায়দেনা মেটাতে রাজস্বের ১৮ থেকে ২০ শতাংশ খরচ হয় এবং সরকার ব্যাংক থেকে বেশি টাকা নেওয়ার ফলে তারল্য সংকট হয়।
ভৌত অবকাঠামোর তুলনায় শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে অপ্রতুল ব্যয়
বালাদেশে গত দেড় দশকে ভৌত অবকাঠামো খাতে যে পরিমাণ ব্যয় হয়েছে, স্বাস্থ্য-শিক্ষায় তা হয়নি। এখানে সরকার বড় ধরনের আপস করেছে বা ছাড় দিয়েছে। বৃহৎ ২০টি মেগাপ্রকল্পে বছরে ব্যয় হয় জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ। একই পরিমাণ ব্যয় পুরো শিক্ষা খাতে করা হয়। স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের পরিমাণ জিডিপির এক শতাংশ। অর্থাৎ ২০টি মেগাপ্রকল্প যা পেয়েছে, শিক্ষা খাতও সেই পরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছে, আর স্বাস্থ্য খাত পেয়েছে তার অর্ধেক। কেন এটা হলো? পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায়, যখনই কোনো রাজনৈতিক শক্তি বৈধতার সংকটে পড়ে কিংবা আরও শক্তি অর্জন করতে চায় তখন তারা দৃশ্যমান ভৌত অবকাঠামো নির্মাণে জোর দেয়। শ্রীলঙ্কায় মাহিন্দ্রা রাজাপাকসে ও তুরস্কে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মতো নেতারা এটা করেছেন। ক্যামেরুনেও এটা হয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক ঘাটতি ভৌত অবকাঠামো দিয়ে মেটানোর চেষ্টা দেশে দেশে হয়েছে। কারণ মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ফলাফল আসতে দশকের বেশি সময় লাগে। ভৌত অবকাঠামো প্রকল্পে ফলাফল দৃশ্যমান হয় দ্রুত। বাংলাদেশের আন্তঃখাতে এ ধরনের বৈষম্য হয়েছে গত দশক ধরে। এটি আমাদের অর্থনীতির তৃতীয় বিচ্যুতি রেখা।
সামাজিক সুরক্ষার অপর্যাপ্ত বরাদ্দ ও অদক্ষ বাস্তবায়ন
সরকারের রাজনৈতিক দর্শন ও প্রধানমন্ত্রীর নিজ আগ্রহের কারণে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কর্মসূচিতে বরাদ্দ খুবই কম। মাথাপিছু সাধারণ ভাতা বর্তমান বাজার অনুযায়ী অত্যন্ত অপ্রতুল। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো এ খাতেও বৈষম্য হয়েছে। আবার যে বরাদ্দ হচ্ছে, তার বিতরণও সুষম নয়। সাধারণ মানুষ অনেক ক্ষেত্রে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিষয়ে জানেন না। আবার জানলেও অনেকেই নথিবদ্ধ হতে পারেন না। এমনকি যারা নথিবদ্ধ হন, তাঁরা উপযুক্ত পরিমাণ সহযোগিতা পান না। কভিড সময়ের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সরকারের নগদ অর্থ প্রদান ও স্বল্প মূল্যে টিসিবি পণ্য বিতরণসহ অন্যান্য উদ্যোগের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা দেখা গেছে। অর্থাৎ এ খাতে সরকারের আগ্রহ থাকার পরও বাস্তবায়নে বড় ধরনের দুর্বলতা রয়েছে।
এসব বিচ্যুতির উৎপত্তি কীভাবে?
২০০১-০৫ সালে তৎকালীন সরকারের বড় সমস্যা ছিল প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যক্তি খাতের অর্থনীতি গড়ে উঠতে না দেওয়া। অর্থাৎ নির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ফলে মেধাভিত্তিক ও প্রতিযোগিতাসক্ষম ব্যক্তি খাত সুযোগ পায়নি। এতে উন্নতির ধারা স্লথ হয়েছিল। সাম্প্রতিককালে সেই প্রবণতা আবার দেখা যাচ্ছে। প্রতিযোগিতাসক্ষম, মেধাভিত্তিক, আন্তর্জাতিক গুণমানসম্পন্ন, সৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ না থাকলে যোগ্য লোকরা এদিকে আসবেন না। ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী বিশেষকে সুবিধা দেওয়ার কারণে দেশ সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর অন্যতম উদাহরণ বিদ্যুৎ খাত। এ খাতে শুধু প্রতিযোগিতাই তুলে নেওয়া হয়নি, বিচারের সুযোগও বাতিল করা হয়েছে; যা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি। অর্থনীতির ভেতরে এক ধরনের বিচারহীনতা তৈরি করা হয়েছে, যা অর্থনীতির মূলনীতির বিপরীত। প্রয়োজনের নিরিখে স্বল্পমেয়াদি নীতি হিসেবে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বিশেষ সুযোগ দেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে তা বন্ধ করা যায়নি। প্রমাণ হয়েছে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তির সুবিধাভোগীরা অনেক শক্তিশালী। বিদ্যুতের মতো এলএনজিতে অনুরূপ পরিস্থিতি প্রতিভাত হচ্ছে। অর্থাৎ এখানেও একটি স্বার্থগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমন- অতিমূল্যায়িত সরকারি প্রকল্পগুলোতে যিনি কাজ পান তিনি অযোগ্য। কিন্তু রাজনৈতিক বা অন্য কোনো না কোনো সংযোগে তিনি কাজ পেয়ে যান। ফলে কাজ হাতবদল হচ্ছে। সময় মতো শেষ হচ্ছে না। ব্যয় বাড়ছে। আবার প্রতিপত্তি বাড়াতে আর্থিক সক্ষমতা নেই এমন প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে। এসবের দায়দেনার বোঝা নাগরিকের ঘাড়ে পড়ছে। কেন এমন হচ্ছে? পৃথিবীর ইতিহাস বলে, দেশে দেশে বাজার অর্থনীতির যখন উন্মেষ ঘটে, তখন এক ধরনের লুণ্ঠন হয়। তারপর নিয়মনীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো মেনে সভ্যতর নীতিভিত্তিক সমাজের দিকে দেশগুলো আগায়। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এখানে প্রথম লুণ্ঠন শুরু আশির দশকে শিল্প ঋণের মাধ্যমে। তখন ঋণের নামে অনেক কাঁচা টাকা দেওয়া হতো। কিন্তু তা ফেরত আসেনি। বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের উৎস খুঁজতে হলে অবশ্যই আশির দশকে ফিরে যেতে হবে। এটা হলো বাংলাদেশে লুণ্ঠনের প্রারম্ভিক উৎস। লুণ্ঠনের দ্বিতীয় উৎস শেয়ারবাজার। গুণমানহীন কোম্পানি বাজারে ছেড়ে ১৯৯৬ সালে ও পরে ২০১০-১১ সালে সাধারণ মানুষের সঞ্চয় লুট করা হয়। এখন সৃষ্টি হয়েছে লুণ্ঠনের তৃতীয় উৎস। সরকারি প্রণোদনায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় অতি মূল্যায়িত বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প, যার সুবিধা পাচ্ছে নির্দিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান।
উদ্যোক্তা শ্রেণির নেতৃত্ব সংকট
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, উন্নয়ন অর্জন টিকবে কীভাবে ও পরের ধাপে যাওয়ার উপায় কী? পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা যায়, প্রাথমিক লুণ্ঠনের পর দেশ যখন সভ্য সমাজের দিকে যায়, তখন অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, বিচার ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়, যা মানুষকে আইনের শাসন দেয়। এমন একটা রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক হয়, যেখানে সবাই সমান সুযোগ পান। ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তির সুযোগ হয়। এমন একটা প্রশাসন হয়, যা দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সেবা দেয়। এটা হয় বৃহত্তর স্বার্থে। কারণ একটা সময় পরে সবারই সুরক্ষার দরকার হয়। ফলে মুক্ত, স্বচ্ছ রাষ্ট্রকাঠামো হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এটা হয়নি। এর কারণ, যে গোষ্ঠীর বাংলাদেশের পরিবর্তনে সবচেয়ে আগ্রহী হওয়ার কথা ছিল, অর্থাৎ উৎপাদনশীল উদ্যোক্তা শ্রেণি, তারা তা যথেষ্ট পরিমাণে হয়নি। তারা সবাই প্রতিযোগিতার চেয়ে সংযোগে বেশি বিশ্বাস করেছেন, শ্রেণির চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থে জোর দিয়েছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ব্যবসায়ী সমিতিগুলোতে আর প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাই করা হয় না। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত না হলে দায়বদ্ধতা থাকে না। এ দায়বদ্ধতাহীন নেতৃত্ব নিজের সুবিধার হিসাবেই ব্যস্ত। বাংলাদেশে দায়িত্বশীল, খেটে খাওয়া, উৎপাদনশীল উদ্যোক্তা শ্রেণির কণ্ঠস্বর কম। সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নিয়মনীতির ব্যত্যয় ঘটলে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিচয় ও সংযোগ বিবেচনায় না নিয়ে আইনের শাসন প্রয়োগ করতে হবে। সর্বোপরি, এ বিষয়ে মিডিয়া ও নাগরিক সমাজকে দেশে বস্তুনিষ্ঠভাবে মতামত প্রকাশ করতে দিতে হবে।
লেখক : সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি