Originally posted in ভোরের কাগজ on 10 August 2023
টাকার অবমূল্যায়নের কারণে আমদানিকৃত মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে মনে করেন গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, শুধু আমদানিকৃত পণ্যই না, বাইরের কাঁচামাল আমদানি করে যেসব রপ্তানিযোগ্য পণ্য তৈরি হয়, অর্থাৎ আমদানি প্রতিস্থাপক শিল্প বা স্থানীয় উৎপাদক যারা আছেন- তাদেরও খরচ বেড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে তার প্রতিফলন দেখছি। গত মঙ্গলবার তিনি ভোরের কাগজকে এসব কথা বলেন।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেকে মনে করছেন, পোল্ট্রি মুরগি দেশেই উৎপাদন করা হয়। তবে দাম বাড়বে কেন? কিন্তু পোল্ট্রি ফিড আমদানি করতে হচ্ছে। যে ফিড আমদানিতে ১ ডলার সমান ৮৬ টাকা খরচ পড়ত, এখন ১০৯ টাকা খরচ পড়ছে। তিনি আরো বলেন, অর্থনীতিবিদরা ৫-৬ বছর আগে থেকেই বলছিলেন যে, টাকা অতিমূল্যায়িত আছে, ধীরে ধীরে অবমূল্যায়ন করে তা সমন্বয় করতে। সময়মতো সিদ্ধান্ত না নেয়ার ফলে আমরা এখন দ্বিমুখী চাপে রয়েছি। যা স্থিতিশীল অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই বলছিলাম গ্র্যাজুয়েলি অবমূল্যায়ন করতে। কিন্তু এমন সময় অবমূল্যায়ন করা হলো যখন বিশ্ববাজারে অস্থির পরিস্থিতি। অর্থাৎ আমাদের দুটি অভিঘাত একসঙ্গে পড়েছে। বিশ্ব মূল্যস্ফীতি এবং অভ্যন্তরীণ অবমূল্যায়ন। এর ফলে রপ্তানিকারকদেরও উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়েছে। স্থানীয় বাজারমুখী উৎপাদনেরও ব্যয় বাড়িয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রয় ক্ষমতার অবনমন হয়েছে, জীবনযাত্রার মানের ওপরে নেগেটিভ প্রভাব পড়েছে।
তিনি বলেন, অবমূল্যায়নের ফলে বৈদেশিক ঋণের দায়ভারও বাড়বে। বিশেষত যেসব প্রকল্প স্থানীয়ভাবে বিনিয়োগ করে স্থানীয় টাকায় রিটার্ন পাচ্ছি। সুতরাং যেসব ঋণ দিয়ে আমরা দেশীয় উৎপাদন করছি এবং যেগুলোর মূল্য আসছে টাকায়- সেসব ঋণের দায়ভার বাড়বে। তবে এর ইতিবাচক প্রভাবও কিছুটা রয়েছে। যারা রেমিট্যান্স আহরণ করছে তারা একটু লাভবান হয়েছে। কিছুটা রপ্তানিকারকদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি সক্ষমতাও বেড়েছে। একই সঙ্গে রিজার্ভ কমে যাওয়ার ফলে হুন্ডির মাধ্যমে আরো বেশি বিনিময় হার পাচ্ছে। সুতরাং অবৈধ পথে টাকা চলে যাচ্ছে।