মার্কিন সহায়তার নতুন বন্দোবস্তে নিজেদের হিস্যা নিশ্চিত করতে হবে – মোস্তাফিজুর রহমান

Originally posted in প্রথম আলো on 26 January 2025

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশি সহায়তা দেওয়া বন্ধের ঘোষণার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। মার্কিন সরকার ইউএসএইডসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করে থাকে। এখন এই ঘোষণার অর্থ হলো, নতুন কোনো সহায়তা আসবে না বা চলমান যেসব সহায়তা কর্মসূচি আছে, সেগুলোর জন্য নতুন করে অর্থ ছাড় হবে না।

দেশটি আমাদের সুনির্দিষ্ট বিভিন্ন খাতসহ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনীতির বহুমুখীকরণ ও গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা করে থাকে। এখন তারা সহায়তা বন্ধ করে দিলে এসব খাতের চলমান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ ছাড়া ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো–অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্ট (টিকফা) বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে এসব বৈঠকে বাংলাদেশের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা প্রবেশের সুযোগ, ডিজিটাল অর্থনীতি এগিয়ে নেওয়া, সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও বাংলাদেশে শ্রম সংস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়। এখন এসব বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তার প্রভাব পড়বে।

আমরা শুনেছি, আপাতত ৯০ দিনের জন্য সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এরপর মার্কিন সরকার তা পর্যালোচনা করবে। অর্থাৎ তারা হয়তো বিদেশি সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেবে না। সহায়তা বন্ধের তাৎক্ষণিক প্রভাবের সঙ্গে বিষয়টি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।

মার্কিন সরকারও এই সময় বসে থাকবে না। তারা এযাবৎকাল গৃহীত সহায়তা কর্মসূচি খতিয়ে দেখবে এবং তার ভিত্তিতে নতুন সিদ্ধান্ত নেবে। এই সময় আমাদেরও হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। মার্কিন সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও এই সময় সহায়তা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখবে। আমাদেরও তা করতে হবে। মার্কিন দূতাবাস ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। এসব কর্মসূচি বন্ধ হলে আমাদের উন্নয়ন কীভাবে ব্যাহত হবে, তা তুলে ধরতে হবে। আমাদের লবিং চালিয়ে যেতে হবে, যাতে সহায়তার নতুন বন্দোবস্তে আমাদের হিস্যা থাকে।

অন্যান্য দেশও বসে থাকবে না। তারা কী করছে ও কীভাবে করছে, সেদিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে।

মোস্তাফিজুর রহমান: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো