Originally posted in প্রথম আলো on 5 November 2023
ন্যূনতম মজুরি বোর্ডে আলাপ-আলোচনা শুরুর প্রায় ছয় মাস পর প্রথম প্রস্তাব পাওয়া যায়। তবে মালিকদের থেকে যে প্রস্তাব পাওয়া গেল, সেটি অনেক কম। শ্রমিকদের বিবেচনায় তো বটেই, গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরাও মালিকদের মজুরি প্রস্তাবকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম বলে মনে করছি।
আমরা মনে করি, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে একধরনের গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব দিয়েছেন। বিপরীতে মালিকদের প্রস্তাবটি কোনো যৌক্তিক বিচারেই শ্রমিকদের প্রস্তাবের কাছাকাছি নয়। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে একধরনের অনাস্থা ও হতাশা তৈরি হয়েছে। তা থেকেই পরে অসন্তোষ দেখা গেছে।
শ্রমিকদের আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে দেখা ও শ্রমিক মারা যাওয়ার ঘটনা অসন্তোষ বাড়াচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার পরিবর্তে বরং আরও শক্তি প্রয়োগের কথা বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমিকদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে জরুরি।
শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর বিষয়ে মালিকেরা নিজেদের ওপর সব চাপ না নিয়ে এতে ক্রেতাদের সম্পৃক্ত করতে পারে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, ক্রেতারা যদি প্রতিটি পোশাকপণ্যে ছয়-সাত সেন্ট বাড়তি দাম দেয়, তাহলেই শ্রমিকদের দাবির কাছাকাছি মজুরি দেওয়া সম্ভব।
তাই শ্রমিকদের মজুরি প্রস্তাবকে বেঞ্চমার্ক ধরে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করে মালিকেরা অবিলম্বে একটা যৌক্তিক মজুরি প্রস্তাব দেবেন—এটাই প্রত্যাশা থাকবে। এ ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।
- এক. শ্রমিকদের আস্থায় এনে খোলাখুলি ও উদারভাবে মজুরি ঘোষণা করা।
- দুই. মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ যেন রাজনৈতিক রূপ না নেয়, এ জন্য গ্রহণযোগ্য একটি প্রস্তাব দেওয়া।
- তিন. শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনাকে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হিসেবে না দেখে, একে মজুরিজনিত সমস্যা হিসেবে দেখা।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)