Originally posted in UNB on 1 June 2022
বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ও সম্পদ কোনো সরকারি সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই যথাক্রমে ১০ বা ১৫ শতাংশ কর প্রদান করে বৈধ করা যাবে।
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে সরকার এ ধরনের বিশেষ সুযোগ চালু করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
অর্থনীতিবিদরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে বলছেন, এটি সৎ বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে, যারা কিনা রাষ্ট্রকে কর প্রদান করে।
অর্থ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মঙ্গলবার ইউএনবিকে বলেছেন, “দেশে যে পরিমাণ অর্থ আনা হবে তা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স (বিএফআইইউ) দ্বারা আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন ছাড়াই মাত্র ১০ শতাংশ আয়কর দিয়ে বৈধ করা যাবে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা অর্থমন্ত্রী মোস্তফা কামাল গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের যা বলেছিলেন তা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে অর্থমন্ত্রী বাজেট কর্মকর্তাদের আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এ ধরনের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
৯ জুন বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ইউএনবিকে বলেন, “এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ অনৈতিক, বেআইনি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দর্শনের পরিপন্থী।”
সিদ্ধান্তটি দেশের হাজার হাজার সৎ করদাতা এবং পরিশ্রমী উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বিকৃত তামাশা বলে মন্তব্য করেছেন এই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, “এই ধরনের অসৎ সিদ্ধান্ত ট্যাক্স সংহতি বা উৎপাদনশীল বিনিয়োগ তৈরিতে অবদান রাখবে না।”
সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ডক্টর মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, “যারা বৈধ আয়ের প্রায় ৩০ শতাংশ কর দিচ্ছেন এই উদ্যোগ তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি বলেন, “সৎ করদাতাদের নৈতিক বিষয়টি বিবেচনা করে অবৈধ আয়ের ওপর করের হার দেশে নিয়মিত করের হারের নিচে নেয়া উচিত নয়।”
বর্তমানে নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত, শেয়ারবাজার এবং সঞ্চয়পত্রে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কর এবং ২৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে।