Published in আমাদের নতুন সময় on Monday 15 June 2020
অর্থনীতিতে যখন লাল প্রয়োজন তখন সবুজ বাতি জ্বালানো হয়েছে, এতে দুর্ঘটনা বাড়বে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনার অর্থনৈতিক সংকটকে অস্বীকার করে ‘দেখো আমরা কত ভাল আছি’, এধরণের একটি বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এর সঙ্গে দেশের আর্থিক খাতের কোন মিল নেই। ফলে এই বাজেট দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে আগামীতে সমস্যায় ফেলবে।
করোনাকে পুরো বাজেটে দেখানো হয়েছে যেনো এটি কয়েক দিনের ব্যাপার। এই সময়ে ২/৩ হাজার টাকা দান খয়রাত করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সারা বিশ্বই অনুধাবন করছে এই সংকট থেকে বের হতে ২ থেকে ৩ বছর লাগবে। সেখানে বাংলাদেশ হাটছে একাকি। কোথাও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হচ্ছে না।
স্বাস্থ্যখাতে এবারেও বরাদ্দ ১ শতাংশের নীচে। বিশ্বেও আর কোথাও এখন এত কম বরাদ্দ নেই। বিগত ১০ বছর ধরেই এই খাতটিতে অব্যবস্থাপনা রয়েছে। কেন দেশের একজন কোটিপতিও ভেন্টিলেটর পাবে না। জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতেও অক্সিজেন নেই। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে আমরা কাজে লাগাতে পারলাম না। একটি মাস্ক ২ হাজার টাকায় কিনেও স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে পারেনি। এই বাজেটেও এসব সমস্যা চিহ্নিত করে কোন পদক্ষেপ নেই।
সামাজিক নিরাপত্তায় যে অর্থ বরাদ্দ বেড়েছে তা শুধু প্রধানমন্ত্রীর আগের বরাদ্দগুলোর বর্ধিতাংশ। নতুন করে কর্মহীনদের জন্য কিছু নেই। প্রায় ৭০ লাখ মানুষ নতুন করে কর্মহীন হয়েছে।
ব্যাংক সেক্টরকে বলেন এতিম সেক্টর। সেখানে কোন অভিবাবক নেই। খেলাপিদের সুযোগ দেয়া হয়েছে। অথচ এই অস্বাভাবিক সময়ে অর্থনীতিকে গুছিয়ে আনা যেত।
তিনি বলেন, পুরো বিষয়টিতেই বাজেটের মতো একটি দলিলকে অবিশ্বাস্য করে তোলা হয়েছে। এই অবিশ্বাস সমগ্র রাজনীতিতেই বিস্তৃত হয়েছে। যার ফলে দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারকে নির্ভর করতে হয়েছে প্রশাসনিক বিভাগের উপরে। তারাও বাজেটে তাদের বেতন না বাড়ালেও ভাতাদি সুযোগ সুবিধাদি বৃদ্ধি করেছে।
মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয়হীনতাও রয়েছে বাজেটে। রাজস্ব আয়ের ঘাটতির জন্য ব্যাংক থেকে ঘাটতির ৪৮ শতাংশ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আবার বেসরকারি বিনিয়োগের ঋণ ধরা হয়েছে, ১৬ শতাংশ। কোনটার সঙ্গেই কোনটা মিলে না।